২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুমিল্লায় গেল ৯ প্রাণ

অন্যান্য স্থানে নিহত আরো ১১
-

গ্রামের বাড়িতে ঈদ শেষে কুমিল্লা শহরে নিজ বাসায় ফেরা হলো না জসিম উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের। ঈদের আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হয়। গতকাল দুপুরে বাগমারা জামতলিতে বাসের ধাক্কায় ধুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা যাত্রী জসিম ও অটোচালকসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হন।
কুমিল্লা, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লা নগরীর ক্ষুদ্র খাবার হোটেল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ঈদুল আজহার পর দিন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন আত্মীয়স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য। দুর্ঘটনায় ম্লান করে দিল তার ঈদ আনন্দ এবং পুরো পরিবারই নিঃস্ব হয়ে গেল। একমাত্র বেঁচে থাকা শিশুসন্তান রিফাতও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ছয় ভাইয়ের মধ্যে চতুর্থ জসিম উদ্দিন ছোটকাল থেকেই কুমিল্লা শহরে বিভিন্ন কাজকর্ম করত। একপর্যায়ে কুমিল্লা নগরীর গাংচর ঋষি পট্টির ফটিক মিয়ার বিল্ডিংয়ের নিচতলায় খাবার হোটেল দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতেন। একই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয়তলায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন জসিম উদ্দিন। এ হোটেল ব্যবসা দিয়েই কোনো মতে ছয় সদস্যের সংসার চালাতেন। দুই সন্তান শিপন ও হৃদয় বাবার সাথে হোটেলেই কাজ করতেন। ছোট দুই ছেলে হৃদয় ও রিফাত স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদরাসায় হিফজ পড়তেন, আর মায়ের সাথে ছোট্ট শিশু নিপু থাকতেন মায়ের সাথে। এভাবেই তাদের সংসার চলছিল। ঈদুল আজহার পরের দিন বেড়ানো শেষে গ্রামের বাড়ি থেকে মা এবং স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে শহরের দিকে ছুটছিলেন। কিন্তু পথেই মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়।
জসিম উদ্দিনের ভাই মহসিন আহাজারি করে জানান, ভাই, ভাবী, ভাতিজা, ভাতিজিদের পাশাপাশি মাকেও হারিয়ে আমরা জীবিত পাঁচ ভাইসহ পরিবারের সকলে আজ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। এ দিকে চিকিৎসাধীন ভাতিজাকে আল্লাহ যেন নেক হায়াত দান করেন।
এ দিকে নিহত জসিমের আহাজারিতে দুর্ঘটনাস্থল বাগমারার জামতলি, লালমাই থানা ও লালমাই হাইওয়ে থানা এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। রাতে জসিমের গ্রামের বাড়ি নাঙ্গলকোটের ঘোড়া ময়দানে লাশগুলো নেয়া হলে পুরো এলাকায় কান্নার রোল পড়ে যায়। হাজার হাজার লোক ওই গ্রামে ভিড় জমান।
গতকাল দুপুরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার বাগমারার জামতলীতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জসিম উদ্দিনের পরিবারের ছয়জনসহ ৯ জন নিহত হয়। নিহতরা সবাই সিএনজি অটোরিকশার চালক ও যাত্রী। দুর্ঘটনার পরপর পুলিশ ও দমকল বাহিনী দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ তদারকি করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন ঢাকা থেকে লাকসামগামী তিশা পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে একইমুখী একটি মাইক্রোবাসকে অতিক্রম করতে গিয়ে বিপরীতমুখী নাঙ্গলকোট থেকে কুমিল্লাগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। আহত দু’জনকে পুলিশ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাস, মাইক্রোবাস, ও সিএনজি অটোরিকশা আটক করছে। তবে বাসচালক ও মাইক্রোবাস চালক দুর্ঘটনার পরপর পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেনÑ নাঙ্গলকোটের ঘোড়া ময়দান গ্রামের জসিম উদ্দিন (৫৫), জসিমের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪৫), জসিমের মা সখিনা বেগম (৭৫), জসিম উদ্দিনের বড় ছেলে শিপন (২৩), হৃদয় (১৬), রিফাত (১০), মেয়ে নিপু আক্তার (১৩), দোকানের কর্মচারী সাইমুন (১৫) এবং সিএনজি ড্রাইভার উপজেলার করপাতি গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন (৩৫)।
এ দিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো: নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা ভূঁইয়া বলেন, জসিম উদ্দিনের ভাই মহসিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লালমাই থানার ওসির নির্দেশ থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
লালমাই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জিয়াউল চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দু’টিও উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে।
রংপুর অফিস জানায়, রংপুরে ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুইজন। এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ আহত হন আরো ৯ জন। দুমড়েমুচড়ে যায় হাইওয়ে পুলিশের টহল গাড়ি। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ-আরপিএমপির কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ নয়া দিগন্তকে জানান, রোববার সকালে নগরীর টার্মিনাল মোড়ে একটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোচালকসহ ছয়জন গুরুতর আহত হন। তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে মোকছেদুল ইসলাম (৩৬) নামে অটোচালক নিহত হন। মোকছেদুল বদরগঞ্জের কুতুবপুরের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
অন্য দিকে বড় দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় পীরগঞ্জের ফিডার রোড থেকে মহাসড়কে ওঠার সময় একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী আব্দুল হানিফ (২৮) নামে এক যুবক মারা যান। তিনি শানেরহাটের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
বড় দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন আরো জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের ওপর হাইওয়ে পুলিশের টহল গাড়িতে পেছন থেকে একটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী হানিফ পরিবহন ধাক্কা দিলে গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এ সময় আমিসহ কনেস্টবল আব্দুর রহিম, হারুন অর রশিদ ও গোলাম মোস্তফা আহত হই।
ময়মনসিংহ অফিস ও ফুলপুর সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের ফুলপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মহিলাসহ দু’জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।
ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন জানান, গতকাল দুপুরে ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের ফুলপুর উপজেলার হোসেনপুর নামকস্থানে শেরপুরগামী একটি বাসের ধাক্কায় বিপরীত দিক থেকে আসা ফুলপুরগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সায়েম (১৫) নামে এক কিশোর মারা যায়। সে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার পলাশিয়া গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে। এ সময় নিহত সায়েমের বাবা দুদু মিয়া (৪৫), মা মনিরা বেগম (৪০), বোন মাফিয়া (৫) গড়কান্দা গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪০) ও সুনীল সাহা (৪৫) আহত হন। আহতদের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ দিকে ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাসের চাকা (ঢাকা মেট্রো-ত-১১-৫৪১১) ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে পাঙচার হলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের পথচারী রেজিয়া (৫০) ও রিকশাচালক আনুকে (১৬) চাপা দেয়। এ ঘটনায় আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে গুরুতর অবস্থায় রেজিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে মারা যান। রেজিয়া উপজেলার পাতিলগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী।
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মমিনুল ইসলাম মমিন (২৫) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সানোয়ার হোসেন নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী। গতকাল দুপুরে পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল সড়কের নারায়ণপুর শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোটরসাইকেল চালক মমিন রানীশংকৈল উপজেলার ৪নং লেহেম্বা ইউনিয়নের একরামুল ইসলামের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পীরগঞ্জ থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন মমিন ও সানোয়ার। সড়কের ঘটনাস্থলে অপর দিক থেকে আসা অপর মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মমিন মারা যান। আহত সানোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে তাকে দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, কোরবানি দেয়া গোশত নিয়ে ঢাকায় বসবাসরত ছেলের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পাঁচশিশা গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন শাহ (৫০)। ছেলে ও ছেলের বউয়ের সংসারে ঈদের আনন্দ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। গত শনিবার রাত ৯টায় নিহতের বাড়ি থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের নয়াবাজার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে
মুকসুদপুর-গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় বাসের ধাক্কায় নুরুল মোড়ল (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপজেলার রাগদি ইউনিয়নের ডোমরাকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল মোড়ল ডোমরাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি আতাউর রহমান জানান, নুরুল মোড়ল বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সুগন্ধা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দিলে নুরুল মোড়ল ঘটনাস্থলে মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের আশেকপুরে গতকাল সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় আল-আমিন (২০) নামে এক ওয়ার্কশপ কর্মচারী নিহত হয়েছেন। তিনি সদর উপজেলার দরুন এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে। আশেকপুরে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন তিনি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাসুদেব সিনহা জানান, আল-আমিন হেঁটে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এক পাশ দিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। আশেকপুর এলাকায় পৌঁছলে ঢাকাগামী একটি গাড়ি তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুরে বাবার কিনে দেয়া মোটরসাইকেলে এক দিন পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত হয়েছেন কলেজছাত্র ইব্রাহীম। গতকাল সকালে পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড জেবি রোডে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহীম স্থানীয় দালালবাজার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ও পৌর শহরের বাঞ্ছানগর এলাকার সৌদি প্রবাসী আবুল খায়েরের ছেলে।
নিহতের মামা আবদুর রাজ্জাক জানান, প্রবাস ফেরত বাবার কাছে কলেজপড়–য়া ছেলে ইব্রাহীম মোটরসাইকেলের আবদার করেন। ঠিকমতো গাড়ি চালাতে না পারলেও ছেলের আবদার রক্ষায় গত শনিবার বিকেলে তাকে কিনে দেয়া হয় একটি নতুন টিভিএস মোটর সাইকেল। ভোরে গাড়িটি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় ইব্রাহীম। এরপরই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আজিজুর রহমান মিয়া জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায় এবং পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের অসচেতনতাকে দায়ী করলেন তিনি।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বিকল বাস দাঁড় করিয়ে মেরামতের সময় পেছন থেকে একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় বাসের চালক মো: আলী হোসেন গাজী (৩৫) নিহত হয়েছেন। তিনি খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার তিলক গ্রামের মৃত আজিজ গাজীর ছেলে। গতকাল ভোরে উপজেলার জমিদার ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-জ- ১১-১০৭১) জমিদার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে যান্ত্রিকত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় বাসের চালক আলী হোসেন বাসটি মেরামতের জন্য মহাসড়কের একপাশে দাঁড় করিয়ে বাসের নিচে শুয়ে পড়ে কাজ করতে থাকেন। ঠিক তখন পেছন থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রে-চ-১৩-৯৬৩৮) এসে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের নিচে থাকা চালকের বুকের উপরে চাকা উঠে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া জানান, ঘাতক মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সাগর হোসেন (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হন আরো একজন। গতকাল রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে দেবনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সাগর পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের হাফি সরদারের ছেলে। আহত রহমত আলী একই গ্রামের আনারুদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাগর তার বন্ধু রহমতকে নিয়ে শহরের বাইপাস সড়কে মোটরসাইকেল পাল্লা দিচ্ছিলেন। এ সময় দেবনগর এলাকায় রাস্তার সাইডে একটি পিলারের সাথে তাদের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে পড়ে গিয়ে তারা দু’জন গুরুতর আহত হন। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিসৎক সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর বন্ধু রহমত মারাত্মক আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement