১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাকা-সিলেট রেল যোগাযোগ

প্রতিদিন শিডিউল ওলটপালট ঈদে জনভোগান্তির আশঙ্কা -

ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলরত উপবন এক্সপ্রেস, কালনীসহ ও অন্যান্য ট্রেনের শিডিউল প্রতিদিন ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন্স বিভাগ সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে ট্রেনগুলো ছাড়ার চেষ্টা করলেও প্রকৌশল বিভাগের নানা জটিলতার কারণে ইদানীং ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রেনগুলো গন্তব্যে না পৌঁছানোর কারণে ঢাকা এবং সিলেট রেলস্টেশনে হাজার হাজার যাত্রী ও নানা পেশার মানুষের বিড়ম্বনা এখন অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন ঈদুল আজহার সময় এই রুটে ঘরমুখোদের ব্যাপক জন-ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন সাধারণ যাত্রী এবং রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। এ দিকে আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরিফুল আলম।
গত শনিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা। শিডিউল মোতাবেক ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট বিলম্বে স্টেশন ত্যাগ করলেও ট্রেনটি গন্তব্য পৌঁছায় নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা বিলম্বে। একইভাবে গত রোববার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সিলেট রেলস্টেশন থেকে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ১০টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি স্টেশনে প্রবেশ-ই করে ১০টা ১০ মিনিটে। পরে ইঞ্জিন রিফুয়েলিং, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শেষে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে এক ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে আসে। সেই হিসাবে এক ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি গতকাল সোমবার সকাল ৭টার দিকে স্টেশনে প্রবেশ করে। এটা শুধু উপবন এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে নয়, প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলকারী অন্যান্য ট্রেনের সময়সূচি ঠিক একইভাবে চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে সিলেট রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার তার দফতরে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরাতো শিডিউল মতো সব ট্রেন অপারেশন্সের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আমাদের ট্রাফিক বিভাগে (অপারেশন) কোনো সমস্যা নাই। সমস্যা আছে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে। তাদের সাথে কথা বলেন। এরপর তিনি বলেন, রেললাইন খারাপ হওয়ার কারণে ঠিক মতো আমাদের ট্রেন চলাচল করানো সম্ভব হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন কেন সময় মতো মেরামতে অবহেলা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি না দিয়ে বলেন, এটা ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যারা দায়িত্বে আছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন।
গত দুই দিন ধরে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া মহাপরিচালক মোহাম্মদ সামছুজ্জামানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সরেজমিন খোঁজ নিতে গেলে দেখা যায়, ঢাকা থেকে সিলেটগামী ট্রেনটি গন্তব্য পৌঁছাতে ট্রেন চালককে অনেক সতর্কতার সাথে চালাতে। আবার কখনো ট্রেনের গতি এতটাই বেশি ছিল যে, যাত্রীরা মনে করছিলেন এই বুঝি আবার বগি লাইনচ্যুত হচ্ছে! বিশেষ করে কুলাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত এলাকায় যেতে চালক কোথাও কোথাও ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাচ্ছিলেন। একইভাবে সিলেট থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের ওই অংশটুকুতে দেখা গেছে, চালককে সতর্কতার সাথে ট্রেন চালাতে। এর মধ্যে ভৈরব ব্রিজ অতিক্রম করার আগে দেখা গেছে লাইনের সমস্যার কারণে বগি একপাশে কিছুটা কাত হয়ে পড়তে। তবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আবার বগি সমান হয়েছে। এমন পরিস্থিতি দেখে যাত্রীরা মাঝে মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেনের যাত্রীদের এখন রাতে যাতায়াতকারী বেশির ভাগ যাত্রীর সময় কাটছে নির্ঘুমভাবে।
ওই ট্রেনের যাত্রী নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলাম নাহিদ তার একদিনের ট্রেন ভ্রমণের বাস্তব অভিজ্ঞতা জানিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, এই রুটে সম্প্রতি ভয়াহব ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে বেশ কিছু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এরপর থেকেই ট্রেন ভ্রমণের সময় আতঙ্কে থাকি। যেখানে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে ওই স্থানে দুমড়ে মুচড়ে একটি বগি পড়ে থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা দেখেই আমি আরো ভয় পেয়ে যাই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ট্রেনটি যখন চলতে থাকে তখন কোনো কোনো এলাকায় দেখেছি, রেললাইন থেকে নাট-বল্টুর ‘ঝুনঝুন’ শব্দ আসতে। আমার কাছে অনেক স্থানের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এখন খুবই খারাপ। বৃষ্টির কারণে এটি আরো অবনতি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে ঈদে এই পথের যাত্রীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। এ দিকটায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বেশি করে গুরুত্ব দেয়া উচিত।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন ভ্রমণ করে মনে হয়েছে, মন্ত্রী সচিবরা ট্রেনের যাত্রীদের সেবা দিতে এবং সার্বিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাপক তৎপর। কিন্তু এই শৃঙ্খলা ঠিক না হওয়ার পেছনে মূলত ট্রেনের কতর্ব্যরত টিটি, অ্যাটেনডেন্ট, পুলিশের কেউ কেউ দায়ী। তারা যাত্রীদের সেবা না দিয়ে কিভাবে সিট ছাড়া যাত্রীদের টুপাইস উপার্জন করবেন সেটি নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। তার ভ্রমণের সময়ই শ্রীমঙ্গলে চলন্ত ট্রেন থেকে এক যাত্রীর জে-৭ মোবাইল ফোনটি জানালার পাশ থেকে ছোঁ মেরে ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারী। পুলিশের কাছে এর প্রতিকার চাইলে কর্তব্যরত এক জিআরপি পুলিশ সদস্য ওই যাত্রীকে বলেন, ‘যেহেতু আপনার মোবাইল ফোনটি ছিনতাই হয়েই গেছে, এখনতো আর আমরা কিছু করতে পারব না, আপনি সিলেট গিয়ে লিখিত অভিযোগ করবেন। এরপর দেখা গেছে ওই পুলিশ সদস্য অন্য ডিউটি বাদ দিয়ে তিনি নিজেই সিটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন।’ এমন অনেক সমস্যাই রয়েছে যেগুলো মনিটরিং হওয়া জরুরি বলে তিনি মনে করেন। নতুবা রেলপথ যাত্রা সবসময় ঝুঁকিপূর্ণই থেকে যাবে। আর যাত্রীদের খাবারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরো সচেতন হতে হবে। একই ধরনের খাবার সরবরাহ করায় যাত্রীরা এখন অনেকটাই বিরক্ত বলে তিনি অভিযোগ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া তালেবানকে আফগান মাটি অন্যদের ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের। গত দুই দিনের রেকর্ডের পর চুয়াডাঙ্গায় আজও বইছে তীব্র তাপদাহ বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, নানা আটক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ তালতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল ভারতের নির্দেশের পর পোস্ট ব্লক করল এক্স

সকল