২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ

৬৭টির দরপত্র ও কাজ আট বছরেও শুরু হয়নি

৭৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ; চার বছরের প্রকল্প পড়েছে ৯ বছরে
-

উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটি একনেক থেকে ৭৭৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেয়া হয় ২০১১ সালে। চার বছরে শেষ করার কথা ছিল ২৩৩টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণকাজ। কিন্তু আট বছরে কাজ হয়েছে ৫৫.৩৬ শতাংশ। অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে খরচও বেড়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশনের আইএমইডি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানো হয়। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখনো প্রায় ৪৫ শতাংশ কমপ্লেক্স নির্মাণে টেন্ডার, নকশা ও কাজ শুরু করা বাকি আছে। ২০২০ সালে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারলে প্রতিটি খাতের ব্যয় আরো বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৬৪টি জেলার আওতায় পুরনো ও নতুন মিলে ৪৯২টি উপজেলা রয়েছে। আশির দশকে এ দেশে উপজেলা ব্যবস্থা চালু করা হয় এবং সেবাদানকারী বেশির ভাগ অধিদফতরের অফিস উপজেলা পর্যায়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালে ৪০ হাজার বর্গফুটের উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের ডিজাইন অনুমোদিত হয়। কিন্তু বেশির ভাগ উপজেলায় অফিস স্পেস অনুমোদিত ডিজাইনের চেয়ে অনেক কম। কিছু কিছু উপজেলা কমপ্লেক্সে অফিসের আকার ১০ হাজার বর্গফুট বা তার চেয়েও কম। ভবনের আয়তন চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় দাফতরিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। তা ছাড়া উপজেলা পরিষদ আইন-২০১১ অনুসারে প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও দু’জন ভাইস চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে সারা দেশে স্থাপত্য অধিদফতর প্রণীত ও বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নতুন ডিজাইনে উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ ও বিদ্যমান কমপ্লেক্স সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে ৩২টি উপজেলায় নতুন ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত মহাজোট সরকার ২০১১ সালের ২৯ মার্চ ৭৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। তাতে ২০০টি উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু তা তারা নির্ধারিত ২০১৫ সালের মধ্যে মধ্যে শেষ করতে পারেনি। সে জন্য আরো দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। ৩৩টি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করায় ব্যয় প্রায় ৮৫ শতাংশ বাড়িয়ে এক হাজার ৪৩০ কোটি টাকা করা হয়। ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ২৩৩টি উপজেলার মধ্যে ১২৯টির কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। ৪৮টির কাজ এখনো চলামান, ৬টির চুক্তি হলেও কাজ এখনো শুরু হয়নি। ১৮টির দরপত্র করা হয়েছে বা নকশার কাজ চলমান আছে। ৩২টি উপজেলায় গত আট বছরে কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। জটিলতার কারণে ২৯টির কাজই শুরুই করা যায়নি।
এত বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও এখানে অনেক দুর্বলতা ধরা পড়েছে আইএমইডির চোখে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপজেলা ভবনের আয়তন চাহিদার তুলনায় এখনো কম। ফলে দাফতকি জায়গা সঙ্কুলান হচ্ছে না। চার তলা ভবনে কোনো লিফট নেই। গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নেই। সানশেড বা ড্রপওয়াল না থাকায় বৃষ্টির পানির ঝাপটা ভেতরে প্রবেশ করছে। সেবা গ্রহীতাদের জন্য কোনো ওয়েটিংরুম নেই। সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য র্যাম্পের ব্যবস্থা নেই। অন্য দিকে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা না থাকায় বজ্রপাত হলে প্রাণনাশের ঝুঁকি রয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তার ঝুঁকি।
আইএমইডির সরেজমিন ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্মাণ ও পূর্ত কাজের জন্য মোট বরাদ্দ হলো এক হাজার ২৮৩ কোটি ৯৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা। পরে কমিয়ে এক হাজার ২৬৩ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ লাখ টাকায় আনা হয়। এখানে জটিলতার কারণে ২৯টি আবাসিক ভবন নির্মাণ ও পূর্ত কাজ আজো শুরু করা যায়নি। এখানে প্রতিটি উপজেলা ভবন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে পাঁচ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আর আর ৪৬টি আবাসিক ভবন নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৭৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এখানে প্রতিটিতে খরচ হচ্ছে এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ সূত্র বলছে, কোনো প্রকল্পই নির্ধারিত ব্যয়ে শেষ হয় না। প্রকল্প শেষ হওয়ার ঠিক কয়েক মাস আগে এসে বাস্তবায়নকারী সংস্থা ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করবে। ফলে যে আকার নিয়ে এডিপি করা হয় তার মধ্যে ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে সড়ক ও স্থানীয় সরকার খাতের প্রকল্পগুলোতে। এসব প্রকল্পের ব্যয়ের বেশির ভাগই অপচয় হয়। বিভিন্ন খাত দেখিয়ে তারা ব্যয়গুলোর মাধ্যমে অর্থ নিচ্ছে; যার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা দুষ্কর হয়ে পড়ে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার : পরিবেশমন্ত্রী সাকিবকে ডিপিএলে চান বিসিবি প্রধান নির্বাচক কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি টি-২০ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল খুলনায় হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র? জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে মৃত হাতি উদ্ধার প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে

সকল