২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্নীতির ইনডেমনিটি প্রতিষ্ঠান দুদক অপশাসনেরই বিপজ্জনক বার্তা সরল দুর্নীতির বাণী : রিজভী

নয়াপল্টনে গতকাল বিএনপির সংবাদ সম্মেলন : নয়া দিগন্ত -

দুদককে সরকারের রাঘব-বোয়ালদের দুর্নীতির ইনডেমনিটি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুদক চেয়ারম্যানের সরল দুর্নীতির অভিনব বাণী অপশাসনেরই বিপজ্জনক বার্তা।
তিনি বলেন, দেশে যখন দুর্নীতির মহামারি চলছে তখন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি করতে উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, সরল বিশ্বাসে দুর্নীতি করলে অপরাধ হবে না। আমরা মনে করি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজেই যদি সরল দুর্নীতির অভিনব বাণী জনগণকে শোনান, তাহলে দুর্নীতির জোয়ারে দেশ তো ভেসে যাবেই। পক্ষপাতদুষ্টতার গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত দুদক চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যটি অপশাসনেরই একটি বিপজ্জনক বার্তা।
গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুর্নীতির ব্যাপকতা ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন তুলে ধরে রিজভী বলেন, খোদ দুদক কর্মকর্তাদেরই যখন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ বেরিয়েছে তখন সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির পক্ষে দুদক প্রধানের সাফাই গাওয়া ছাড়া তো আর অন্য কোনো বিকল্প থাকে না। চার দিকে যখন দুর্নীতিবাজদের উল্লাস, যখন শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি চলছে অবাধে তখন দুর্নীতিই যে এই দুর্নীতিবাজ সরকারের ভুষণ, দুদক চেয়ারম্যানের কথায় সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ব্যাংকিং খাতসহ বিভিন্ন খাতে সরকারি কর্মকর্তাদের ‘সরল বিশ্বাসে’ দুর্নীতির কারণে যে দুরবস্থা এবং মেগা উন্নয়নের প্রকল্পের ব্যয়ভার বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেন রিজভী।
বন্যা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চলে এখন বন্যায় সর্বস্বহারা মানুষের হাহাকার চলছে। শুকনো আশ্রয় ও খাবারের সন্ধানে ছুটছে বানভাসি মানুষ। কোথাও ত্রাণের গাড়ি কিংবা নৌকার সংবাদ শুনলেই ছুটে যাচ্ছে তারা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ছোট ছোট নৌকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে চলছে অনেকের। ত্রাণের অভাবে যখন করুণ অবস্থা তখন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ঢাকায় বসে গলাবাজি করছেন। সরকারের চরম উদাসীনতা প্রমাণ করে জনগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা জনবিদ্বেষী।
রিজভী জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা যতটা সম্ভব বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। এ জন্য দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এই মারণঘাতি ডেঙ্গু জ্বরÑ আওয়ামী লীগই আমদানি করেছে ১৯৯৭ সালে, তখন থেকে এই এডিস মশা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। এ জন্য এই গণবিরোধী সরকারই দায়ী। কারণ গণবিরোধী সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়িত্ব থাকে না। তাদের একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে কিভাবে জনগণের টাকা কিভাবে নিজেদের পকেটে ভরা যায়, সেই দায়িত্বটা তারা সুচারুভাবে পালন করছে। জনগণের স্বাস্থ্য, জনগণের অসুস্থতা, জনগণের সার্বিকভাবে কল্যাণ সেটি তারা চায় না।


আরো সংবাদ



premium cement