২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিমানের বহরে তৃতীয় বোয়িং ড্রিমলাইনার যোগ হচ্ছে বুঝে নিতে ২৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে প্রতিনিধিদল ; সাক্ষাৎকার শেষ তবুও এমডি নিয়োগ ঝুলে আছে

-

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে এবার চতুর্থ প্রজন্মের তৃতীয় অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার (বোয়িং-৭৮৭) যোগ হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। চতুর্থ ড্রিমলাইনারটিও চলতি বছরের সেপ্টম্বর মাসে আসার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে আছে। গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, আগামী সপ্তাহ বিমানের বহরে যে এয়ারক্র্যাফট যোগ হবে সেটির নাম দেয়া হয়েছে গাংচিল। এটি দিয়ে সম্ভবত ঢাকা- গুয়াংজু, ঢাকা-মদিনা, ঢাকা-কলম্বো রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
বিমানের বলাকা ভবন সূত্রে জানা গেছে, ড্রিমলাইনারটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের বোয়িং কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বুঝে নিতে আগামী ২৪ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। ওই ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ ও ক্যাপ্টেন আমিনুল ইসলাম যাবেন বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জন সংযোগ) তাহেরা খন্দকার নয়া দিগন্তকে বলেন, বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার আনার জন্য বিমানের একটি প্রতিনিধি দল সম্ভবত ২৪ জুলাই ঢাকা থেকে রওনা হবেন। তারা সিয়াটল থেকে এয়ারক্র্যাফট বুঝে নিয়ে ২৫ জুলাই ঢাকায় ফিরে আসবেন বলে জানি। তবে ড্রিমলাইনার আনার জন্য বিমানের কোন কোন কর্মকর্তা যাচ্ছেন তা তিনি জানাতে পারেননি। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্রয় করা উড়োজাহাজের সংখ্যা ৮টি। এর মধ্যে বোয়িং-৭৩৭ দু’টি, বোয়িং-৭৭৭-৩০০ চারটি। এবং ড্রিমলাইনার বোয়িং-৭৮৭ দু’টি। এর সাথে আগামী সপ্তাহে বহরে তৃতীয় এয়ারক্র্যাফটটি ড্রিমলাইনার এসে যোগ হলে তখন নিজস্ব উড়োজাজাহের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯টি। তবে নিজস্ব উড়োজাহাজের পাশপাশি বিমানের বহরে লিজ কোম্পানির উড়োজাহাজও রয়েছে সাতটি। এর মধ্যে বোয়িং-৭৩৭, চারটি এবং তিনটি ড্যাশ-৮। এর মধ্যে আবার একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ সম্প্রতি ঢাকা থেকে উড়ে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের মুহূর্তে রানওয়ে থেকে ছিটকে পাশের ঘাসে গিয়ে আটকে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনায় পড়া এয়ারক্র্যাফটটি আর আকাশে উড়ানো সম্ভব হবে না।
গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বিমানে বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে। কখন কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোথায় সরিয়ে দেয়া হয়, তা নিয়ে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী আতঙ্কে থাকছেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদটি এখনো শূন্যে হয়ে রয়েছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী মিলিয়ে বাছাই করা মোট ১২ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিমান পরিচালনা পর্ষদ। তাদের মধ্যে থেকে কে বিমানের এমডি হতে যাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অভিজ্ঞ একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে এ প্রতিবেদকের কাছে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য কি আমাদের যোগ্য কোনো কর্মকর্তা নাই ? এর আগেও তো আমরা দেখেছি বিদেশ থেকে এমডি এনে বিমান পরিচালনা করতে। কিন্তু তারা কি আমাদের বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পেরেছেন? বরং দেখেছি, তাদের উচ্চ বেতন, বাড়ি ভাড়া আর বাবুর্চির খরচ মেটাতে বিমানকে ব্যতিব্যস্ত থাকতে। এখন দেখার অপেক্ষায় আছি এমডি হিসেবে কে আসছেন? দেশী না বিদেশী।
উল্লেখ্য, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল। তিনি ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করছেন। গত সপ্তাহে ফ্লাইট অপারেশন পদে ফারহাত জামিলকে সরিয়ে ক্যাপ্টেন বাসিত মাহাবুবকে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু নিয়োগের এক দিন না যেতেই তার নিয়োগাদেশ রহস্যজনক কারনে কর্তৃপক্ষ বাতিল করে দেয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement