পেট্রোলিয়াম পণ্যের ভেজাল ধরার ক্ষমতা পাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে পেট্রোলিয়াম পণ্যের ভেজাল ধরার ক্ষমতা পাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ‘পেট্রোলিয়াম আইন-২০১৬’, ‘মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯’-এ তফসিলভুক্ত করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় তারা এই ক্ষমতা পাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধিবেশনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনাকালে জেলা প্রশাসকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের এই সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি নাটোরে গ্যাস দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হলে আইনে ওই বিষয় উল্লেখ থাকতে হয়; কিন্তু পেট্রোলিয়াম পণ্যের বিষয়টি এর আগে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এখন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সারা দেশে পেট্রোলিয়াম পণ্যের ভেজাল প্রতিরোধের সাথে ওজনে কম দেয়ার মাত্রাও কমবে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ‘পেট্রোলিয়াম আইন-২০১৬’ ও ‘মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯’-এ পেট্রোলিয়াম পণ্য তফসিলভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, পেট্রোলিয়ামের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য এটি তফসিলভুক্ত করা প্রয়োজন।
নাটোরের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জেলায় গ্যাস সংযোগ দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, নাটোরে দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস সংযোগ প্রয়োজন। এতে শিল্পের বিকাশ, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়বে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাবে বলা হয়, কুতুবদিয়া উপজেলা কক্সবাজার জেলার একটি প্রত্যন্ত দ্বীপ। এ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। বায়ু বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও ওই বিদ্যুৎ দিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন। কুতুবদিয়া উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে লবণ ও মৎস্য শিল্প উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেতে পারে।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার মৈদুং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করার প্রস্তাবে বলা হয়, এই এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি জনগণের জীবনমান উন্নত হবে।
ঠাকুরগাঁও এবং লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এলাকার লো ভোল্টেজ সমস্যা নিরসনের দাবি জানিয়ে বলেন, লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় লো ভোল্টেজজনিত কারণে স্থানীয়রা বিদ্যুতের স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সঞ্চালন লাইন লালমনিরহাট থেকে ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ায় স্থানীয় জনগণকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎসুবিধা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জেলার মাঝামাঝি স্থানে উপকেন্দ্র স্থাপন করলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করা যাবে। এ জন্য জেলা প্রশাসক হাতিবান্ধা উপজেলার বড়খাতায় ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে নির্মাণের আশ্বাসও দেয়া হয়।