১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিপিডি আদৌ কোনো গবেষণা করে কি না সন্দেহ তথ্যমন্ত্রীর

চট্টগ্রামে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ : নয়া দিগন্ত -

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সিপিডি ও বিএনপির কাছে জানতে চেয়েছেন গত ১০ বছরে দেশ কিভাবে এত এগিয়ে গেল? আর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে আপনারা যে সমালোচনা করেন তা পরিহার করবেন। অবশ্যই আপনারা ভুল-ত্র“টি তুলে ধরবেন, তবে ১০ বছর ধরে প্রতি বাজেট ঘোষণার পর একই ধরনের গৎবাঁধা সমালোচনা নয়। সিপিডির দ্বারা আদৌ কোনো গবেষণা হয় কি না সন্দেহ পোষণ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতি বাজেটের পর তারা সংবাদ সম্মেলন করে বিশেষজ্ঞের মতামত দেন এবং পাণ্ডিত্য দেখানোর চেষ্টা করেন। পত্রিকা উল্টালে দেখা যায় বিএনপি একই ধরনের সমালোচনা ও বক্তব্য রাখছেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিপিডির বক্তব্য যা বিএনপির বক্তব্যও তা। ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রেখে গিয়েছিলেন। এরপর বিএনপি পাঁচ বছর দেশ চালানোর পর খাদ্য ঘাটতি গিয়ে দাঁড়ায় ৪০ লাখ টনে। দারিদ্র্যসীমার নিচে লোকসংখ্যা একজনও কমেনি। বাংলাদেশ ছিল ঋণনির্ভরতার দেশ। অথচ বর্তমানে বাজেটের সামান্য অংশ ঋণনির্ভর, বাকিটা আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করছি।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ও শহর ইউনিটের সহযোগিতায় ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট রক্ত কেন্দ্র এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিষদ সদস্য ডা: শেখ সফিউল আজমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিটি ইউনিটের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার, ডা: মিনহাজ উদ্দিন তাহের, ইসমাঈল হক চৌধুরী ফয়সাল, মহসিন উদ্দিন প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি ও সিপিডির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ১০ বছর ধরে ভুল বাজেট দেয়ার কারণেই কি দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে? মানুষের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে সাড়ে তিন গুণ বেড়ে দুই হাজার ডলারে উন্নিত হলো? স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যমআয়ের দেশে উন্নিত হলো? ২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেন তখন দেশের লোকসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি। তখন ৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আজকে ১৭ কোটি লোকসংখ্যার বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতি পুষিয়ে খাদ্যে উদ্বৃত্ত অর্জন করেছে। সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করতে পারে কিন্তু বিএনপি ও সিপিডি সরকারের প্রশংসা করতে পারেন না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রতি বাজেটের পর এটি গণমুখী বাজেট নয় ও দরিদ্র মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি বক্তব্য রাখেন সংবাদ সম্মেলন করে। অথচ বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখবেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সাথে রাষ্ট্রকে একটি সামাজিক ওয়েলফেয়ার এস্টেটে নিয়ে যেতে চায় সরকার। কিন্তু তারা এসব দেখেন না।
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন কেনিয়াতে বলেছেন বাংলাদেশের কাছ থেকে আফ্রিকার দেশগুলোর অনেক কিছু শেখার আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রশংসা করতে না পারার মূল কারণ হচ্ছে যারা বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামে এ ধরনের সমালোচনা করেন তারা হচ্ছেন ১/১১ এর কুশীলবদের অন্যতম। ১/১১-এর সরকারের সময়ে তারা নানাভাবে সুবিধাভোগী ছিলেন। বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে আমরা করতে পারলাম না, তারা করতে পারছে।
দেশের স্বার্থে সবাইকে এক সাথে মিলে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা যুক্তি ও তর্কভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় বাস করি। এখানে যুক্তি তর্ক থাকবে, সমালোচনাও থাকবে। তবে সমালোচনা যেন অন্ধ ও বিদ্বেষ প্রসূত না হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement