২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আলোচনা সভা

ভোট চোরদের হাতে দেশের সম্পদ নিরাপদ নয় : আমীর খসরু

তাঁতী দলের আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : নয়া দিগন্ত -

ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে না। এ সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। তারা একদিকে লুট করছে অন্য দিকে, বাজেট দিচ্ছে দেশ পরিচালনা করছে, সংসদে অন্যায়ভাবে বসে আছে। একই গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন করছে। আজকে সব একীভূত হয়ে গেছে। যারা ভোট চুরি করে তাদের হাতে দেশের সম্পদ নিরাপদ নয়। তাদের দ্বারা সম্পদের সুষম বণ্টন হতে পারে না। অতীতে একই গোষ্ঠী সব কিছুরই দায়িত্বে ছিল না বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল। সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেনÑ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, বিএনপির তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক ও তাঁতী দলের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন ইসলাম খান, এনপিপির অহিদুর রহমান, তাঁতী দলের নেতা বাহাউদ্দিন বাহার, কাজী মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম, রেজাউল ইসলাম, গোলাপ মঞ্জুর, জে এম আনিসুর রহমান, জাকির হোসেন লিটন, মোস্তফা কামাল হাওলাদারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে আগত নেতারা।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে দেশের সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর বিষয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। তার মুক্তির সাথে সবকিছু জড়িত। তার মুক্তির সাথে জড়িত দেশের মানুষ ভোটাধিকার ও নিরাপত্তা ফিরে পাবে কি পাবে না, ন্যায়বিচার পাবে কি না। দেশের একটি গোষ্ঠী জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করে একদলীয় স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তাদের উদ্দেশ্যÑ একদলীয় শাসন পুনরায় প্রবর্তন, তাদের লক্ষ্যÑ এ্রখানে সামাজিক কোনো ন্যায়বিচার থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবে না। তাদের হাতে সব সম্পদ থাকবে।
আমীর খসরু বলেন, এ সঙ্কট উত্তরণের আর কোনো পথ নেই। আমাদের এক দাবি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেটা হলো খালেদা জিয়ার মুক্তি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আমরা চাই। রাজপথে এসে চিৎকার করে বলতে হবে দেশনেত্রীকে মুক্ত করব, গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করব। এর কোনো বিকল্প আমাদের সামনে নেই।
তিনি বলেন, দেশে কর্মসংস্থান না থাকায় বেকাররা বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে। আজকে বাংলাদেশী তরুণরা বেকারত্ব সহ্য করতে না পেরে, নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিউনিশিয়ার উপকূলে সমুদ্রে ভাসছে। কেনো ভাসছে, কেনো বাংলাদেশ থেকে তারা পালিয়ে যাচ্ছে? যারা আজকে উন্নয়নের কথা বলে তারা কি উত্তর দিতে পারবে? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কেনো হাজার হাজার লোক পালিয়ে যাচ্ছে, সমুদ্রে ডুবে মরে যাচ্ছে? যে দেশে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা থাকবে না, সেখানে ন্যায় বিচার হতে পারে না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, সবার আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই দেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন শুরু করার। কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মোটা কাপড়, মোটা ভাত, শহীদ জিয়ার মতবাদ’। ১৯৮০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ জিয়া তাঁতী দলের প্রতিষ্ঠা করেন। আমরা পেশাভিত্তিক দল। সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য উৎপাদনমূলক কাজ করি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই প্রথম বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের চাল রফতানি শুরু করেন। কিন্তু ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সংগঠনের ন্যায় বিএনপি আমাদের এখন আগের মতো মূল্যায়ন করে না। বড় বড় জনসভায় আমাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নাম পর্যন্ত বলা হয় না। যা খুবই দুঃখজনক। তবুও আমরা শক্তিশালী।
প্রত্যুত্তরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সব অঙ্গ সংগঠনকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। এর প্রয়োজনীয়তা আছে। তা না হলে অন্যরা কাজ করবে না। বাজেটে দেশের তাঁতী সম্প্রদায়ের জন্য কী দেয়া হয়েছে তা নিয়েও তাঁতী দলকে কাজ করতে হবে। তবেই আপনারা বিএনপির হয়ে তাঁতী সম্প্রদায়ের কাছে সমাদৃত হবেন। সব অঙ্গ সংগঠনের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে বাজেটে নিজ নিজ খাতের বিভিন্ন বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।

 


আরো সংবাদ



premium cement