নদী শুকিয়ে গেলে বিপন্ন হবে দেশ জনগণ ও প্রকৃতি : তথ্যমন্ত্রী

নদী দখল-দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আমাদের নদীগুলো যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে দেশ ও দেশের মানুষ বিপন্ন হবে, বিপন্ন হবে প্রকৃতি।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে নদী নিরাপত্তার সংগঠন নোঙর ও নদী রক্ষা জোট আয়োজিত ‘নদী ও পরিবেশ সুরক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
নোঙর সভাপতি সুমন শামসের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন সভাপতি আবু নাসের খান, রিভারাইন পিপল সভাপতি শেখ রোকন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের প্রেসিডেন্ট মো: মনির হোসেন, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ সভাপতি রুহুল আমিন ও নদী গবেষক মিহির বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।
দেশের নদ-নদীগুলোকে মানবদেহের শিরা-উপশিরার সাথে তুলনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেহের শিরা যদি শুকিয়ে যায় তাহলে শরীর দিন দিন মৃত্যুর দিকে চলে যায়। দেশের নদীগুলোও ঠিক সেই রকম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের সুন্দরভাবে বাঁচার জন্যই নদীগুলোকে দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। সে ক্ষেত্রে সরকার জোরালোভাবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নদীরক্ষার জন্য অনেক কাজ হয়েছে। নদী কমিশন গঠন হয়েছে, এটি আগে ছিল না। আমরা শতবর্ষের ডেল্টা প্লান করেছি। আমরা এবার নতুন করে সরকার গঠনের পর অনেক নদী দখলমুক্ত করেছি। আপনারা দেখেছেন, বুড়িগঙ্গা ও কর্ণফুলীর তীরে বহু প্রভাবশালীর স্থাপনা উচ্ছেদ ও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।’
নদী ও পরিবেশ রক্ষায় নোঙর ও অন্যান্য সংগঠনের উদ্যোগের প্রশংসা করে ও সরকারি সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে আরো যতœবান হবে বলে আশা প্রকাশ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণ শুধু দখল দূষণ নয়, বন উজাড় হয়ে যাওয়াও এর একটি বড় কারণ। এক সময় বুড়িগঙ্গা নদীতে মানুষ গোসল করত, এখন তা ভাবাও যায় না। প্রভাবশালী ও বিত্তশালী চক্রের লোলুপ দৃষ্টি থেকে নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে। আওয়ামী লীগের ১০ বছরের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও একজন পরিবেশকর্মীর অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি আপনাদের সাথে আছি, থাকব। নদী দূষণ, দখলকারী ও প্রভাবশালীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
২০১৪ সালের ২৩ মে মেঘনাবক্ষে চারটি লঞ্চডুবিতে শত শত প্রাণহানির ঘটনা স্মরণে ২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিকারী ‘নদীপুত্র’ হিসেবে পরিচিত নোঙর সভাপতি সুমন শামস বলেন, ‘নদী আমাদের মায়ের মতো। নদী ও পরিবেশ সুরক্ষায় সবার আন্তরিক ভূমিকাই পারে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের বাঁচাতে।’ সভাশেষে নদীরক্ষা জোটের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের হাতে নোঙর সম্মাননা ম্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।