১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পেশাজীবী পরিষদের মানববন্ধন

কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপন সংবিধান পরিপন্থী : মওদুদ

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মানববন্ধন :নয়া দিগন্ত -

আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সেইসাথে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর বিচারে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ আদালত স্থাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শিগগিরই উচ্চ আদালতে রিট করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই আদালত স্থাপন করা সংবিধান পরিপন্থী। আমরা মনে করি, সংবিধানে যে মৌলিক অধিকার একজন নাগরিককে দেয়া হয়েছে সেই অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা শিগগিরই কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপনের বৈধতা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করব। আমরা এটা করতেই থাকব। কারণ আমাদের অন্য কোনো উপায় নাই। আমরা লড়ে যাব। আদালতেও লড়ব, রাজপথেও লড়ব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এই মানববন্ধন করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা: সিরাজউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শামসুল আলম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেটে জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম, বিএনপির সাখাওয়াত হাসান জীবন, সাদেক আহমেদ খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা বক্তব্য দেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ কেরানীগঞ্জ কারাগার প্রসঙ্গে বলেন, আমরা কালকে দেখে এসেছি। কী নির্জন একটা অবস্থা সেখানে। কেরানীগঞ্জ একটা উপজেলা। সেখানে কোনো সুযোগ-সুবিধা নাই। ন্যায়বিচার পাওয়ার মতো আদালতে যে পরিবেশ থাকার প্রয়োজন, সেই ধরনের কোনো পরিবেশ সেখানে নাই। বই-পুস্তক নাই, লাইব্রেরি নাই। আদালত পরিচালনা করার যে সুযোগ-সুবিধা স্বাভাবিকভাবে থাকে যেকোনো আদালতে, তা সেখানে নাই। সেখানে আইনজীবীদের যাওয়া-আসায় যে চরম দুর্ভোগ-এটা আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন। ঘটনা ঘটবে এখানে কিন্তু সেখানে বিচার হবে। আপনারা জানেন যে, সাধারণ মানুষের কাছেও এটা অত্যন্ত সহজ যে, যেখানে ঘটনা ঘটে আইনে বলে যে, সেখানে বিচার হতে হবে। কিন্তু সেখানে না আজকে কেরানীগঞ্জে করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জে আদালত স্থাপনকে ‘ষড়যন্ত্র’ অভিহিত করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত মুক্তি পান নাই সরকারের বিভিন্ন কলাকৌশল ও ষড়যন্ত্রের কারণে। এখন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে যে, হাসপাতাল থেকে তাকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে নিয়ে যাওয়া। কারণ তারা চায় না যে, বেগম জিয়া মুক্ত হোক। আমরা চেষ্টা করছি, আইনজ্ঞরা আইনতভাবে যতটুকু করা সম্ভব আমরা করছি। কিন্তু সরকারের কূটকৌশলের কারণে আমরা সফল হতে পারছি না। তারপরও এই আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে এবং তার সাথে সাথে আমাদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ আন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তি অর্জন করা সম্ভব হবে নাÑ এটা আমরা বুঝি। মওদুদ আহমদ বলেন, চকবাজারের একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে বেগম খালেদা জিয়া একাকী জীবনযাপন করছেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার এই অসুস্থতা, তার শরীরের এই অবনতির জন্য এই সরকারকে দায়ী করব আমরা। দেশের মানুষ মনে করে এই সরকারই দায়ী।
ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। আজকে প্রধানমন্ত্রী ওআইসির সম্মেলনে মক্কায় যাবেন। কিন্তু আল্লাহ যখন বলবেন, হাসিনা আপনি ভালো কাজ কী করেছেন? তার খতিয়ান দিতে পারেন? তখন প্রশ্ন আসবে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি না দিয়ে কি কোনো ভালো কাজ সম্ভব? সুতরাং প্রধানমন্ত্রী আপনি দিনের আলো দেখে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আর দেরি নয় ঈদ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এখনই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেন। এটিই হবে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে দেশে শত কোটি টাকার ওপরে ঋণ খেলাপি হওয়ার পরও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যায়, সেখানে আড়াই কোটি টাকার মামলায় (যা চুরি হয়নি) তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার মানে হলোÑ যতদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া কারাগারে থাকবেন তত দিন পর্যন্ত সরকার নিরাপদ। আসলে গত ৩০ ডিসেম্বর দেশে ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে। ডাকাতরা ক্ষমতায় এখন এই দেশে। সুতরাং এই ডাকাতদের সরাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদী হয়ে রাজপথে নামতে হবে। কারণ এই সরকারের কোনো দয়ামায়া নাই। তারা জবরদখলকারী। অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে।
শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। যত দিন মুক্তি না দিবেন তত দিন আমরা রাজপথে দাঁড়াবো। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি একদিন সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনে পরিণত হবে। পেশাজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি : ইরানি কমান্ডার ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘কেন্দ্র’ ইস্ফাহান : সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের সেই ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি দুবাইয়ে বন্যা অব্য়াহত, বিমানবন্দর আংশিক খোলা ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ১৪ বছরেও হত্যাকাণ্ডের বিচার পায়নি এসআই গৌতম রায়ের পবিবার মিলান-লিভারপুলের বিদায়, সেমিফাইনালে আটলন্টা-রোমা

সকল