২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১২ প্রকল্প জুনেও সমাপ্ত হচ্ছে না

-

গুরুত্বপূর্ণসহ ১২টি প্রকল্প নিয়ে বিপাকে পরিকল্পনা কমিশন। আগামী জুনে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমাপ্ত হচ্ছে না। চলতি অর্থবছর (২০১৮-১৯) সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ওই ১২ প্রকল্প সমাপ্ত করার জন্য আবশ্যিক ছিল। বছরের পর বছর চলমান এইসব প্রকল্পের অসমাপ্ত ক্রয় কার্যক্রম, কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি, ভৌত অবকাঠামোর কাজও অসমাপ্ত এখনো। আগামী অর্থবছরের নতুন এডিপিতে এগুলোতে যুক্ত না করে এই অর্থবছরেই সমাপ্ত করার জন্য সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
কমিশনের সম্প্রতি রিপোর্ট ও সূত্র মতে, এই অর্থবছরের জুনে মধ্যে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প সমাপ্ত করার কথা ছিল। কিন্তু পর্যালোচনা থেকে দেখা যায়, অর্থবছরের বাকি সময়ে তা শেষ করা সম্ভব নয়। এমনকি কোনো কোনো প্রকল্পের মেয়াদ আবার বাড়ানোর জন্যও প্রস্তাব করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের পক্ষ থেকে। এই প্রকল্পগুলো ২০১০ সালে শুরু হয়ে কোনোটা ২০১৩ সালের জুনে, কোনোটা ২০১৬ সালের জুনে এবং কোনোটা সময় বাড়িয়ে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের জুনে শেষ করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু সেটাও হচ্ছে না। ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এই ১২ প্রকল্পের মোট বাস্তবায়ন ব্যয় হলো ৭ হাজার ৭২৭ কোটি ৪ লাখ টাকা, যা অনুমোদিত ব্যয়ের তুলনায় ৩০০ কোটি টাকা বেশি।
কমিশনের তথ্যানুযায়ী, পাটবিষয়ক মৌলিক ও ফলিত গবেষণা প্রকল্পটি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। ২০১৩ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। দুই দফায় ছয় বছর সময় বাড়িয়েও প্রকল্পের কাজের কোনো গতি নেই। ৯ বছর ধরে চলমান এই প্রকল্পকে এই অর্থবছরেই সমাপ্ত করার জন্য বলেছে। বিএসটিআইকে শক্তিশালীকরণ প্রকল্পটি ২০১১ সালে শুরু হয়, যা ২০১৪ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। পরে সময় বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত নেয়া হয়। এই প্রকল্পের গণপূর্তের ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ এখনো বাকি আছে। পাঁচ বছর সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী সংস্থা। নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পকে সমাপ্ত ঘোষণা করার জন্য বলছে কমিশন। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন কর্তৃপক্ষের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির প্রকল্পটিও অনুমোদিত মেয়াদের তিন বছর সময় বাড়ানো হয়। ব্যয় বাড়ে ৩৮ কোটি টাকার বেশি। এই প্রকল্প সমাপ্ত করার জন্য চাহিদা মোতাবেক পুরো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও তা শেষ করতে পারেনি। এখনো যন্ত্রপাতি সংগ্রহ বাকি আছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ ঢাকা বিভাগের কার্যক্রম-২ প্রকল্পের কাজ এখনো বেশির ভাগ বাকি। প্রকল্পটি ২০১৮ সসালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। ৩৫টি নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণের কথা থাকলেও বর্ধিত সময়ে মাত্র সাতটির কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হয়েছে। ২৮টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের কাজ এখনো চলমান। পল্লী বিদ্যুতের চট্টগ্রাম বিভাগের প্রকল্পটির কাজ সময় বাড়িয়েও শেষ করতে পারেনি। আরো ছয় মাস সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন করে ১৫টি টার্ন কি সাবস্টেশন স্থাপন করতে হবে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানিগঞ্জ প্রকল্পের কাজ ২০০৫ সালে শুরু হয়। ১৪ বছর ধরে এই প্রকল্পটি চলমান। ২০১০ সালে শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ করতে পারেনি। এই প্রকল্পে পুরুষ কারারক্ষীর ব্যারাক, মহিলা কারারক্ষীর ব্যারাক, ইন্টারভিউ ব্লক-২, পুরুষ বিশ্রামাগার ও মহিলা বিশ্রামাগার এবং ভার্চুয়াল কোর্ট নির্মাণের কাজ এখনো সমাপ্ত হয়নি। কমিশন প্রকল্পটি জুনের মধ্যেই সমাপ্ত করার জন্য বলেছে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, নির্ধারিত সময়ে শেষ করার কথা থাকলেও প্রতি বছরই ডজনকে ডজন প্রকল্প টানতে হচ্ছে এডিপিতে। এসব প্রকল্পের জন্যও অর্থও বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। কিন্তু কাজের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এসব প্রকল্পের কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ জোগান দেয়া যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement