পুলিশের ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ ছাতকে দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১, ওসিসহ আহত ৪৫
- ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০
সুনামগঞ্জের ছাতক নৌপথে টোল আদায় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে একজন নিহত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশসহ দু’পক্ষের অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় ছাতক পৌর শহরের হাইস্কুলসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্রে ব্যবহার করেছে। ইটপাটকেলের ছোড়াছুড়িসহ শতাধিক রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। এ সময় ছাতক হাইস্কুলসংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গুলিবিদ্ধ হন ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল, ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম, এসআই সৈয়দ আবদুল মান্নান, কং ফাহিম, কং সাকিরসহ আট পুলিশ সদস্য। ওসি মোস্তফা কামালসহ আহত তিনজনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শাহাব উদ্দিন, সেলিম চৌধুরী, কহিন চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, কামাল চৌধুরী, ফরহাদ চৌধুরী, আবুল খয়ের টুটুল, সোহাগ দাস, সাজু, শাওন, সানী, গিয়াস মিয়াসহ আহত ২৫ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ছাতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ শাহাব উদ্দিন চিকিসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। তার বুকে গুলি লেগেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। শাহাব উদ্দিন বাগবাড়ি এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে। পেশায় সে একজন শ্রমিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুরমা নদীতে টোল আদায় নিয়ে কয়েক দিন ধরে বাগবাড়ি গ্রামের মৃত আরজ মিয়া চৌধুরীর ছেলে আহমেদ শাখাওয়াত চৌধুরী সেলিম ও শামীম আহমদ চৌধুরী পক্ষ এবং তেরা মিয়া চৌধুরীর ছেলে শাহিন চৌধুরী ও মণ্ডলীভোগ এলাকার বাসিন্দা পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীসহ ৯ কাউন্সিলর পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দুয়েক দিন ধরে উভয়পক্ষের লোকজন ফেসবুক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। তারা ফেসবুকের বিভিন্ন স্ট্যাটাসে একপক্ষ অপর পক্ষকে চাঁদাবাজ বলে আখ্যায়িত করে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে সুরমা নদীতে শাহিন চৌধুরী পক্ষের দু’টি নৌকায় লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাতকের বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন সাহেল ও বাগবাড়ি এলাকার খোকন মিয়া জড়িত ছিল বলে জানান শাহিন চৌধুরী। এ নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর বাগবাড়ি স্কুল এলাকায় খোকন মিয়াকে ধাওয়া করে শাহিন চৌধুরীর লোকজন। পরে শাহিন চৌধুরী ও তাপস চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে আহমেদ শাখাওয়াত সেলিম চৌধুরী পক্ষের খোকন মিয়া ও শাহাব উদ্দিন সাহেলের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষের লোকজন। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি দু’পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৬৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৫২ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ জামাল চৌধুরী, কামাল চৌধুরী, ইলিয়াছ চৌধুরী, আশরাফ চৌধুরী, পল্টু দাস, দিলোয়ার হোসেন, শামীম আহমদ, গিয়াস মিয়া, রহিম আলীসহ ২৮ জনকে আটক করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা