২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তারেক রহমানের কোনো অবৈধ অর্থ নেই : রিজভী

বিএনপির ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী :নয়া দিগন্ত -

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, তারেক রহমানের কোনো অবৈধ অর্থ নেই। সেখানে তার যা অর্থ আছে তা ইনল্যান্ড রেভেনিউতে ট্যাক্সপেইড অর্থ। সে দেশে আইনের শাসন রয়েছে। ফলে সেখানে আনডিসক্লোজড মানি ট্রানজেকশন হওয়ার সুযোগ নেই। গতকাল সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমের খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের আদালত ব্যবহার করে সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা: জোবায়দা রহমানের নামে যুক্তরাজ্যের একটি ব্যাংকে থাকা তিনটি হিসাব জব্দের নির্দেশের আদেশ করিয়েছে। সরকারের নির্দেশে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত একটি আদেশ দিয়েছেন। মিথ্যা সাজানো মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রাখা হয়েছে অন্যায়ভাবে। এখন বিএনপিকে চাপে ফেলতে এই সরকার দুদককে দিয়ে একটি কাল্পনিক ও মিথ্যা আবেদনের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে আদেশ করিয়েছে। এটি একটি আষাঢ়ে গল্প।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি যেভাবে সুসংগঠিত হচ্ছে, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সরকার ভীত হয়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাল্পনিক মিথ্যা অভিযোগ সামনে এনেছে। কারণ এখন সরকার যা বলে নিম্ন আদালত তাই করে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যদি সরকারের নির্দেশ না মেনে কোনো বিচারক ন্যায়বিচার করেন তাহলে তাদের দেশ ছাড়তে হয়, যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ বিচারক মোতাহার হোসেন ও প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও তাদের আন্দোলনের ফসল (১/১১-এর সরকার) বারো বছর ধরে তন্নতন্ন করে খুঁজে তারেক রহমানের অবৈধ সম্পদের কোনো সন্ধান পায়নি। অথচ ঢালাওভাবে তার বিরুদ্ধে কত যে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে অপপ্রচার করেছে সেটির ইয়ত্তা নেই। এখন দুদককে দিয়ে আরেকটি কুৎসা রটনার নতুন অধ্যায় শুরু করল। যুক্তরাজ্যের বিদ্যমান আইনে আইনসিদ্ধ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আদালতের হস্তক্ষেপের কোনো এখতিয়ার নেই। জিয়া পরিবারের প্রতি সরকারের প্রতিহিংসার প্রতিফলন এটি। সরকারের মদদে দুদক আদালতকে ব্যবহার করে যে আদেশ জারি করিয়েছে সেটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিএনপি।
রিজভী বলেন, তারেক রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য হেন কাজ নেই যা এই জনভিত্তিহীন সরকার করছে না। একদিকে তাদের অনুগত কিছু পেইড মিডিয়া প্রতিদিন জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে হাইপার প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, অন্য দিকে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও কুৎসায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ ও তিক্তবিরক্ত। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থার নামে যে দলীয় প্রভাব বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে তা স্পষ্ট। সরকারের হুকুমের বাইরে গিয়ে কোনো বিচারকের ন্যায়বিচার করার সাহস ও সুযোগ নেই।
‘আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে....’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী আরো বলেন, একটা প্রবাদ আছে ‘এক কান কাটলে হাঁটে জঙ্গল দিয়ে, দুই কান কাটলে হাঁটে সবার সামনে দিয়ে’। কারণ তখন তার লজ্জা-শরম থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে গোরস্থানের লাশও খিলখিল করে হেসে উঠবে। সরকারের লোকদেরও এখন লজ্জা-শরম নেই। তাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করতে লজ্জা হয় না। একাদশ সংসদ নির্বাচন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত ও বিতর্কিত নির্বাচন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন মিলে আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে রাখে, ভোটের দিন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। এখন সেটি চেপে গিয়ে মুখস্থ মিথ্যা কথা বলছে ক্ষমতাসীনেরা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বাড়লে গত নির্বাচনে কেন বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছিল? কেন প্রার্থীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল? আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন মিলে ব্যালটবাক্স ভর্তি করল কেন? একতরফা উপজেলা নির্বাচনে এখন ভোটারেরা ভোট দিতে যায় না কেন ? প্রধানমন্ত্রী এর জবাব জনগণকে দিবেন কি?

 


আরো সংবাদ



premium cement