২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছাত্রদল নেতাসহ নিহত ৮

-

কক্সবাজারের টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় রোহিঙ্গাসহ দুইজন, নোয়াখালীর সেনবাগে এক ছাত্রদল নেতাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরো ১৮ জন।
কক্সবাজার (দক্ষিণ) সংবাদদাতা জানান, টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিকআপ উল্টে গেলে এক রোহিঙ্গাসহ দুইজন নিহত এবং ১১ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে কক্সবাজার থেকে নম্বরবিহীন মাছ বোঝাই টেকনাফগামী একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে টেকনাফ থেকে হ্নীলাগামী একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে পিকআপ ভ্যানটি উল্টে গেলে গাড়িতে থাকা লোকজন চাপা পড়েন। আহতদের উদ্ধার করে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইওএম হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঝিমংখালীর আবু শামার ছেরে গুরা মিয়া (৩৭) এবং বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তির আব্দুল হতের ছেলে আয়াছ উদ্দিনকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন।
গুরুতর আহত উনচিপ্রাং রইক্ষ্যং পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের ২০৫৮ নং রুমের মো: হোছাইনের ছেলে সোলতান আমিন (৩৮), সোলতান আমিনের ছেলে মো: সলিম (১৩), থাইংখালী হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৬ নং ব্লকের ৫০৯ নং রুমের আমির হোসাইনের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩৫), কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের কবির আহমদের ছেলে নবী হোসাইন (১৪), জি-৩ ব্লকের মৃত অলি আজমের ছেলে জমির হোসাইন (৩২), পালংখালী শফি উল্লাহ কাটা ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের ১৪০নং রুমের লালুর ছেলে আব্দুল আমিন (২২), জামতলি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আহমদ হোসেনের ছেলে আবাদ উল্লাহ (২৫), সি-৭ ব্লকের ছৈয়দ নূরের ছেলে এনায়েত হোসাইন (১৯), বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকের ১১৬৬২৪ নং রুমের আনু মিয়ার ছেলে নজিম উল্লাহ (১৩), এফ ব্লকের আব্দুল হামিদের ছেলে মো: জুবাইরসহ (২০) ১১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছে। মোটর চালক ও পিকআপ চালকের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মোরশেদুল আলম চৌধুরী দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানান।
সেনবাগ (নোয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ফেনী নোয়াখালী মহাসড়কের ছমির মুন্সির হাট পশ্চিম বাজারে গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের আরোহী কাবিলপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ আহম্মদ ফরহাদ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মোটরসাইকেলের অপর আরোহী তাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল। নিহত ফরহাদ কাবিলপুর ইউপির মহিদীপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে ও কাবিলপুর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
শুক্রবার সকাল ১০টার সময় মহিদীপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়ির দরজায় নামাজে জায়নাজা শেষে ফরহাদকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জেলা শহর মাইজদী থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস বসুরহাট যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে চৌমুহনী অভিমুখী মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে যায় যায়। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় মোটরসাইকেলের আরোহী আহত ফরহাদ ও সহপাঠী সাইফুল ইসলামকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিলে ডাক্তার ফরহাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেনবাগ থানার এসআই গৌর সাহা ও আলমগীর ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসটি আটক করেন।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গুরুতর আহত শ্যামলী বেগম (৩৬) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শ্যামলী বেগম উলিপুর উপজেলার বজরা মিয়াজীপাড়া এলাকার মো: আজাদ মিয়ার স্ত্রী।
ওই দিন বিকেলে শ্যামলী বেগম ননদের বাড়ি চিলমারী থেকে কন্যাসন্তানসহ দেবর শাহ আলমের মোটরসাইকেলে করে নিজ বাড়ি ফেরার পথে রমপাগলীর তল ঘটকের মোড় এলাকায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বগুড়া অফিস জানায়, বাস-মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান বোরহান উদ্দিন মাজার গেটে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত মোটরসাইকেল চালক কালু মিয়া(৩৩) বগুড়া সদর উপজেলার রামশহর সদোপাড়ার লাল মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালু তার মোটরসাইকেলের পেছনে একই এলাকার রাজু নামের একজনকে নিয়ে গোকুল বাজার থেকে মহাস্থানে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে
বিপরীতমুখী একটি মাইক্রোবাসের সাথে মোটরসাইকেলের সজোরে ধাক্কা লাগলে তারা মহাসড়কে ছিটকে পড়েন। একই সময় ঘটনাস্থল অতিক্রম করতে গিয়ে দ্রুতগামী একটি বাস মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই কালু মিয়া নিহত এবং মোটরসাইকেলের আরোহী রাজু, মাইক্রোবাসের চালক ও বাসের দুই যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। পুলিশ গুরুতর আহত চারজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক ও সিএনজি-চালিত অটোরিকশা সংঘর্ষে মো: হানিফ নামে আড়াই বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের রাধিকা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হানিফ জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের দরুইল গ্রামের মোরশেদ মিয়ার ছেলে। এ দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মোরশেদ মিয়া (৩০) ও মা নাজমা বেগমসহ (২৫) অটোরিকশার চার যাত্রী গুরুতর আহত হন। আহত অন্য দু’জন হলেন মিলন মিয়া (২৮) ও রাশেদা বেগম (৩৫)। এর মধ্যে নিহত হানিফের বাবা মোরশেদ মিয়া ও মা নাজমা বেগমকে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এক নিকটআত্মীয় জানান, হানিফের বাবা নবীনগর দরুইল উচ্চবিদ্যালয়ে অফিসসহকারীর কাজ করেন। হানিফের মা নাজমা বেগম অসুস্থ থাকায় গতকাল সকালে তারা সিএনজিতে জেলা শহরে চিকিৎসার জন্য আসছিলেন। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নারায়াণচন্দ্র দাস জানান, ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে।
বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, লামায় পিকআপ দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত ও নারীসহ ৩ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের লুলাইং-সরই সড়কের মেরাইত্তা নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু আরাফাত মিয়া (৭) লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড অংসার ঝিরি এলাকার মনসুর আলমের ছেলে। আহতরা হলেন, নিহত শিশুর মা রেহেনা বেগম (৩৮), রেহেনা বেগমের মা মনোয়ারা বেগম (৬০) ও পিকআপ ড্রাইভার আবুল কালাম। নিহত শিশুর বাবা মনসুর আলম জানান, পাহাড়ে উঠার সময় গাড়ির গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়ে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে পিকআপটি পাহাড়ের খাদে পড়ে যায়। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথে ছেলে আরাফাত মারা যায়। আহত রেহেনা বেগম ও মনোয়ারা বেগমকে চকরিয়ার মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। অপরদিকে ড্রাইভার আবুল কালামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা জানান, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা এলাকায় ইজিবাইকের চাপায় হৃদয় (১১) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে।
উপজেলার মাদারতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হৃদয় মাদারতলী গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে এবং মাদারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মাদারতলী বাজার থেকে হৃদয় ও তার বড় বোন বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রতিবেশীর বেটারিচালিত ইজিবাইকে উঠে। বাড়ির কাছাকাছি আসার আগে রাস্তার খাদে পড়ে উল্টে গেলে হৃদয় ইজিবাইকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement