২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কেরানীগঞ্জ ও বরিশালে দুইজনকে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যা

-

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও বরিশালে দুইজনকে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বরিশালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী-শ্যালোকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা সংবাদদাতা জানান, কেরানীগঞ্জে ছুরিকাঘাতে মানিক (১৫) নামে এক কিশোরকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মন্দাইল বেড়িবাঁধ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি সাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, রাত ১১টায় স্থানীয় দুর্বৃত্ত ও বখাটে জাফর মানিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মানিকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাব ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জেরে মানিককেকে খুন করা হয়েছে। নিহত মানিকের বাবার নাম মো: মতিন। সে কেরানীগঞ্জ উপজেলার মডেল থানা এলাকার জিনজিরা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবদুর রশিদের বাড়ির ভাড়াটিয়া। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নামাজপুর গ্রামে। এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর এলাকার ইছাগুড়া রাজগড় গ্রামে রেজাউল করিম রিয়াজ (৪০) নামের এক দলিল লেখককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে দ্বিতীয় স্ত্রী, শ্যালকসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে ওইদিন ভোরে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত রিয়াজ ওই এলাকার ছাত্তার হাওলাদারের ছেলে এবং পেশায় একজন দলিল লেখক ছিলেন।
আটককৃতরা হলোÑ নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী লিজা বেগম, শ্যালক ও প্রতিবেশী একজন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি নুরুল ইসলাম পিপিএম। পুলিশ জানায়, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে তারা নিহত রেজাউল করিমের বাড়িতে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উল্লিখিত তিনজনকে আটক করা হয়।
সূত্রমতে, গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী লিজাকে নিয়ে স্বামী রেজাউল করিম রিয়াজ ঘুমিয়ে পরেন। এরপর রাতে পরিকল্পিতভাবে রিয়াজকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের বোন জাহেদা বেগম জানান, চার বছর আগে লিজাকে তার ভাই (রেজাউল) দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিবাহ করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান নেই। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রায়ই দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। লিজার বাবা বরিশাল নদী বন্দরের ঢাকাগামী অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চের কলম্যান দেলোয়ার হোসেন জানান, রেজাউলের সাথে তার ছোট ভাই রুবেল হাওলাদারের লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের কারণে হত্যাকাণ্ড হয়েছে কি না সে বিষয়ে তদন্তের জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে দাবি করেন।
জাহেদা বেগম আরো জানান, একই ঘরে স্বামী-স্ত্রী রাত্রীযাপন করা অবস্থায় তার ভাই রেজাউল করিমকে গলা কেটে ও উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করা হলেও লিজা ছিলেন অক্ষত। এমনকি তার গায়ে এক ফোটা রক্তের দাগ না পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তিনি (নিহতের বোন জাহেদা বেগম) বাদি হয়ে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি আরো জানান, নিহতের বসতঘরের একপ্রান্তে ছোট একটি সিঁদ কাটা থাকলেও তা দিয়ে মানুষ ভেতরে আসা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত ও তথ্য যাচাই-বাছাই করেছেন। এ বিষয়ে গভীর তদন্ত ও আটককৃতদের জিজ্ঞাসা করে হত্যাকাণ্ডের মূলরহস্য উদঘাটন করা হবে বলেও তিনি (ওসি) উল্লেখ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement