২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ১০ বছর

৩৫ মামলার রায়, ৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড বিচারাধীন ৩৪ মামলা

-

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইসিটি যাত্রা। প্রতিষ্ঠার পর গত ১০ বছরে ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৩৫টি মামলা নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৮০ জনকে দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আর বর্তমানে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৪টি।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শুরু করার পর ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর প্রথম রায় ঘোষণা করা হয়। ট্রাইব্যুনাল-২ পলাতক আসামি মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে রায় ঘোষণা করেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে মোট ৩৫টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এসব মামলায় আসামি ছিল ৮২ জন। যার মধ্যে ৮০ জনকে সাজা প্রদান করা হয়। আর রায় হওয়ার আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জন মৃত্যুবরণ করেন। এর মধ্যে পলাতক আসামি ৩৭ জন। আর আটক আসামি ৪২ জন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি একজন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ৫২ জন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ২৫ জন। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ২৪ জন। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে দু’জন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের একজন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আজম অপর জন বিএনপি নেতা আবদুল আলীম। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ছয়জনের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তারা হলেনÑ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, দলটির সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও দলটির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেম আলী এবং বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এ ছাড়া আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এখন বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৪টি। যার মধ্যে দু’টি মামলা রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে। ১১টি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আর বাকি মামলা চার্জ গঠন এবং ফরমাল চার্জ দাখিলের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে নেত্রকোনার আবদুল খালেক তালুকদার ও হেদায়েতুল্লার মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এ ছাড়া তদন্ত সংস্থা হতে প্রসিকিউশনে দাখিলকৃত কিন্তু এখনো বিচার শুরু হয়নি এমন মামলার সংখ্যা চারটি। এগুলো হলোÑ সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী, পিরোজপুরের আব্দুল মান্নান হাওলাদার, হবিগঞ্জের মধু মিয়া এবং ময়মনসিংহের মো: কিতাব আলীর মামলা।
অন্য দিকে ট্রাইব্যুনাল থেকে রায় ঘোষণা হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে এমন মামলার সংখ্যা ২৯টি। আর আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হয়েছে ১০টি। আপিল বিভাগে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় দুই নেতার আপিল বিচারাধীন রয়েছে। তারা হলেনÑ জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান। ট্রাইব্যুনালের রায়ে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। এ ছাড়া সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। ট্রাইব্যুনালের রায়ে তাকেও মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। এ ছাড়া যাদের আপিল শুনানির অপেক্ষায় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল জব্বার প্রমুখ।
জানা গেছে, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর তত্ত্বাবধানে মাত্র তিন সদস্যের প্রসিকিউটর টিম (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) নিয়ে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ১৭ জন প্রসিকিউটর কাজ করছেন বলে প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা (চমন) জানান।
অন্য দিকে ২০১৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নবম জাতীয় সংসদে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ব্যক্তির পাশাপাশি দলের বিচারের বিধান যুক্ত করে সংশোধনী পাস হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত সংস্থা। যার বিচারকার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আছে; যা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা যাবে। ট্রাইব্যুনালে বর্তমান মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। তবে ট্রাইব্যুনালের গতি আগের চেয়ে বেশি। আমরা প্রসিকিউশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি। আমরা তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষ্য পর্যালোচনা করার জন্য যে সময় দরকার সে সময়ের মধ্যে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছি। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষীরা নরমাল মামলার সাক্ষীদের মতো নয়, ৫০ বছর আগের ঘটনা বর্ণনা করতে হয়। সাক্ষী তার স্মৃতি থেকে যা বলে তাই। আমরা তা চেক করি। ৫০ বছর আগের বিষয়গুলো আমাদের কাছে যাতে বিশ্বাসযোগ্য হয়। সুলতান মাহমুদ সিমন জানান, আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অনেক মামলা পেন্ডিং রয়েছে। সে ক্ষেত্রে একটি বেঞ্চ গঠন করে ট্রাইব্যুনালের মামলা দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেয়া যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার

সকল