২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ সরকার জনগণকে ক্রীতদাস বানিয়েছে : রিজভী

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল : নয়া দিগন্ত -

দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার বেলা সকাল পৌনে ১১টার দিকে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে নেতৃত্ব দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্র হত্যাই আওয়ামী লীগের আদর্শ। এরা ক্ষমতায় এসে জনগণকে বারবার ক্রীতদাস বানিয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি কাকরাইল নাইটিংগেল মোড়, স্কাউট মার্কেট ঘুরে ফকিরাপুল অভিমুখে কিছুদূর এগিয়ে নয়াপল্টন মসজিদ প্রদক্ষিণ করে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায়, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, নীলফামারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর সরকারসহ নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। মিছিলে ঢাকার কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। তারা বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি আর চলতে দেয়া যায় না। স্বৈরশাসনের কশাঘাতে জনগণের মনে বিষাদঘন অবস্থা বিরাজমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে দস্যুবৃত্তির পন্থায়। তাকে চিকিৎসা না দিয়ে অসুস্থতাকে গুরুতর করার যাবতীয় ব্যবস্থা করে যাচ্ছে সরকার। বেগম জিয়া যাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সেই প্রহর গুণছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৫-এর হুবহু বাকশাল পুনঃপ্রবর্তনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যাই আওয়ামী লীগের আদর্শ। ক্ষমতায় এসে এরা গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন চালিয়ে জনগণকে বারবার ক্রীতদাস বানিয়েছে। বাকশাল সেই ক্রীতদাস বানানোরই ব্যবস্থা। গণতন্ত্র যাতে পুনরুজ্জীবিত হতে না পারে সে জন্য এ দেশের জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে বিনা দোষে, বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারান্তরালে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের কারাগারগুলো এখন শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কয়েদখানাতে পরিণত হয়েছে, যেখানে তিনি তার খেয়ালখুশিমতো বিরোধী রাজনীতিবিদদেরকে বন্দী রাখতে পারেন। এই নব্য বাকশালের বিরদ্ধে এখনই সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নইলে দেশে অন্ধকার অমানিশা ঘনিয়ে আসবে। এ জন্যই সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত দুর্নীতি অভিযোগে এক মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। সে দিন থেকেই পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দী তিনি। তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের অহিংস কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালতে এসে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। খুবই অসুস্থ আমি। চিকিৎসকেরা দরকারি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না। মাত্র একবার এসে চিকিৎসকেরা দেখে গেছেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রক্ত নেয়া হয়নি। ডায়াবেটিসের রোগী হিসেবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। থেরাপি ঠিকমতো দেয়া হচ্ছে না। আমি সত্যিই অসুস্থ।’ তার স্বাস্থ্যের চরম ক্রমাবনতিতে উদ্বিগ্ন বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গত ৫ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে বৈঠক করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement