২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর দেশে একটির পর একটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে : ড. মোশাররফ

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দোয়া ও আলোচনা সভা : নয়া দিগন্ত -

৩০ ডিসেম্বরের অস্বাভাবিক নির্বাচনের পর দেশে একটির পর একটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, অস্বাভাবিক বিষয় বেশি দিন টিকতে পারবে না, পারে না। গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ নয়, তারা হতভম্ব। আর কেউ হতভম্ব হলে তা ঠিক হতে একটু সময় লাগে। ইনশাআল্লাহ হতাশা কাটবে।
তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির ঘটনা এর আগে কখনো বাংলাদেশে ঘটে নাই, এটা অবিশ্বাস্য। সেই জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা হতভম্ব। আর এই হতভম্ব অবস্থা কাটানোর প্রক্রিয়া কিন্তু আমাদের চলছে। আমাদের সাংগঠনিক যে গ্যাপ আছে তা পূরণ করার প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র হত্যা করেছে সেই গণতন্ত্র বিএনপি পুনরুদ্ধার করবে।
তিনি সবার কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট কী? সবকিছু অস্বাভাবিক। ৩০ তারিখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৯ তারিখ রাতে জনগণের ভোট ডাকাতি দেখেছেন। এটা কি বাংলাদেশের অতীতে কখনো ঘটেছিল? এটাও একটা অস্বাভাবিক ঘটনা। তারপর বাংলাদেশে আরেকটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটল, শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। দলের সব সিনিয়র নেতাকে বাদ দিয়ে, জুনিয়রদের নিয়ে একটা মন্ত্রিসভা করলেন। তখন সবাই বলল এটা তো স্বাভাবিক ঘটনা না।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আরেকটি অস্বাভাবিক ঘটনা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে, যা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। দেশের সব আন্দোলন সব সংগ্রামের সূতিকাগার এই ডাকসু। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, এরশাদবিরোধী স্বৈরাচারী আন্দোলনÑ যেই ডাকসুতে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা অকল্পনীয়। এটা কী? এটা স্বাভাবিক না, অস্বাভাবিক। খুব দ্রুতই বাংলাদেশে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তাই আমি মনে করি, অস্বাভাবিক কিছু দিয়ে যা শুরু, তার পরবর্তীকালে সব কিছুই অস্বাভাবিক ঘটতে থাকবে। আর অস্বাভাবিক বিষয় বেশি দিন টিকতে পারবে না, পারে না।
এ সময় তিনি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে স্মরণ করে বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৪০৬ দিন হলো কারাগারে। যদি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য তার যত ধরনের অভিজ্ঞতা, তার যত ধরনের সাহসিকতা এবং আন্তরিকতা তা দিয়ে তিনি আন্দোলন করতেন, মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক এমপি মেজর (অব:) আক্তারুজ্জামান, বিশিষ্ট ছড়াকার আবু সালেহ, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মো: আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে আগামী দিনে আমরা যে বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছি সেই বিজয় দিবসের দামামা একটু একটু করে বাজতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, এ দেশের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা। ২৯ ডিসেম্বর হোক আর ৩০ ডিসেম্বর- একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। এ দেশের সব অর্জন ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউকে নির্বাচিত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করে এটা অকল্পনীয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়সে কোনো দিন হয়নি। ২০১৯ সালে তা হয়েছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কলঙ্ক।

 


আরো সংবাদ



premium cement