২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিদেশী ঋণে ৯ মহাসড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই ঢিমে তালে

তিন বছরে অগ্রগতি মাত্র ২৩.১৬ শতাংশ ; ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে
-

বিদেশী অর্থায়নে গৃহীত প্রাক-প্রকল্পও গতি পাচ্ছে না। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণে দেশের ৯টি মহাসড়কের ৬৮১ কিলোমিটার সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিস্তারিত নকশা ও টেন্ডারিং সাপোর্ট ডকুমেন্ট প্রস্তুতকরণ প্রকল্পটি চলছে ঢিমে তালে। চার বছরের প্রকল্পের অগ্রগতি তিন বছরে মাত্র ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। এখন নতুন করে ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর সাব রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি-২ প্রকল্পটি ২০১৫ সালে পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন দেন। চার বছরের এ প্রকল্পটি এডিবির ঋণে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পটির বেশির ভাগ অর্থই যাবে পরামর্শক খাতে। গত জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার এ বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। উদ্দেশ্য হলো, দেশের উপ-আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়কের উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিজাইন করা। এডিবির সহায়তায় মূল প্রকল্পটি নেয়া হয় ২০১০ সালের জুলাই মাসে। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১৩টি সড়কের এক হাজার ৭৫২ কিলোমিটার মহাসড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই, ডিটেইল্ড ডিজাইন ও টেন্ডারিং সাপোর্ট ডকুমেন্ট প্রস্তাব করা হয় ২০১৫ সালের জুনে। এর ধারাবাহিকতায় গুরুত্বপূর্ণ আটটি মহাসড়কের ৬০০ কিলোমিটার সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিটেইল্ড ডিজাইন সম্পন্ন করার জন্য এডিবির ঋণে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্ব গ্রহণ করা হয়।
প্রকল্পের কাজ হলোÑ সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিস্তারিত নকশা ও টেন্ডারিং সাপোর্ট ডকুমেন্ট প্রস্তুতকরণ। আর মহাসড়ক ৯টি হলোÑ ভাঙ্গা-ভাটিয়াপাড়া-কালনা-লোহাগড়া-নড়াইল-যশোর-বেনাপলের ১৩৫ কিলোমিটার, রংপুর-বাংলাবান্ধা ১৭২ কিলোমিটার, বনপাড়া-ঈশ্বরদী-পাকশী-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ ১০৫ কিলোমিটার, সিলেট-চরখাই-শেওলা-সুতারকান্দি ৪৬ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম বন্দর এক্সেস রোড ১৪ কিলোমিটার, নবীনগর-পাটুরিয়া ৫৮ কিলোমিটার, পাগলা পীর (রংপুর)-ডালিয়া-বড়খাতা ৬০ কিলোমিটার, ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-তারাকান্দি-ফুলপুর-নকলা-নালিতাবাড়ি-নকুগাঁও ৭২ কিলোমিটার এবং রংপুর-মহীপুর-কাকিনা ১৯ কিলোমিটার সড়ক।
সওজ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২০ মে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-তারাকান্দি-ফুলপুর-নকলা-নালিতাবাড়ি-নকুগাঁও ৭২ কিলোমিটার এবং রংপুর-মহীপুর-কাকিনা ১৯ কিলোমিটার সড়ক যুক্ত করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে এখন ব্যয় বেড়ে ৬১ কোটি ৬৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা হয়েছে, যার মধ্যে এডিবির ঋণ এখন ৪২ কোটি ৭২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আর নতুন করে কাজ যুক্ত হওয়ায় মেয়াদ আরো এক বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন আইটেম হিসেবে দু’জন পরামর্শক যুক্ত করা হয়েছে। এতে ব্যয় ১০ কোটি টাকার বেশি বাড়বে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ সূত্র বলছে, এ প্রকল্পে প্রথমে পরামর্শকদের জন্য ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। এখন সংশোধনীতে বাড়তি ১০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লাগবে পরামর্শকদের জন্য। তারা বলছেন, কারিগরি প্রকল্পের বেশির ভাগই যায় পরামর্শকদের পেছনে। আর দাতাদের কাছ থেকে ঋণ নিলে একটা শর্ত থাকে তাদের কাছ থেকে পরামর্শক সেবা নিতে হবে। ফলে অনেক সময় বাধ্য হয়ে পরামর্শক নিতে হয়। আর এসব পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রেও ঋণদানকারীর সুপারিশও অনেক সময় শর্তে যুক্ত করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement