২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রহস্যের কিনারা ২৫ বছর পর

-

বাথটাবে পড়েছিল সোফি সের্গির ক্ষতবিক্ষত দেহটা। গায়ে জামা নেই, প্যান্ট খোলা, কপালে কোপানোর ক্ষত, আর মাথার পেছনে গুলি।
১৯৯৩ সালের এপ্রিলে আলাস্কার ছোট্ট শহর পিটকাস পয়েন্টের এক মেসবাড়িতে নিহতের দেহটা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ময়নাতদন্তে জানা যায়, যৌন নির্যাতনের পরে খুন করা হয়েছে ২০ বছরের মেয়েটিকে। ঘটনাস্থল থেকে অপরাধীর ডিএনএর নমুনা মিললেও তখন আলাস্কায় ডিএনএ ম্যাচিংয়ের আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। ফলে অধরাই থেকে যায় অপরাধী। আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন সোফির বাবা-মা। তবে হাল ছাড়েনি পুলিশ। ইন্টারনেটের জমানায় তন্নতন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে সম্প্রতি এক মহিলার ডিএনএর সাথে মিলে যায় অপরাধীর ডিএনএর নকশা। আর তাতেই রহস্যের উদঘাটন। সেই সূত্র ধরে খোঁজ মেলে ওই মহিলার আত্মীয়, ৪৪ বছরের স্টিভেন ডাউনের। পেশায় নার্স স্টিভেন অবার্নে মেইনের বাসিন্দা। অপরাধী স্টিভেন আপাতত স্থানীয় পুলিশের হেফাজতে। আদালতে শুনানি শেষ হলেই তাকে আলাস্কায় প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভাবা হবে বলে জানিয়েছে মেইনের পুলিশ।
সে দিনের ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছিলেন সোফির বন্ধু শার্লি ওয়াসুলি। আলাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সোফি ফেয়ারব্যাঙ্কসে থাকতেন। সে বছর এপ্রিলে দাঁতের ডাক্তার দেখাতে পিটকাস পয়েন্টে শার্লির কাছে গিয়েছিলেন সোফি। সোফির জন্য তিনতলার একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তোলা একটি ছবিতে সোফিকে সে দিন ঝলমলে দেখাচ্ছিল। শার্লি বলেন, ‘রাত পর্যন্ত হইহই করছিলাম। দেড়টা নাগাদ সোফি বাইরে সিগারেট খেতে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ পরেও ফিরছে না দেখে ওর ঘরের দরজায় একটা চিরকুট লিখে আমি শুতে চলে যাই। পর দিন সকালে দেখি চিরকুটটি একইভাবে ঝুলছে। জানতে পারলাম, সোফি ডাক্তারের কাছেও যায়নি।’ সে দিনই তিন তলার শৌচাগার থেকে সোফির দেহ মেলে। ওই বাড়ির এক তলায় থাকত স্টিভেন। সব বাসিন্দার সাথে সেদিন স্টিভেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। তবে এ বিষয় কিছুই জানে না বলে পুলিশের চোখে ধুলো দেয় সে। পুলিশ জানায়, আজকাল অনেকেই দূরের আত্মীয়ের খবর পেতে ইন্টারনেটে ডিএনএ নকশা নথিভুক্ত করেন। এমনই একটি ডেটাবেস থেকে এক মহিলার খোঁজ মেলে। অপরাধীর সাথে মিলে যায় তার ডিএনএ। সেই সূত্রেই খোঁজ মিলল স্টিভেনের। উন্মোচিত হলো ২৫ বছর পুরনো হত্যারহস্যের। ইন্টারনেট।

 


আরো সংবাদ



premium cement