২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ময়মনসিংহে থানায় হামলা : পাঁচ পুলিশসহ আহত ২০

অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলম -

ময়মনসিংহ শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলমকে ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাও করে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় পাঁচ পুলিশসহ আহত হয় কমপক্ষে ২০ জন। এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশসহ ১৫ শিক্ষার্থীকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ওই কলেজ ও হাসপাতালে দ্রুত ছুটে যান। পরে প্রশাসনের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো: নায়েরুজ্জামানকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আল আমিন ও ওই কলেজের শিক্ষক এ কে এম দেলোয়ার হোসেনকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে শহরের জিলা স্কুল মোড়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের সহকারী অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলমের গাড়ির সাথে একটি অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এ সময় রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ আসলাম হোসেন ও চালকদের সাথে বাগি¦তণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রাইভেট কারে থাকা ওই শিক্ষক গাড়ি থেকে নেমে এসে ট্রাফিক পুলিশের কাছে ঘটনাটি জানতে চাইলে কথাকাটাকাটি ও একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ওই ট্রাফিক বিষয়টি টহল পুলিশকে জানালে তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পেঁৗঁছে ওই শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করে। পরে তাকে টেনে-হিঁচরে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এ খবর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কোতোয়ালি মডেল থানা ও ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত ও অপ্রীতিকর। তবে শিক্ষককে আটক করার গুজবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে এবং পরে থানায় হামলা ও ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পাঁচ পুলিশসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তিনি বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ সদস্যদের অন্যায় থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বিষয়টি অনভিপ্রেত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাৎক্ষণিক কলেজ ক্যম্পাস ও হাসপাতালে ছুটে যাই। শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনার জন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল