সরকারের বিপজ্জনক পতন হবে : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
বিএনপির মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, সময় থাকতে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। নইলে সরকারের বিপজ্জনক পতন হবে। শেখ হাসিনা সাড়ম্বরে এখন ভালো ভালো উদ্যোগের কথা বলে মানুষের মন থেকে তার অপকীর্তি মুছে ফেলতে পারবেন না। তাই এই সরকারকে পদত্যাগ করে দেশে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। কারণ, জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে ঐক্যবদ্ধ।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রতিদিন দেখছি, সেতুমন্ত্রী সারা দেশে ছোটাছুটি করছেন। তার দৌড়াদৌড়ি কেবল ফটোসেশনেই সীমাবদ্ধ। প্রতিদিন সড়কে লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়- সড়কে মৃত্যুর মিছিল। স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে সড়কে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হচ্ছে প্রায় ২০ জন।
গতকাল সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ড. শাহিদা রফিক, এ বি এম মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মো: মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ও ভুয়া ভোটের সরকারের মন্ত্রীরা প্রতিনিয়ত বলছেনÑ ‘এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি। বিএনপি নেতারা পরাজিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।’ আসলে আওয়ামী লীগের সত্তা বরাবরই মিথ্যা দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালটবাক্স ভর্তি করে রাখা, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয় কারাগারে নয়তো এলাকাছাড়া করা, এসবই হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ভুয়া ভোটে এমপি-মন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে এখন বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচনকে জায়েজ করতে আওয়ামী নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
রিজভী বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনি কাজে ব্যবহার করে এবং দেশের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তিনি গণতন্ত্রের সমাধিসৌধের ওপর কোনো সুশাসন আপনারা প্রতিষ্ঠা করতে চান?
রিজভী, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সোমবার একটি মিথ্যা মামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
জনপ্রিয় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং মহিলা দল চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার পথে ফেনীর লালপুল এলাকা থেকে সোমবার র্যাব-৭ এর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছে। এখনো পর্যন্ত তাকে কোথায় রাখা হয়েছে কিংবা তাকে আটকের কথা স্বীকার করা হচ্ছে না। আমি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটাকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি।