২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্ষমতাসীনেরা বেপরোয়া : রিজভী

বিএনপির ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখছেন রিজভী আহমেদ :নয়া দিগন্ত -

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ধানের শীষে ভোট দেয়ার অপরাধে সূবর্ণ চরের নির্যাতিতা পারুল বেগমের আহজারি ও গোঙানি থামতে না থামতেই নোয়াখালীর কবিরহাটে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে মা ও ছেলেমেয়েদের জিম্মি করে তিন সন্তানের মাকে স্থানীয় যুবলীগের কর্মীরা গণধর্ষণ করেছে। ধর্ষিতার স্বামী আবুল হোসেন ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, যিনি মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী। এই গণধর্ষণ শুধু হৃদয়বিদারকই নয়, মনুষ্যত্বহীনতার এক ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত। ক্ষমতাসীনেরা পৈশাচিক উল্লাসে বেপরোয়া। ভুয়া ভোটের মিথ্যা জয়ে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে। কুৎসিত অপকর্ম করতে তারা এখন বেপরোয়া।
গতকাল রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নোয়াখালীর কবিরহাটের স্থানীয় যুবদল নেতার স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে এ অভিযোগ করেন রিজভী। নির্যাতিতার আশু সুস্থতা কামনা করে দলের নেতাকর্মীদের এই নির্যাতিত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান রিজভী। তিনি বলেন, এরা (ক্ষমতাসীন দল) বিরোধী দলের সহায়-সম্পত্তি দখল ও লুটের পাশাপাশি নারীদের ওপর হানাদার বাহিনীর কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে, এরা শকুনের দৃষ্টি নিয়ে সারা দেশে শিকার করে বেড়াচ্ছে। এদের হাত থেকে মা-বোন-শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছে না। এদের নিষ্ঠুরতায় বাংলাদেশ এখন আদিম অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছে। আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে বলেই আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেপরোয়াভাব এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভোট ডাকাতির জয়ে ক্ষমতাসীনেরা অহঙ্কার ও উন্মত্ততায় বিচারবুদ্ধি হারিয়ে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীপুরের বসিকপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে স্থানীয় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুন নবীকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে গুরুতর আহত করার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে জনগণের পকেট কাটার টাকায় বর্ণাঢ্য র্যালি ছিল রাষ্ট্রের মালিক জনগণের সাথে আরেকটি অবজ্ঞাভরা মশকরা। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানকে গণতন্ত্র হত্যার উৎসবের কেন্দ্রে পরিণত করা হলো। জনগণের কোটি কোটি টাকা শ্রাদ্ধ করে এই উৎসব করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, জনগণ নাকি এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। তার এমন বক্তব্যে জনগণ হাসবে না কাঁদবে তা তারা ভেবে পাচ্ছে না। যখন মহাভোট ডাকাতিতে ভোটাধিকার হারা জনগণ ব্যথিত, বিমর্ষ ও বাক্যহারা তখন তাদের নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য নিষ্ঠুর রসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। জনগণ মনে করে, ভুয়া ভোটের সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ভোটের আগের দিন রাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে রাতভর ব্যালট বাক্স নৌকা মার্কায় সিল দেয়া ব্যালট পেপার ভরিয়ে দিয়েছে। ভোট জালিয়াতি করতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ক্ষমতাসীনদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং গোপনে উৎকোচ দেয়া হলেও প্রকাশ্যে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর।
রিজভী বলেন, সরকার বৈধতা পেতে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেনদরবার শুরু করেছে। বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষ ও তাদের নির্বাচিত সরকারের কাছে এ রকম নির্বাচনের কানাকড়ি মূল্য নেই। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সরকার কখনোই টিকতে পারে না। ভয় দেখিয়েও বেশি দিন টেকা যায় না। ম্যাকিয়াভেলির নীতি অবলম্বন করে ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement