২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আশুলিয়ায় ১৭ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখে শ্রমিক বিক্ষোভ, ভাঙচুর

আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ :নয়া দিগন্ত -

নতুন ঘোষিত মজুরি কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল থেকে দুপুর অবধি বিশমাইল-জিরাবো শাখা সড়কে এ বিক্ষোভ করেন ১৭টি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।
গতকাল সকাল থেকে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার ১০টি কারখানায় শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেননি। এ নিয়ে শ্রমিক ও কারখানার মালিকপক্ষের মাঝে নতুন মজুরি কাঠামোর বৈষম্যের ও বর্ধিত বেতনের দাবি সমাধান না হওয়ায় এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ২০ জন শ্রমিক আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, কাঠগড়া এলাকায় অবস্থিত এয়ার জিন্স নামে একটি তৈরী পোশাক কারখানায় পূর্বঘোষিত বেতন পরিশোধের নির্ধারিত দিনে বৈষম্যের অভিযোগ এনে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে কারখানাটির শ্রমিকেরা রাস্তায় বেরিয়ে এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় আশপাশের ১৭টি কারখানার শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বিভিন্ন কারখানায় ভাঙচুর চালান।
এদিকে বিশৃঙ্খলা এড়াতে কাঠগড়া ও জিরাবো এলাকার প্রায় ১০টি কারখানায় এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান জানান, নতুন বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের গুজব রটিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৮ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
তিনি আরো জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের বৈঠক হয়েছে। নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে কেউ যেন বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে জন্য শ্রমিক নেতারা বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করবেন। জানুয়ারি মাসের বেতন দেয়ার পরেই শ্রমিকেরা নতুন বেতন কাঠামোর সুবিধা পাবে বলেও জানানো হয়।
এদিকে গতকালও আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার নিট এশিয়া, কাঠগড়া এলাকার এআর জিন্স লিমিটেড, ধনাইদ (ইউসুফ মার্কেট) এলাকার জেনারেশন নেক্সট, এফডিএফ (বিডি) লিমিটেডসহ ১০টি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেননি। ফলে ওই কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ রেখে অঘোষিত ছুটি চলছে।
এ সম্পর্কে শ্রমিকেরা জানান, তাদের যৌক্তিক দাবি না মানলে তারা কাজে যোগদান করবেন না। কেউ কেউ বলেন, হেলপারের বেতন বেড়েছে দুই হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা। সেখানে অপারেটরের বেতন বেড়েছে মাত্র ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা। এ বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না। অন্যদিকে তাদের বর্ধিত বেতন বৃদ্ধির টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি এ মাস থেকে থাকলেও কারখানা মালিকপক্ষ তা দিতে গড়িমসি করছে। তারা জানুয়ারি থেকে বর্ধিত বেতন প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। তাও আবার মৌখিক। তাদের এ দাবি তখন মালিকপক্ষ রাখবে কি না সে ব্যাপারে শ্রমিকদের মাঝে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তারা অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে কারখানার উৎপাদনমুখী পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
শিল্প পুলিশ-১ সূত্র জানায়, গতকালও সংশ্লিষ্ট কারখানা এলাকাসহ শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক নজর ছিল। যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ও পরিস্থিতি এড়াতে তারা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রেখেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement