২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংবাদ সম্মেলনে বাবার আকুতি

সম্পত্তির লোভে সন্তানেরা আমাকে পাগল সাজানোর চেষ্টা করছে

আবুল কালাম বাবুল -

আমি পাগল নই, তবুও সম্পত্তির লোভে সন্তানেরা আমাকে পাগল সাজানোর চেষ্টা করছে। শুধু তা-ই নয়, এখন তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। অথচ এই সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করতে নিদারুণ কষ্ট করেছি। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছি। সেই আদরের সন্তানদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। একটি কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় পড়ে শুধু সম্পত্তির লোভে জন্মদাতা বাবাকে পিটিয়ে আহত করতে দ্বিধাবোধ করেনি তারা। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নারত অবস্থায় এসব কথা বলছিলেন আবুল কালাম বাবুল (৬৫) নামে এক হতভাগ্য বাবা। তিনি বলেন, কখনো ভাবিনি নিজের সন্তানদের বিরুদ্ধে এভাবে সংবাদ সম্মেলন করতে হবে। কিন্তু তাদের হাত থেকে বাঁচার তাগিদে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা কামনা করছি।
বাবুল বলেন, তিনি পুরান ঢাকার একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। অনেক কষ্ট করে বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসায় ও সম্পত্তি রক্ষা করেছেন। ভাইবোনদের মধ্যে বাবার সম্পত্তি ভাগ হওয়ার পর নিজের অংশ নিয়ে বেশ চলে যাচ্ছিল তার। বড় ছেলে আশিক কালাম ওরফে শিহাব একজন কেমিস্ট। মেয়ে নওরনি সাবা কালাম লন্ডনে লেখাপড়া করেছে। ছোটছেলে দেশের একটি নামকরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ছে। অনেক কষ্ট করে প্রতিটি সন্তানকে লালন-পালন করেছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের মা সোফিয়া কালাম ও মামাদের প্ররোচনায় পড়ে নিজের বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তারা। তাদের দাবি বাবার পুরো সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দিতে হবে।
বাবুল বলেন, আমার কষ্টে গড়ে তোলা অর্থ ও পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সন্তানেরা। নানা ধরনের অত্যাচার নেমে আসে তার ওপর। সর্বশেষ গত ১৮ অক্টোবর রাতে তার ১৩ নম্বর পরীবাগের বাসায় তার বড় ছেলে আশিক, স্ত্রী সোফিয়া ও দুই শ্যালক সম্পত্তি লিখে দিতে চাপ সৃষ্টি করে তাকে। তিনি দিতে না চাইলে ছেলে আশিক তার মা ও মামাদের সহযোগিতায় তাকে বেধড়ক কিলঘুষি মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে সবার মারধরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর তার হাত-পা বেঁধে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। যখন তার জ্ঞান ফিরে তখন তিনি নিজেকে তেজগাঁওয়ের একটি প্রাইভেট মানসিক হসপিটালের সামনে আবিষ্কার করেন। ওই সময় আশিক ও তার সহযোগীরা তাকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলে। স্বাক্ষর না করায় ফের তাকে বেধড়ক মারধর করে কয়েকটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ওই হসপিটালে ভর্তি করে রেখে আসে।
বাবুল বলেন, ওই হসপিটালে ৩৩ দিন ধরে বন্দী ছিলেন তিনি। ওই সময়ে তার শরীরে সার্বক্ষণিক নানা ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে বাবুলের ভাইবোন ও ব্যবসায়িক ম্যানেজার তার খোঁজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা অবস্থান জানতে পেরে বাবুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খালেদ মাসুদ মজুমদারের কাছে যান। তার সহযোগিতায় থানায় জিডি করে আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত বাবুলকে ওই হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। ২২ নভেম্বর তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদালতে পেশ করে। পরে ব্যবসায়ী বাবুল নিজেকে সুস্থ প্রমাণ করে নিজ জিম্মায় বেরিয়ে আসেন। বাবুল বলেন, বর্তমানে তিনি মুক্ত হলেও সন্তান ও তাদের মা এবং মামাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কারণ তারা হুমকি দিয়ে বলছে, ‘এবার ধরতে পারলে আর বাঁচিয়ে রাখব না, সোজা ওপরে পাঠিয়ে দেবো।’ এ ব্যাপারে জানতে বাবুলের ছেলে আশিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলার শিরোপা বাঘা শরীফের হাতে ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি করা জটিল হলেও সম্ভব : রাষ্ট্রদূত ফার্নান্দো শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি তামাকের ব্যবহার রোধে কর বাড়ানোর আহ্বান ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণসভা টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ, আদেশ ২৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্য আফতাব হোসেনের ইন্তেকাল শনিবার থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রস্তুত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হলেন সাব্বির আহমেদ ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধানবিরোধী নয় গাজীপুরে জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ করার নিন্দা

সকল