১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৫০ টাকার গরুর গোশত ৫০০ টাকা তিন দশকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি- ৪

-

১৯৯০ সাল। এক কেজি গরুর গোশতের দাম ৫০ টাকা। অনেক বছর ধরে এ রকমই ছিল গরুর গোশতের দাম এবং সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে মেহমানদারিতে বা কোনো উৎসবে এ গোশত কেনার কথা ভাবতে পারতেন। কিন্তু প্রায় সব মানুষের অতি প্রিয় এ গোশতের দাম একপর্যায়ে এমনভাবে বাড়তে থাকে যে, অনেকে নিজেরা কিনে খাওয়া তো দূরে থাক, মেহমান এলেও গরুর গোশত কেনার কথা ভাবতে পারেন না। অতিরিক্ত দামের কারণে বরং এখনো অনেকে গরুর গোশতের পরিবর্তে বিকল্প কিছুর কথা চিন্তা করেন।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তথা ক্যাবের তথ্য অনুসারে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত গরুর গোশত পাওয়া যেত ৬০ টাকা কেজিতে। ২০০১ সালেও মাত্র ৮০ টাকায় পাওয়া যেত এক কেজি গরুর গোশত। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এর দাম থাকে ১০৪ টাকা। কিন্তু ২০০৬ সালে এক লাফে দাম বেড়ে হলো ১৪০ টাকা। পরে ২০০৭ সালে ১৭৬ টাকা, ২০০৮ সালে ১৯২ টাকা, ২০০৯ সালে ২১৮ এবং ২০১০ সালে ২৪৭ টাকায় পৌঁছে গরুর গোশতের কেজি।
২০০৬ সালের পর থেকেই গরিব ও সাধারণ আয়ের মানুষ মেহমানদারি বা কোনো অনুষ্ঠানের কারণে নিতান্ত বাধ্য না হলে গরুর গোশত কেনা ছাড়তে বাধ্য হন। এ সময় অনেকেই ভুলে যান সর্বশেষ কবে তারা গরুর গোশত খেয়েছেন। অনেকে গরুর গোশত খেতে পারতেন শুধু কোরবানির সময়।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর গরুর গোশত ব্যবসায়ীদের প্রতি সাধারণ মানুষের সব ক্ষোভ আর তীব্র হতাশা উপেক্ষা করে ২০১৩ সালে ৩০০ টাকা এবং পরের বছর ২০১৪ সালে ৪০০ টাকা হয়ে যায় গরুর গোশতের কেজি।
রকেট গতিতে এভাবে যখন গরুর গোশতের দাম বাড়তে থাকে তখন প্রায় প্রতি রমজানের সময় দেখা গেছে গোশত ব্যবসায়ীদের কর্তৃক আগেই বাড়িয়ে রাখা দাম একটু আধটু কমিয়ে কেজিতে মূল্য নির্ধারণ করে দিত সিটি করপোরেশন। এভাবেই বৈধ করা হতো ব্যবসায়ীদের বর্ধিত দাম। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেছেন তখন সাধারণ মানুষ। ২০১৪ সালে গরুর গোশতের দাম ৪০০ টাকা হলেও এ দাম বেশি দিন স্থির থাকেনি। রাজধানীতে অনেক দিন ধরে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।
তবে গরুর গোশতের দাম নিয়ে এখনো প্রায়ই প্রতিদিন বিভিন্ন বাজারে তর্ক-বিতর্ক হয় ক্রেতাদের সাথে ব্যবসায়ীদের। রাজধানীর বনশ্রী মেরাদিয়া বাজারে এক গোশত ব্যবসায়ী জেদের সাথে বলেন, ‘দাম যতই বাড়–ক গরুর গোশত খাইবই মানুষ। কই দাম এত বাড়ল কিন্তু বিক্রি তো কমে নাই। প্রতি শুক্রবার তো রীতিমতো ভিড় লেগে যায় গরুর গোশতের জন্য।’
তবে এর উল্টো চিত্র দেখা যায় আবার সিপাহীবাগ বাজারে। এখানে যারা কেনাকাটা করেন তাদের অনেকে অপেক্ষাকৃত কম আয়ের মানুষ। এ বাজারে বেশ কয়েকটি গরুর গোশতের দোকান রয়েছে। প্রায়ই দেখা যায় সকালে জবাই করা গরুর গোশতের পিস রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত ঝুলছে লোহার সাথে। এমনকি অবিক্রীতও থেকে যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অনেকের উপার্জন বেড়েছে এবং অনেকের হাতে অঢেল অর্থ এসেছে সত্য। যে গতিতে এক শ্রেণীর মানুষ বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন সে হারে অর্থ আসেনি সবার হাতে। এর বাস্তবতা দেখা যায় বিত্তবান ও বিত্তহীন এলাকার কিছু বাজার পরিদর্শন করলে। বিত্তবানদের এলাকায় অবস্থিত এসব বাজারে গেলে দেখা যায় একশ্রেণীর মানুষের কাছে অর্থ কোনো সমস্যা নয়। দাম যতই বাড়–ক তারা তাদের প্রিয় জিনিস অনায়াসে কিনতে পারেন।
গরুর গোশতের মতো খাসির গোশতের দামও অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে খুব অল্প সময়ে। ১৯৯০ সালে এক কেজি খাসির গোশত বিক্রি হতো মাত্র ৮৫ টাকায়। ২০০০ সালেও এর দাম ছিল ১৪০ টাকা। ২০০৭ সালে ২৬০, ২০১০ সালে ৩৭০, ২০১৪ সালে ৫০০, ২০১৫ সালে ৫৮৫, ২০১৬ সালে ৬২০ এবং তার পর ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায় এ গোশতের কেজি। ২০০০ সালেও ব্রয়লার বা ফার্মের মুরগির কেজি ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এর দাম ৮০ টাকা ছিল। কিন্তু এরপর দাম বেড়ে যায় ফার্মের মুরগির। তবে দেশে ব্যাপকভাবে পোলট্রি শিল্পের অগ্রগতির কারণে ফার্মের মুরগি এবং ডিমের দাম পরে অব্যাহতভাবে বাড়তে পারেনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
পিছিয়েছে ডি মারিয়ার বাংলাদেশে আসার সময় ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

সকল