২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া গ্রেফতার

-

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় ইস্কাটনের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রফিকুল ইসলাম মিয়ার পিএস মোকসেদুর রহমান আবীর জানিয়েছেন, স্যার সারা দিন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ছিলেন। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার কিছু সময় পরেই ডিবি পুলিশের একদল সদস্য তাকে গ্রেফতার করে। তাকে মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় গতকাল রফিকুল ইসলাম মিয়াকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগ : তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো কার্যালয়ে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়াকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। সে সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাভোগের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক ড. শেখ গোলাম মাহাবুব এই দণ্ডাদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া আদালতে ছিলেন না। সে জন্য তার আইনজীবী জুনায়েদ উল্লাহ সোয়েব আসামি আসতে না পারায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন নাকচ করে এ দণ্ডাদেশ দেন।
উল্লেখ্য ২০০১ সালের ৭ এপ্রিল সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সমস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে তার যাবতীয় সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করার জন্য ৪৫ দিনের সময় দিয়ে একটি নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন ব্যুরো। ২০০১ সালের ১০ জুন তিনি দুদকের নোটিশটি গ্রহণ করেন। নোটিশ গ্রহণ করার পরও তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ২০০১ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত কোনো সম্পদের হিসাব দাখিল করেনি। হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় ২০০৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন ব্যুরো অফিসার লিয়াকত হোসেন বাদি হয়ে রাজধানীর উত্তরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রফিকুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শেষ করে দুর্নীতি দমন আইনের চার্জশিট দাখিল করে। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। বিভিন্ন সময় ছয়জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
সরকারের নির্দেশেই সাজা : রিজভী
এ দিকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সাজা ‘সরকারের নির্দেশেই’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গত রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিযর যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, একটা বানোয়াট মামলা যার সাথে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি কোনো মামলা নয়। এটি একটি নোটিশ দেয়া হয়েছিল তার সম্পত্তির বিবরণী জমা দেয়ার জন্য তার বাসার ঠিকানায় চিঠি দেয়া হয়েছিল, সেই বাসায় তিনি থাকেন না। সরকারের নির্দেশ মতো এই সাজা দেয়া হয়েছে। একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে সাজা দেয়া হয়েছে সরকারের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য। এর বাইরে অন্য কিছু নয়। সরকারের চক্রান্তে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের সাজা দেয়ায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই সাজা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও জানান রিজভী।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া একজন সিনিয়র আইনজীবীও। তিনি গুরুতর অসুস্থ। নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত। এমতাবস্থায় তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রাখা সরকারের কুৎসিত মনেরই বহিঃপ্রকাশ।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ব্যারিস্টার রফিকের সহধর্মিণী অধ্যাপক সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement