২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আ’লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ৫ জন আসনটি জিততে চায় বিএনপি

দিনাজপুর-৪ আসন
-

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৫ জন ও বিএনপির দু’জন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী ও জাগপার নেতারাও মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এ আসনটি এবার বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট পুনরুদ্ধার করতে পারবে বলে বিএনপি ও জোটের নেতাকর্মীরা আশা করছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক হুইপ মিজানুর রহমান মানু, ডা: এম আমজাদ হোসেন, তারিকুল ইসলাম তারিক ও অ্যাভোকেট সাইফুল ইসলাম। বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন সাবেক এমপি আলহাজ আখতারুজ্জামান মিয়া ও মো: হাফিজুর রহমান।
জানা গেছে, মনোনয়ন পেতে সবাই নিজ নিজ দলের কেন্দ্রে লবিং করছেন। প্রধান দুই দল থেকে কোন দু’জন মনোনয়ন পেতে পারেন তা নিয়ে উভয় দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে জল্পনাকল্পনা। তাদের মতে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে বিএনপির অর্থাৎ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, জামায়াতে ইসলামীর বেশ দাপট রয়েছে এ আসনে। এ কারণে এ আসনটি বিএনপি পুনরুদ্ধার করতে পারে।
এ আসনটিতে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিজানুর রহমান মানু। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতের আফতাব উদ্দীন মোল্লা। ১৯৯৬ সালে মিজানুর রহমান মানু পুনর্নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন (বিএনপির আব্দুল হালিম অ্যাডভোকেট। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান মাকুকে হারিয়ে বিজয়ী হন বিএনপির আখতারুজ্জামান মিয়া। ২০০৮ সালে বিএনপির আখতারুজ্জামান মিয়াকে হারিয়ে এমপি হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হোসেন মাহমুদ আলী। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।
উল্লেখ্য, চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশির ভাগ এলাকাই একসময় জামায়াত-বিএনপির দুর্গ ছিল। কিন্তু গত প্রায় ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা ও ধরপাকড়ের কারণে দল দু’টির নেতাকর্মীরা বলতে গেলে কোনো কর্মসূচিই পালন করতে পারেনি। অন্য দিকে এই সময়ে আওয়ামী লীগ তার অবস্থান ভালো করেছে। তারপরও নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে সাধারণ ভোটারদের ধারণা।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হোসেন মাহমুদ আলীর মনোনয়ন পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। তার পক্ষে নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন। এলাকায় তিনি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মনে করছেন, তিনি মনোনয়ন পেলে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।
অন্য দিকে সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানু ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। ফলে এবার তার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে মিজানুর রহমান মানু বলেন, বর্তমান এমপি তো এলাকায় যান না। তিনি কোনো নেতাকর্মীকেও তেমন চেনেন না। চিরিরবন্দর-খানসামার মানুষের হৃদয়ে আমার নাম আছে। আগামী নির্বাচনে নৌকার মাঝি বদল না করলে বিজয় সম্ভব নয়।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী দিনাজপুর জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগ কার্যকরী কমিটির সদস্য আলহাজ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সৎ, তরুণ ও সাহসী রাজপথের সৈনিককে মনোনয়ন দেবেন এ প্রত্যাশা নিয়ে আমি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী চিরিরবন্দরের আমেনা বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: এম আমজাদ হোসেনও মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে তদবির ও এলাকায় গণসংযোগ করছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শ বুকে লালন করি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হয়েছিলাম। এত দিন এলাকার মানুষ প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুরোধ করছিল। তাদের প্রত্যাশা পূরণে নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইব।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য মো: আখতারুজ্জামান মিয়া বলেন, দল বিবেচনা করলে প্রার্থী হবো। আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-নিপীড়ন সহ্য করে সাধারণ নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে আছি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকি। বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী শিল্পপতি মো: হাফিজুর রহমান ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। আগামী নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।
এ দিকে জামায়াতে ইসলামী প্রকাশ্যে আসতে না পারলেও দলটির কয়েকজন নেতা জানান, জোটের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমেনি বরং বেড়েছে। ২০১৪ সালের আগে-পরে হামলা-মামলার ধকল তাদের ওপর দিয়ে গেছে। চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান জামায়াতের সাবেক জেলা আমির আফতাব উদ্দিন মোল্লা মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে গোপনে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে থাকলেও আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। জোটগতভাবে সিদ্ধান্ত হলে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। দলটির একটি সূত্র জানায়, প্রতীক বড় নয়, কর্মি-সমর্থকদের ধরে রাখতে যেকোনো প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে থাকতে চায় জামায়াত।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাগপার কেন্দ্রীয় নেতা মো: আশরাফ আলী খানও এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। স্কুলশিক্ষক মনোয়ার হোসেন জানান, দিন দিন বিএনপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ আসনে বিএনপি বা তাদের সমর্থিত প্রার্থীই বিজয়ী হবেন।
এ আসনের খানসামা উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৪২০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৩ হাজার ৪০৫ জন। নারী ভোটার ৬২ হাজার ১১৫ জন। চিরিরবন্দর উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ৭৪৫ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৭ হাজার ৬৫৪ জন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু

সকল