২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গাজীপুরে কারখানা কর্মকর্তাসহ দুইজনকে হত্যা

-

গাজীপুরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে মহাসড়কের পাশ থেকে বাংলাদেশ থাই অ্যালুমিনিয়ামের এক কর্মকর্তার মাথা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ দিকে একই দিনে পূর্বশত্রুতার জেরে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে এক চা বিক্রেতাকে কুপিয়ে হত্যা ও তার ভাইকে আহত করেছে প্রতিপক্ষরা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধর ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ১ নম্বর গেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এক ব্যক্তির দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথাটি তার দেহ থেকে কিছুটা দূরে পড়ে ছিল। লাশের পাশে হেলমেট, মোবাইল, ভিজিটিং কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও টাকাসহ কাগজপত্র পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। নিহতের নাম সহিদুল ইসলাম (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা থানার সিডস্টোর বাজারের জামিরদিয়া এলাকার ওয়াহাব আলী মোল্লার ছেলে। নিহত সহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের ইন্টারন্যাল অডিট ডিভিশনের ডেপুটি ম্যানেজার। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা তার মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। স্থানীয়রা আরো জানান, ওই মহাসড়কের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকায় সম্প্রতি ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ দিকে বৃহস্পতিবার মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে চা বিক্রেতা শহিদুল ইসলামকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় তার ছোট ভাই আবদুর রশিদকেও (৩৮) কুপিয়েছে তারা। হতাহতরা গাজীপুর সিটি করপোরেশেনের কাউলতিয়ার জেলারপাড় এলাকার জয়নাল আবেদীন শিকদারের ছেলে।
নিহতের ছেলে সুজন আল মামুন জানান, সরকারি জমি থেকে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে প্রায় এক বছর আগে একই এলাকার আক্তার হোসেন গংদের সাথে শহিদুল ইসলাম ও রশিদদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে শত্রুতা চলতে থাকে। ওই ঘটনায় শহিদুল ইসলাম ও রশিদকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা করা হয়। ওই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রশিদ জোলারপাড় বাজার থেকে বাড়ি যাচ্ছিল। পথে তিনি নাগপাড়া এলাকায় পৌঁছলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ আক্তার হোসেন তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে রশিদকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এই ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ওই বাজারের চা বিক্রেতা শহীদুল ইসলাম ছোট ভাই রশিদকে উদ্ধার করে অটোরিকশায় হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় প্রতিপক্ষরা অটোরিকশার গতিরোধ করে এবং দুই ভাইয়ের চোখে মুখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। একপর্যায়ে শহীদ ও রশিদ নিহত হয়েছে নিশ্চিত করে তাদের ফেলে রেখে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে শহিদুল ইসলাম মারা যান। গুরুতর আহত আ: রশিদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement