২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা নির্ভর করবে সরকার ইসির আচরণের ওপর : বাম গণতান্ত্রিক জোট

-

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ফাঁদে পা না দিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তবে তারা সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা না থাকা নির্ভর করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড ও আচরণের ওপর। এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে তারা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান।
পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো: শাহ আলম। উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন ও রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের জুলহাসকার নাহিন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, মার্কসবাদীর কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
নেতারা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বামপন্থীরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী সংগ্রামে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখবে। কিন্তু তা নির্ভর করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড ও আচরণের ওপর। নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা ও দায়িত্বশীল কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে সব দল ও ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। তারা এমন কোনো ভূমিকা পালন করবে না যাতে আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরে আসতে বাধ্য হই।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া মানে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে মেনে নেয়া নয়। অংশ নিচ্ছি সংগ্রামের পদ্ধতিগত অংশ হিসেবে। এ দিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন না করার কারণ, তখন সেটা ছিল ‘নো’ নির্বাচন। আর এবারের নির্বাচন হচ্ছে ‘ব্যাড’। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে এই জোট। পরিস্থিতি দাবি করলে তারা নির্বাচন বর্জনও করতে পারেন বলে তিনি আভাস দেন। একই সাথে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব, তা দেশবাসী মনে করে না। এখন যে নির্বাচন হবে তা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হবে। তিনি অভিযোগ করেন, মনোনয়নপত্র কেনার সময়ে শোডাউন করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র বিক্রিতে কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। তবে এতে ভ্যাট আদায় করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য এনবিআরকে পরামর্শ দেন তিনি।
অপর দিকে বাম জোটের নেতারা বলেন, দেশের নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের অতীত অভিজ্ঞতা দেশবাসীর আছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে নানা ষড়যন্ত্রকারীরা উৎসাহিত হয়। ক্ষমতার খেলার অংশ হিসেবে শাসকগোষ্ঠী আরো নানা ধরনের কূটকৌশল গ্রহণ করে। এ ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশবাসী সজাগ না থাকলে কী ধরনের পরিস্থিতি হয় তার দুঃখজনক ইতিহাস জনগণের জানা আছে। আসন্ন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ভূমিকা যাতে বিতর্কিত না হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারেরই নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement