২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
একাদশ সংসদ নির্বাচন ২০১৮

উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষায় ক্ষমতা চায় আ’লীগ, পরিবর্তন চায় বিএনপি

লক্ষ্মীপুর-৪ আসন
-

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থীসহ আওয়ামী লীগ-বিএনপির একাধিক প্রার্থী। ইতোমধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন তারা। সম্ভাব্য এই হেভিওয়েটদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির বিষয়টিকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছেন অনেকে।
এই প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, বিএনপির সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং কেন্দ্রীয় তাঁতীদলের সহসভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরী।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বাইরে এই আসনে জেএসডি ও বিকল্প ধারার ভোট ব্যাংক রয়েছে। এ দুটি দল অন্য কোনো দলের সাথে জোটবদ্ধ না হলে এই আসনে চতুর্মুখী লড়াই হবে।
১৯৭৩ সালে আসনটিতে সিরাজুল ইসলামের পর গত নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি আগামী নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চাইবেন। তার সাথে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন ফরিদুন্নাহার লাইলী, যিনি সাবেক সংরক্ষিত মহিলা এমপি ছিলেন। রয়েছেন রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ এবং দলের জেলা সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সফিউল বারী বাবু। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামছুল আলম।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ফরিদুন্নাহার লাইলী বলেছেন, এ সরকারের সময়ে সারা দেশের মতো রামগতিতেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমি সংসদ সদস্য থাকাকালীন অনেক কাজ করেছি।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রামগতি-কমলনগরের আওয়ামী লীগ অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সংগঠিত এবং খুবই শক্তিশালী। দলের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই। তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যেটি জাতীয়ভাবে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা উন্নয়নমূলককার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
রামগতি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দিন নিজাম বলেছেন, গণতন্ত্রের স্থায়ী বুনিয়াদের জন্য অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। রামগতি-কমলনগরের মানুষকে স্বৈরাচারী সরকার তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ভোট ও ভাতের অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে। সুতরাং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের লড়াই এবং মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় এবং সেই ধরনের নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখা দেয় তাহলে আমি দলের মনোনয়ন চাইব।
এ ছাড়াও বিএনপির শরিকদল জামায়াত নেতা ও কমলনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা হুমায়ুন কবিরের নামও উঠেছে বিভিন্ন মহলে। নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন না করতে পারলেও শরিকদল থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী সংগঠনের নেতারা।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় তাঁতীদলের সহসভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরী মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন। তিনি এলাকায় মসজিদ-মাদরাসাসহ সামাজিক কাজে ভূমিকা রাখছেন। আবদুল মতিন চৌধুরী বলেন, আমি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে অর্ধশতাধিক মামলা ও হামলার শিকার হয়ে বাড়িছাড়া হয়েছি। আমার এলাকায় আমি মসজিদ-মাদরাসায় সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি। যদি বেগম খালেদা জিয়া পান এবং যদি বিএনপি নির্বাচনে যায় তবে আমি নেত্রীর কাছে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানাব। যদি তিনি আমাকে সুযোগ প্রদান করেন তাহলে আমি বৃহত্তর পরিসরে জনগণের খেদমতে নিজেকে নিযুক্ত করব।
মাওলানা হুমায়ুন কবির বলেন, জামায়াত একটি সুসংগঠিত ও গণতান্ত্রিক দল। বিগত সময়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেছি। আগামীতেও দলীয় সিদ্ধান্তে আসনটিতে কাজ করছি। জোটগত মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো বলে আশা রাখছি।


আরো সংবাদ



premium cement