২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থের উৎস নিয়ে বাড়তি সাক্ষ্য চেয়ে আবেদন নথিভুক্ত

-

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থের উৎসের বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার জন্য অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে একটি আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। গতকাল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে ওই আবেদনের ওপর মামলার আপিলের শুনানি শেষে আদেশ দেয়া হবে বলে অভিমত দেন। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী তাদের আবেদনের ওপর আদেশ দেয়ার আবেদন করলে আদালত বিষয়টি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।
আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থ ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা কুয়েতের আমির শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে এতিমখানা করতে দিয়েছেন বলে খালেদা জিয়ার পক্ষে দাবি করা হয়েছে। অপর দিকে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই অর্থ এসেছে সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে।
গতকাল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অ্যাডিশনাল এভিডেন্সের জন্য কুয়েতের আমির যে অর্থ পাঠিয়েছেন এটা প্রমাণের জন্য যে ব্যাংকের মাধ্যমে (সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক) অর্থ পাঠানো হয়েছে তার কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি ৪২৮ ধারা অনুযায়ী আপিলেট কোর্টও প্রয়োজনে অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে পারেন। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন রেফারেন্স দেখান। তারা বলেন, এই মামলার অর্থের উৎস পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। অর্থের উৎস পাওয়া গেলে মামলার মূল বিবেচ্য বিষয় ট্রাস্টের অর্থ পাবলিক ফান্ড না প্রাইভেট ফান্ড তা পরিষ্কার হতো।
অন্য দিকে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছেন, এই মামলার অর্থের উৎস সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়টি মামলার ২৬তম সাক্ষীর মাধ্যমে পরিষ্কার হয়েছে। এই পর্যায়ে ২৬ বা ২৭ দিন যুক্তি উপস্থাপনে শেষে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ২৬তম সাক্ষী ও তৎকালীন বাংলাদেশের সৌদি রাষ্ট্রদূত খন্দকার আবদুস সাত্তার সাক্ষ্যে বলেছেন, সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক সাম্বা গ্রুপে একীভূত হয়েছে। তিনি অর্থের উৎসের বিষয়ে সাম্বা গ্রুপের মি. তালাতের কাছে চিঠি লিখেছেন। তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এবং তা পাওয়া মাত্র দেয়া হবে। তবে এরপর অর্থের উৎসের বিষয়ে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ জন্য আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অর্থের উৎস নিশ্চিত হতে হলে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।
অন্য দিকে গতকাল খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের আবেদন এবং এই মামলার তিন আসামির আপিলের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। দুদকের পক্ষে শুনানিকালে আদালত জানতে চান, বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৩ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে টাকা দিয়েছেন। এর ১৩ বছর পর ২০০৬ সালে এসে যে অর্থ তিনি ট্রাস্টে বরাদ্দ দিয়েছেন তার দায় তাকে দেয়া যাবে। তিনি ওই ট্রাস্টের কেউ নন। জবাবে খুরশিদ আলম খান বলেন, ট্রাস্টে ৬ মইনুল রোডের ঠিকানা দেয়া হয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলে থাকতেন।
এরপর আদালত বলেন, খালেদা জিয়াকে নি¤œ আদালতের রায়ে ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে প্রিন্সিপাল অ্যাকিউজ ও অ্যাবেটার হিসেবে। জবাবে খুরশিদ আলম খান বলেন, এখানে ভাষার ভুল করেছেন।
এরপর আদালত জানতে চান, ১৯৯৩ সালে বেগম খালেদা জিয়া টাকা দিয়েছেন। কাগজে কলমে শেষ হলো। ২০০৬ বা ২০০৭ সালে ১৯৯৩ সালের ঘটনায় তিনি কিভাবে আসবেন?
জবাবে খুরশিদ আলম খান বলেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এই অর্থ দিয়ে এতিমখানা করেছেন। আর তারা টাকা রেখে দিয়েছেন।
এরপর আদালত বলেন, অর্থ আসা দোষের কিছু না, দেয়া ঠিক আছে কি না?
জবাবে খুরশিদ আলম বলেন, দেয়া ঠিক আছে। আমরা দেখব এতিমের টাকা এতিমের জন্য খরচ হয়েছে কি না। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অর্থ রেখে দেয়া হয়।
গতকাল খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিলের শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। শুনানির সময় আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন- আবদুর রেজাক খান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, মো: আখতারুজ্জামান, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, আনিছুর রহমান খান, ফাইয়াজ জিবরান মঈন, গোলাম আকতার জাকির, সালমা সুলতানা, মোস্তফা সরওয়ার প্রমুখ। অপর দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন খুরশিদ আলম খান।
এর আগে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন হাইকোর্ট। তার আগে গত ১১ অক্টোবর খালেদা জিয়ার জামিন ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত ১২ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একধিকবার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি

সকল