১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাংলা ট্রিবিউনকে ড. কামাল

ঐক্যের উদ্দেশ্যের বাইরে আমি যাবো না

-

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, এর বাইরে তিনি যাবেন না। যেতে পারেন না।’
গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস কাবে বিএনপি, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য ও কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই জোটে বিকল্প ধারার অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দলটির সভাপতি বি. চৌধুরী জানিয়ে দেন, জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না জানালে বিএনপিকে এককভাবে মতায় বসানোর ঐক্যে তার দল থাকবে না। বি. চৌধুরীর এই প্রস্থানকে জোটের অনেকে স্বস্তিদায়ক হিসেবে মনে করলেও সাবেক রাষ্ট্রপতির দলের নেতারা বলছেন, ড. কামাল হোসেনই বরং সই দিয়ে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। এর পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা আছে শেষ পর্যন্ত ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকবেন কি না?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে গত মঙ্গলবার ড. কামাল হোসেনের সাথে তার মতিঝিলের চেম্বারে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের। বেইলি রোডের বাড়িতে এসে বি. চৌধুরীর ফিরে যাওয়ার বিষয়েও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি। জাতীয় ঐক্য যে ল্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে, সেটা ঠিক থাকলে তিনিও (কামাল হোসেন) জোটে থাকবেন। নিচে ড. কামাল হোসেনের সাাৎকারটি হুবহু তুলে দেয়া হলোÑ
বাংলা ট্রিবিউন : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সূচনা হলো। এই ফ্রন্টকে ল্েযর দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনি কতটা আশাবাদী?
ড. কামাল : এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয় এই আশা করে ঐকমত্য গঠনে ভূমিকা রাখবে। এটি মৌলিক বিষয়, আমাদের কথা হলো এখানে কোনো দলীয় অবস্থানকে সমর্থন করা না। যেটি আমাদের সাত দফার মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপে নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য গঠন করা, দলমত নির্বিশেষে। আমি তো বলি, আমাদের এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করলেও সমস্যা নেই। আমরা কোনো দলীয় বক্তব্য এখানে দিতে চাচ্ছি না। আমরা বলছি, সব মানুষের যেটা চাহিদা, দাবি সংবিধান অনুযায়ী সব কিছু হোক।
বাংলা ট্রিবিউন : এখন (১৬ অক্টোবর) তো জোটের নেতারা মিটিং এ বসবেন, এখন পর্যন্ত কি প্রক্রিয়াটা ঠিকঠাক অবস্থায় আছে?
ড. কামাল : এটা প্রথম বৈঠক। আমরা সুষ্ঠু পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এটাই আমাদের মূল বিষয়।
বাংলা ট্রিবিউন : এই যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করলেন, এটার হাত ধরে কি নির্বাচন পর্যন্ত যেতে পারবেন?
ড. কামাল : আমার কোনো উত্তর দেয়া সম্ভব না। এটাই মাত্র শুরু হলো।
বাংলা ট্রিবিউন : একটা সংশয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে, আপনি এখান থেকে সরে যেতে পারেন।
ড. কামাল : না, সরে যেতে পারি না। আমার কথা হলো এই ঐক্য যে উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্যের বাইরে আমি যেতে পারি না। এর বাইরে আমার কিছু বলা ও করা সম্ভব না। হবে না।
বাংলা ট্রিবিউন : আগামী নির্বাচনে আপনার নির্বাচন করার কি ইচ্ছা আছে?
ড. কামাল : আমার তো কোনোই চিন্তা নেই, একদম কোনো চিন্তা নেই। আমার না নেয়ারই ইচ্ছা। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে (সিদ্ধান্ত) নেই নাই আমি। তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার পে আমি। এখানে হবে যে... আমাদের দলের বা জোটের, তারা হয়তো বলবেন, যে নির্বাচন করবেন।
বাংলা ট্রিবিউন : সেটা কি তাহলে জোট বা দলের চাহিদার ওপর নির্ভর করবে?
ড. কামাল : না নির্ভর করবে না, কিন্তু তাদের চাহিদা তো একটা থাকবেই।
বাংলা ট্রিবিউন : আপনি ২০১২ সাল থেকে অসংখ্যবার বি. চৌধুরীর সাথে ঐকমত্য প্রদর্শন করেছেন। আমরা দেখেছি, আপনারা দুইবার সইও দিয়েছেন। সর্বশেষ যুক্তফ্রন্টের সাথে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াও হয়েছে। তারপরও উনি সে দিন এসেছিলেন এবং ফেরত গেলেন। এটা নিয়ে আপনার কোনো কথা আছে কি না?
ড. কামাল : ওনাকে জানানো হয়েছিল আমরা এখানে বসছি। আপনি এখানে এলে ভালো হয়। আমার বাসায় কেউ ছিল না, যেটা উনি পরে বলেছেন। কেউ না, এটা জানানো হয়েছে।
বাংলা ট্রিবিউন : এরপর কি বি. চৌধুরীর সাথে কথা হয়েছে আপনার?
ড. কামাল : না, এরপর আর ওনার সাথে কথা হয়নি।
বাংলা ট্রিবিউন : তাকে কি আপনি ঐক্যফ্রন্টে আনার চেষ্টা করবেন?
ড. কামাল : আমার অনুরোধ তো থাকবেই। আমি তো বলব, আমার সেখানে (বাড়িতে) না থাকাটা যদি উনি ভুল বুঝে থাকেন, এটাই বড় কথা। আর আপনাকে (বি. চৌধুরী) বলব, আপনি যদি জয়েন করতে পারেন, তাহলে তো খুবই ভালো।
বাংলা ট্রিবিউন : বিএনপির সাথে আপনার যে ঐক্য হলো, এটা শুধু বিএনপির সাথেই হয়েছে। কিন্তু দলটির সাথে একটি জোট আছে এই যে প্যারালাল যাওয়া, এটা আপনি কিভাবে দেখেন?
ড. কামাল : এই সাত দফাকে সমর্থনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। এ পর্যন্ত বলেছি এবং করার চেষ্টা করছি। এর বাইরে আমার কোনো কিছু করা সম্ভবও না।বাংলা ট্রিবিউন : জোট গঠনের পর সরকারদলীয় লোকজন অনেক সমালোচনা করছে, এটাকে আপনি কিভাবে নিচ্ছেন?
ড. কামাল : সমালোচনা সব শুনতে হবে। সমালোচনা করার অধিকার আছে, মানুষ করবে।
বাংলা ট্রিবিউন : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক নম্বর দাবির কথাই বলি, এ েেত্র এটা কি শুধু দাবিই থাকবে, নাকি এর জন্য কোনো কার্যকর আন্দোলনও থাকবে?
ড. কামাল : আমার বক্তব্য হলো গণতান্ত্রিক পদপে যেগুলো নিতে পারেন নেবেন। আইন অনুযায়ী যা নিতে পারেন, তা সবাই নেবেন।
বাংলা ট্রিবিউন : আপনাদের ঐক্যে বিএনপি আছে। দলটি অনেক বছর মতায় ছিল। ওই সময়গুলোতে তারা মতার ভারসাম্য রায় কাজ করেনি। প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শক্তিশালী করেনি। এ েেত্র জোটের যে ল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ভারসাম্য সৃষ্টির, বিএনপি কি এসব ল্য বাস্তবায়নে কাজ করবে?
ড. কামাল : এটা কোনো পার্টির পে না। নির্বাচন, অবাধ নির্বাচন হোক, এই স্বার্থকে কেন্দ্র করে আমি নেমেছি। ধরে নেয়া হয়েছে যারা স্বার করেছেন তারা দাবিগুলোকে সমর্থন করেই করেছেন। সামনে দেখা হবে, যারা স্বার করেছেন তারা সেটাকে পালন করেছেন কি না।
বাংলা ট্রিবিউন : আপনি কি ফ্রন্টের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন?
ড. কামাল : আমার তো সীমাবদ্ধতা আছে স্বাস্থ্যের, এরপরও গুরুত্বপূর্ণ হলে অংশ নেবো।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন এর বেশি কথা বলতে নারাজ। সাাৎকার নিয়ে মিডিয়ায় তার বক্তব্য ভিন্নভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ তুলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন। শেষপর্যায়ে বাংলা ট্রিবিউনকে কামাল হোসেন বলেন, ‘বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। আমি কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না।’

 


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল