২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আওয়ামী লীগ অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপিতেও একাধিক

রাজবাড়ী-২ আসন
-

পাংশা, বালিয়াকান্দি ও নবগঠিত কালুখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী-২ সংসদীয় আসন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ আসনের দলীয় নেতারা। এ আসনের তিন উপজেলাতেই এখন বইছে নির্বাচনী আমেজ। বিএনপি চায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোটারদের ভোট বিপ্লবে এ আসনটি পুরুদ্ধার, আর আওয়ামী লীগ চায় তা ধরে রাখতে। তাই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যেই হবে মূল লড়াই। তবে পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টিও। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর একাধিক কেন্দ্রীয় তরুণ নেতা, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন নিজ নিজ এলাকায় ঘর গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে প্রধান দুই দলের কিছু নেতা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কোনো ধরনের সংযোগ না রেখেই মনোনয়নপ্রত্যাশায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। রাজবাড়ী-২ আসনে চারবার আওয়ামী লীগ, একবার বিএনপি, একবার জামায়াত, একবার জাতীয় পার্টি, দুইবার জাসদ ও একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
রাজবাড়ী-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন তিনবারের নির্বাচিত বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো: জিল্লুল হাকিম। এ আসনের তিনটি উপজেলার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন তিনি। এলাকার রাস্তাঘাট, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগসহ সর্বক্ষেত্রে তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চোখে পড়ার মতো। তার আমলেই তিন উপজেলায় তিনটি কলেজ ও তিনটি হাইস্কুল সরকারীকরণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দক্ষতা দিয়ে তিনি দলকে সুসংগঠিত করেছেন। বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের বিপদের কাণ্ডারি হিসেবে জিল্লুল হাকিমকেই চেনেন। প্রতিটি মহল্লায় অবাধ বিচরণ রয়েছে তার। তার উন্নয়নমূলক কাজসমূহ জানাতে এরই মধ্যে পাংশা, কালুখালি ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের আয়োজনে পৃথক পৃথক মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করা হয়েছে। তাতে এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। জিল্লুল হাকিম ছাড়া অন্য কাউকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে না বলে আশা করছেন স্থানীয় নেতারা। রাজবাড়ী-২ আসনে নৌকার মাঝি তাকেই মানায় বলে জানান তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
আর এ বিষয়ে এমপি জিল্লুল হাকিম জানান, প্রধানমন্ত্রী বাংলার জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় তারই প্রতিনিধিত্ব করে থাকি। এলাকার মানুষের জন্য কতটুকু করতে পেরেছি, সেটি এলাকার মানুষই ভালো বলতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমার যা কিছু করার প্রয়োজন, আমি তাই করব। জনগণের সাথে ছিলাম; জনগণের সাথেই থাকব। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনিই নৌকা প্রতীক পাবেন বলে আশা করেন।
অন্য দিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য জোর লবিং চালাচ্ছেন আওয়ামী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা: এম ইকবাল আর্সলান। তবে তিনি এলাকায় থাকেন না। সাবেক জামায়াত এমপি ডা: আর্সজাদের ছেলে হিসেবে জনগণের কাছে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত। একাদশ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আশায় মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দিবসে তিনি পোস্টার আর ফেস্টুন দিয়ে এলাকার জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। ডা: ইকবাল আর্সলান সাংবাদিকদের জানান, তিনি রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সদস্য। রাজবাড়ী-২ আসনের তিন উপজেলার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার সাথেই আছেন বলে ডা: ইকবাল দাবি করেন। আর আওয়ামী মনোনয়ন বোর্ড তাকে এবার নমিনেশন দিলে নেতাকর্মীরা আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার পক্ষে নির্বাচনে কাজ করবে।
অন্য দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপুও এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি শিক্ষাজীবন শেষে ঢাকায় গার্মেন্ট ব্যবসায় করছেন। তবে তিনি বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তার নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা জানান ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ সোহেল রানা এরই মধ্যে সপ্তাহে দুই দিন করে তার নির্বাচনী এলাকার কালুখালি, বালিয়াকান্দি ও পাংশায় তিন-চারটি করে গণসংযোগ করছেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সমর্থকদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। তিনি আশা করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজ¥মের শিক্ষিত, সৎ ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়ন দিলে তিনি রাজবাড়ী-২ আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন।
অন্য দিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজবাড়ী প্রেস ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় দৈনিক জনতার আদালত পত্রিকার সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকীও এবার রাজবাড়ী-২ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটির সদস্য এবং কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী সম্প্রতি কালুখালীতে সাংবাদিকদের জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশায় তিনি অনেক দিন ধরেই এই নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে নিয়ে গণসংযোগ করে চলেছেন। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাফল্যের বার্তা। তিনি দাবি করেন যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই মানুষের বেশ সাড়াও পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের তরুণ এই নেতা।
এরই মধ্যে তার নির্বাচনী এলাকার একাধিক মসজিদ ও মন্দির উন্নয়নে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন তিনি। অনেক হতদরিদ্র শিক্ষার্থীসহ প্রতিবন্ধী দুস্থদের আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষার প্রসারেও রেখে চলেছেন ভূমিকা।
বিগত ২০১৪ সালের কালুখালী উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে অল্প ভোটে হেরে যান। এরপর থেকেই নুরে আলম রাজবাড়ী-২ আসনের কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও পাংশার বিভিন্ন এলাকায় ও হাটবাজারে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ দিকে রাজবাড়ী-২ আসনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন সম্পর্কে বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বজন স্বীকৃত সাদামনের মানুষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচনের আগে বসন্তের কোকিলের মতো অনেক নেতাকেই এলাকায় দেখা যায়। নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ধরনের নেতাকে আমরা চাই না। রাজবাড়ী-২ আসনের মানুষের সুখে-দুঃখে আমরা জিল্লুল হাকিমকে সব সময় কাছে পাই। তাই আমরা তাকেই চাই। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে আমরা যাদের নাম শুনছি, তাদের মধ্যে জিল্লুল হাকিম ছাড়া একজন নেতারও এলাকায় কোনো পরিচিতি নেই। আর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল মোর্শেদ আরজ জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে জিল্লুল হাকিম ছাড়া নৌকার কোনো বিকল্প নেই।
অন্য দিকে রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ বৃদ্ধির পাশাপশি কেন্দ্রেও জোর লবিং চালাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বেগবান করার সাথে সাথে বিএনপির প্রার্থীরা চারদলীয় সরকারের উন্নয়ন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি এবং দেশরক্ষার বার্তা নিয়ে ভোটারদের দরজায় হাজির হচ্ছেন।
এ বার্তা নিয়ে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো: নাসিরুল হক সাবু ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লায়ন অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক খান বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সাবেক এমপি বর্ষীয়ান জননেতা নাসিরুল হক সাবু বলেন, তিনি আশাবাদী, দেশনেত্রী ও বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড তার সংসদ সদস্য থাকাকালীন দল গোছানো ও এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখে তাকেই এ আসনে নমিনেশন দেবেন। তবে এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাসিরুল হক সাবুকে মনোনয়ন দেয়া হলে আবার রাজবাড়ী-২ আসনটি ফিরে পাবে বিএনপি। প্রতিনিয়তই তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও দলীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিনি রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তা ছাড়া বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মধ্য দিয়ে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে রেখেছেন। তিনি জেলা বিএনপির দুঃসময়ে দলের হাল ধরেছেন।
পাংশা পৌর বিএনপির সভাপতি মো: হাবীবুর রহমান রাজা, সেক্রেটারি শওকত সরদার ও উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আকুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মুক্তিযোদ্ধা সদালাপী নেতা নাসিরুল হক সাবু তার রাজনৈতিক দক্ষতা দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেছেন। বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিএনপির বিপদের কাণ্ডারি হিসেবে নাসিরুল হক সাবুকেই চেনেন। প্রতিটি মহল্লায় অবাধ বিচরণ রয়েছে তার। বিশেষ করে তিনি পাংশা উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি থাকাকালীন পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালীতে শিক্ষা-সংস্কৃতিতে, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়ক নির্মাণসহ চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের উপজেলা সদরে সহজ যোগযোগের জন্য একাধিক সড়ক নির্মাণ করেছেন। তিনি সর্বদাই পাংশা নিজ বাড়িতেই অবস্থান করেন ও সুখে-দুঃখে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে থাকেন। তাই আজো পাংশা-কালুখালী-বালিয়াকান্দি উপজেলার মানুষ নাসিরুল হক সাবুকেই আবার এমপি হিসেবে দেখতে চায়। বিএনপির হাইকমান্ড একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবুকে নমিনেশন দিলে অবশ্যই এ আসনটি পুনরুদ্বার করা সম্ভব হবে।
অন্য দিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লায়ন অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক খান। সম্প্রতি কালুখালী উপজেলায় নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি তার মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানান।
লায়ন অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক খানের স্থায়ী নিবাস রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে। মনোনয়নপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ১৯৬৫ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়ে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করে আসছি।’ ‘তাই আমি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।’
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ এলাকার জনসাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, তারা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আমি মনোনয়ন পেলে এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে রাজবাড়ী-২ আসনে বিজয়ী হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই আসন উপহার দিতে পারব।’ তিনি বলেন, বিগত কালুখালী উপজেলা নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু ভোট কারচুপি ও ভোটকেন্দ্র দখলসহ নানাবিধ অশুভ তৎপরতার কারণে তিনি পরাজিত হন। দরিদ্র মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সাথে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময় পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলার নদীভাঙন, হতদরিদ্র গরিব পরিবারের মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা করে থাকেন। এ ভাবেই তিনি অত্র এলাকার জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
এ ছাড়া কালুখালী উপজেলার বল্লভপুর এলাকায় নিজ বাসভবনের পাশে আট একর পৈতৃক জমিতে কিং জুট মিলস লিমিটেড নামক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠানে অত্র এলাকার সাড়ে ৭ শতাধিক নারী-পুরুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
অন্য দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: হারুন-অর-রশিদ এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে ঢাকায় লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে মো: হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলার অভিযোগ এনে এর আগে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খোন্দকার মশিউল আযম চুন্নু। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ১০ বছরে আমার একার নামেই ২৮টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। যেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা-হামলা হয়েছে। সেখানে হারুনের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক মামলাও নেই। এতেই বোঝা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলেন। আগামী নির্বাচনে এ ধরনের সুবিধাবাদী নেতাকে মনোনয়ন দিলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী মো: হারুন-অর-রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াজ খৈয়াম, সাবেক এমপি নাসিরুল হক ও সহসভাপতি এম এ খালেকের নামেও এ সময় কোনো মামলা আওয়ামী লীগ দেয়নি। তারাও কি আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলেন?
অন্য দিকে জাতীয় পার্টির বেশ দুইজন নেতা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সভা-সমাবেশ করছেন। তার মধ্যে জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা সভাপতি মো: আবুল হোসেন মিয়া, পাংশা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও জেলা জাপার সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা ছাত্রসমাজের সাবেক সভাপতি মো: রকিবুল ইসলাম শামীম। তবে তার মধ্যে জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ও কালুখালী উপজেলা সভাপতি মো: আবুল হোসেন মিয়া এগিয়ে রয়েছেন। তার বিকল্প কাউকে দেখছেন না পার্টির তৃণমল কর্মীরা। তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে প্রতিনিয়তই গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টিকে চাঙ্গা করে রেখেছেন প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ। বিভিন্ন উৎসব ও জাতীয় দিবসে তিনি পোস্টার, ফেস্টুন ও তোরণ বানিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। তিনি জানান, পার্টির চেয়ারম্যান ২০০৮ সালে আমাকে রাজবাড়ী-২ আসন থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। এবারো আশা করছি, পার্টি আমাকে মনোনয়ন দেবে। জাতীয় পার্টি থেকে তিনি মনোনয়ন পেলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গলের বিজয় হবে বলে তিনি আশাবাদী। অন্য দিকে পাংশা শহরের বাসিন্দা তরুণ জাপা নেতা মো: রকিবুল ইসলাম শামীমও ছাত্রজীবন থেকে এরশাদের রাজনীতির সাথে যুক্ত।
তিনিও সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বে বিশ্বাসী। শামীম বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সময় এ দেশে রাজনীতিতে ও উন্নয়নে স্বর্ণযুগ হিসেবে চেনে। পার্টির প্রেসিডেন্ট ও কো-চেয়াম্যান ও মহাসচিবের সাথে তার কথা হয়েছে। তারা তাকে শামিমকে নমিনেশনের গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে এলাকায় কাজ করতে বলেছেন। তাই জাপা এককভাবে নির্বাচন করলে রাজবাড়ী-২ আসন থেকে নমিনেশন তিনিই পাবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল