১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি

গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ ভাঙচুর পুলিশের গুলি-টিয়ার শেল

-

বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার বিভিন্ন মালামাল ও দরজা-জানালার কাচসহ কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করেছে। শ্রমিকদের সাথে পুলিশের কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ ৩১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ২২ রাউন্ড টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ঘটনায় পুলিশের এসআইসহ ১৮ জন আহত হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের ইন্সপেক্টর মো: আমজাদ হোসেন, আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লক্ষ্মীপুরা এলাকার ইন্ট্রামেক্স পোশাক কারখানায় কর্মরত স্টাফদের পাঁচ মাসের এবং শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের ওই পাওনা পরিশোধের একাধিক তারিখ দিলেও তারা তা পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন রোববার পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এদিন তা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রোববার কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে। ওই দিন তারা কারখানার বিভিন্ন মালামাল ও দরজা-জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনার জেরে শ্রমিকেরা দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল সোমবার সকালে কারখানায় গিয়ে তাদের পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করতে থাকে। তাদের সাথে কারখানার কর্মচারীরাও যোগ দেয়। এ সময় তারা কারখানায় ভাঙচুর করে। পরে বেলা ৩টার দিকে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কারখানায় আসেন। এ সময় পুলিশের মধ্যস্থতায় আলোচনার পর কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনাদি আগামী ২৪ অক্টোবর পরিশোধের ঘোষণা দেন। কিন্তু আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারীরা ওই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে সোমবারের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে আন্দোলনরতরা পুলিশ ও কারখানার মালিকের ওপর চড়াও হয়। এ সময় আন্দেলনরতদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকেরা আরো উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে ও পুনরায় কারখানা ভাঙচুর করতে থাকে। একপর্যায়ে আন্দোলনরতরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-গাজীপুর সড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে পুলিশের সাথে আন্দোলনরতদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ ঘটনায় পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে দিগি¦দিক ছুটোছুটি শুরু করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিক-কর্মচারীরা পার্শ্ববর্তী ঢাকা-গাজীপুর সড়কে চলাচলরত কয়েকটি গাড়ির কাচও ভাঙচুর করেছে। একপর্যায়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ বিকেলে শর্টগানের ৩১ রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল ২২ রাউন্ড ছুড়ে আন্দোলনরতদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় জিএমপির গাজীপুর সদর থানার এসআই বশির আহমেদসহ ১৮ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গাজীপুর সদর থানার এসআই বশির আহমেদ ও কারখানার কোয়ালিটি কন্ট্রোলার আবদুল আলিম এবং লাঠিপেটায় আহত কারখানার প্যাকিংম্যান মারফত আলী (২৫), আয়রনম্যান মোবারক হোসেন (৩০) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল