১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুদহার কমায়নি ৪০ ব্যাংক

কমানোর ঘোষণা কার্যকর হয়নি তিন মাসেও
-

১ জুলাই থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে এবং তিন মাস মেয়াদি আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি এ ঘোষণা দিয়েছিলেন গত ২০ জুন। কিন্তু ঘোষণার প্রায় তিন মাস পার হতে চললেও ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনেনি বেশির ভাগ ব্যাংক। এরপর অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ঋণের সুদহার ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এ ঘোষণাও দুই মাস অতিবাহিত হতে চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ৪০টি ব্যাংকের গড় ঋণের সুদহার এখনো ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। গড় ঋণের সুদহার এখনো কোনো কোনো ব্যাংকের সাড়ে ১৩ শতাংশ রয়েছে। আর খাত ভেদে সুদহারও অনেক বেশি।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমানো ছাড়া ঋণের সুদহার কমানো সম্ভব হবে না। কেননা, কম সুদে আমানত মিলছে না। পরিচালন ব্যয়ও রাতারাতি কমানো সম্ভব হবে না। এর সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া। সবমিলে ঋণের সুদহার কমানোর ঘোষণা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ থাকছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত জুলাই শেষে আমানতের গড় সুদহার কমে নেমেছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশে। কিন্তু ঋণের গড় সুদহার প্রায় দশ শতাংশ (৯ দশমিক ৫৫ ভাগ)। এর মধ্যে ৩৩টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার ১০ শতাংশ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। আর ৭ ব্যাংকের গড় সুদহার সোয়া ৯ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। বিপরীতে ১৪টি ব্যাংকের আমানতের গড় সুদহার ১ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ। আর বাকি প্রায় সব ব্যাংকের আমানতের গড় সুদহার ৬ শতাংশের নিচে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনলেও ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নামিয়ে আনেনি।
গতকাল মতিঝিল পাড়ায় ঘুরে দেখা যায়, সব ব্যাংকই আমানতের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে এনেছে। কিন্তু ঋণের সুদহারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বেশির ভাগ ব্যাংকই জানিয়েছে ‘ঋণের সুদহার কমানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ এ বিষয়ে একটি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে যেসব ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, বিশেষ করে বড় বড় শিল্পগ্রুপ ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছে না। ফলে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ দেখাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে বেশির ভাগ ব্যাংকের তার চেয়ে বেশি রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোতে যথাযথভাবে পরিদর্শন করলে এ চিত্র বের হয়ে আসবে। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর তহবিলের বড় একটি অংশ গ্রাহকদের কাছে আটকা পড়ে গেছে। এতে ব্যাংকগুলোর বেশি হার প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফারমার্স ব্যাংকের ঘটনার পর ও অন্যান্য কারণে ব্যাংকিং খাতে কিছুটা আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংকেরই তারল্য সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এ তারল্য সঙ্কটের কারণে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার বাড়িয়ে দিয়েছিল। গত ৬ মাস ধরে ব্যাংকিং খাতের এ পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে আমানত সংগ্রহ করতে গিয়ে আমানতের সুদহার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১১ শতাংশে উঠে গিয়েছিল। এতে বেড়ে যায় অস্থিরতা। এ পরিস্থিতিতে বিএবি ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে এবং তিন মাস মেয়াদি আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। ফলে সব ব্যাংকই একযোগে আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে। কিন্তু ঋণের সুদহার এখনো সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সিরিয়ায় আইএস-এর হামলায় সরকার সমর্থক ২০ সেনা সদস্য নিহত ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু জনসমর্থনহীন সরকার জনগণের আওয়াজ নির্মমভাবে দমন করে : রিজভী সরিষাবাড়ীতে স্কুলছাত্র হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

সকল