২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৬৪ জেলায় কোর্ট ভবন নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ১৪০ শতাংশ

৭৩১ কোটি টাকার প্রকল্প এখন ২৩ শ’ ৮৮ কোটি টাকায়
-

সব উন্নয়ন প্রকল্পের একই দশা। কোনোটাই নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয় না। বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) কোর্ট ভবন নির্মাণ প্রকল্পেরও একই হাল। ২০০৯ সালে নেয়া প্রকল্পটি চলছে ঢিমেতালে। গত মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫৪.২৮ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ১৯ শতাংশ। গত ছয় বছরে প্রকল্পে পাঁচজন পরিচালক পরিবর্তন করা হয়েছে। পাঁচ বছরে যে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা তা ৯ বছর ধরে চলছে। ৭৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে এক হাজার ৬৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যেভাবে চলছে তাতে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত লাগবে সব আদালত ভবন নির্মাণ করতে। এ অভিমত প্রকাশ করেছে খোদ পরিকল্পনা কমিশনের মূল্যায়ন বিভাগ বা আইএমইডি।
সরকারি সংস্থার সরেজমিন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল মোট ৭৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুনের মধ্যে সমাপ্ত করার জন্য প্রকল্পটি অমোদন দেয়া হয় একনেক থেকে। এরপর দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ চার বছর বাড়ানো হয়। তিন দফায় ব্যয বৃদ্ধি পায় এক হাজার ৬৫৬ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। যে প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৭৩১ কোটি টাকা, সেটা এখন ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ২৭ লাখ ২৭ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। প্রথম প্রকল্প পরিচালক এ কে এম আবদুল্লাহ মাত্র ৫ মাসের মাথায় পরিবর্তন হন। পরের নিয়োগপ্রাপ্ত পিডি মো: নুরুল ইসলাম ছিলেন ২০১৪ সলের ২ মার্চ পর্যন্ত। এরপর আসেন মো: জাহিদ হোসেন। তিনি ছিলেন ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারা সবাই ছিলেন গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। তিন মাসের জন্য নিয়োগ পান আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দ কামাল হোসেন। এরপর নিয়োগ পান গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গাজী মো: জাহাঙ্গীর হোসেন। ১১ মাস পর তিনিও বদলি হন। বর্তমানে দায়িত্বে আছেন দেবাশীষ চন্দ্র সাহা।
আইএমইডির তথ্যানুযায়ী, ২০০৮-৯ থেকে ২০০৯-১০ এই দুই অর্থবছরে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কোনো ভৌত কাজই হয়নি। নির্মাণকাজ শুরু করার আগেই ডিজাইন পরিবর্তন, ভবনের সংখ্যা বৃদ্ধি, ভবনের ভিত্তি পরিবর্তন, পুরাতন ভবন অপসারণ, জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, আদালত থেকে নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞার কারণেই এই ধীরগতি। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আইএমইডি বলছে, যদি অর্থব্যয়ের ধারা গত অর্থবছরের মতো থাকে তাহলেও প্রকল্পের সমাপ্তির জন্য আরো দুই বছর সময় লাগবে।
প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রকল্পের আওতাভুক্ত ২২টি জেলার মধ্যে ১৩টি জেলায় জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিন জেলায় জেলা জজ আদালত ও গণপূর্ত অধিদফতরের নিজস্ব জমি রয়েছে।
এ পর্যন্ত নির্মিত আদালত ভবনের ব্যাপারে আইএমইডি বলছে, মানিকগঞ্জে বিল্ডিংয়ের মেঝের মোজাইকের ফিনিশিং ভালো হয়নি। রাজশাহীতে সিঁড়ির কারিগরি কাজের মান সন্তোষজনক নয়। সিঁড়ির ধাপগুলো ঢেউ খেলানো এবং এতে দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে। খুলনায় ভবনের দেয়ালের ভেতরের কিছু অংশে এখনই শেওলা ধরেছে। কোনো কোনো বাথরুমের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, যখন সেগুলোর ওপরের তলার বাথরুম বেশি পরিমাণে ব্যবহার হয়।
আইএমইডি বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি পরিমাপ করতে পারেনি। তবে আর্থিক অগ্রগতিকে তারা বাস্তব অগ্রগতি হিসেবে দেখিয়েছে। বাকি কাজ সম্পাদন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে। ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, সম্ভাব্যতা যাচাই না করা ও প্রকল্পের ডিজাইনের ক্ষেত্রে দূরদর্শিতার অভাবের কারণেই এই প্রকল্পের এই পরিণতি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল