বিএনপি ও জাপার একক প্রার্থী তিন ভাগে বিভক্ত আ’লীগ
রাজশাহী-৪ আসন- আবু বাককার সুজন বাগমারা (রাজশাহী)
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০, আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৯
১৬টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন। এ আসনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) একজন করে প্রার্থী মাঠে তৎপর থাকলেও তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তিন গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী তিন নেতাই এবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বাগমারায় আওয়ামী দলটি বর্তমানে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন। দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক গ্রুপ।
দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, বাগমারা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাকিরুল ইসলাম সান্টু এবং তাহেরপুর পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরমেয়র আবুল কালাম আজাদ তিন মেরুতে অবস্থান করায় দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে জেএমবির আশ্রয়দাতা নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্প্রতি রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও তাহেরপুর পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য দেয়ার পর থেকেই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি প্রকাশ্যে রূপ নেয়।
এ দিকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বাগমারা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া। তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তবে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে ডি এম জিয়া বলেন, ২০০৮ সালের উপজেলা নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে আমি বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। কেন্দ্র ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি পালন করায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে এবং স্থানীয় এমপির হস্তক্ষেপে আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। আওয়ামী লীগের এসব অপকর্মের ও আমাকে হয়রানি করার উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্যই আমি এবার বিএনপির প্রার্থী হয়ে লড়তে প্রস্তুত। আমাকে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হলে অত্যাচারীদের কবল থেকে এ আসনটি উদ্ধার হবে এবং বাগমারাবাসী ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের অত্যাচার-নির্যাতনের জবাব দেয়ার সুযোগ পাবেন। আবারো বিনা ভোটে নির্বাচনের চেষ্টা প্রতিহত করতে এবং নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আন্দোলন জোরদার করতে আমরা মাঠে তৎপর রয়েছি। এখন আর আমাদের বসে থাকার সময় নেই। আন্দোলন করেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায় করতে হবে।
অপর দিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী অবশ্যই আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে তিনিই এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী থাকবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।
দলের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী বাগমারা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এলাকার উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। কাজেই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই আমি এ আসনে এবার নৌকার প্রার্থী হতে চাই।
অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী তাহেরপুর পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মন থেকে উঠে গেছেন। তাকে আর কেউ এমপি হিসেবে দেখতে চায় না। তাই এ আসনে এবার আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে নামতে চাই।
বাগমারা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও রাজশাহী জেলা জাপার সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী আবু তালেব প্রামাণিককে এ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জাপার এই নেতা বলেন, গত সংসদে জাপা মহাজোটের শরিক এবং বর্তমান সংসদে বিরোধী দল হিসেবে থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। কাজেই আগামী নির্বাচনে তিনি এ আসনে জাপার প্রার্থী হবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে এমন নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকেই তিনি দলকে সংগঠিত করার কাজ করে আসছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা