২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সুজনের গোলটেবিল বৈঠক

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্রুত জাতীয় সনদ প্রণয়ন দরকার

-

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজনের জন্য সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্রুততার সাথে সংলাপ আয়োজন এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও স্বাক্ষর হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর নেতৃবৃন্দ। তারা গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সুজন’-এর উদ্যোগে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান। এ ছাড়া সুজন নেতৃবৃন্দের মধ্যে সুজন স¤পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ‘সুজন’ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার, সুজন নির্বাহী সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক সি আর আবরার এবং ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়–য়া, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাজনীতিবিদ এ এস এম আকরাম, জোনায়েদ সাকী উপস্থিত ছিলেন। গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘সুজন’ কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা মনে করি, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য আরপিওসহ বিভিন্ন আইনের সংশোধন হওয়া দরকার। কিন্তু সেগুলো হওয়া উচিত রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতামতের ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা দেখলাম নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করে নির্বাচনে ইভিএমের প্রয়োগ নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ অনেক দেশই ইভিএম প্রয়োগ থেকে সরে এসেছে। তাই এখনই এবং বৃহৎ পরিসরে ইভিএম প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা উচিত। এটি প্রয়োগ করতে হলে এর কারিগরি দিক নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া দরকার এবং এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হওয়া দরকার।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সুষ্ঠু তথা জেনুইন নির্বাচন আয়োজন করতে আমরা সাংবিধানিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা জানি, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করে একটি যথাযথ নির্বাচনী আইন ও এর কঠোর প্রয়োগের ওপর। আমরা দেখতে পেয়েছি, নির্বাচন কমিশন ইভিএম-সহ অনেক বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারের মতামত উপেক্ষা করে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে না জানিয়ে আরপিওতে সংশোধনী আনার জন্য কতগুলো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে। তাই নির্বাচনে জিতে আসতে সরকার ‘আইনের অস্ত্রীকরণ করছে কি না তা ভেবে দেখা দরকার।’ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শিথিল করা দরকার, যাতে গণসংহতির মতো সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘সরকার চাইলেই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। অর্থাৎ সরকার চাইলে প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে সহায়তা করতে বাধ্য হবে।’ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের জন্য ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের বিধান তুলে দেয়া দরকার। সিটি নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা নাগরিকেরা যেন ভোট দিতে পারি সেই নিশ্চয়তা চাই।
ড. সি আর আবরার বলেন, ‘আজকে সবাই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও আমরা আমাদের গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়নি এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া পরিচ্ছন্ন হয়নি। আজকে জনগণের পক্ষে কেউ ঐক্যবদ্ধ হলে রাজনৈতিকভাবে তার জবাব না দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। সরকার যদি উন্নয়ন করে থাকে তাহলে তাদের এত ভয় কেন?’
এ এস এম আকরাম বলেন, ‘বর্তমানে সরকার যেভাবে চায় সেভাবেই আইন তৈরি হয়। তাই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে যত আইনই করা হোক সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’ বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement