২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আ’লীগ বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীর গণসংযোগ

লালমনিরহাট-১ আসন
আ’লীগ বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীর গণসংযোগ - ছবি : সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং হাতীবান্ধা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে লালমনিরহাট এক আসন গঠিত। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও লালমনিরহাট জেলা কমিটির সদস্য এবং পাটগ্রাম উপজেলা কমিটির সমন্বয়কারী ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আকন্দ, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব:) মো: খালেদ আক্তার এবং জামায়াতের এরশাদ হোসেন সাজু।

এ আসনটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৯ সালে এ আসন থেকে বিএনপির টিকিট নিয়ে মরহুম অধ্যক্ষ কাজী নুরুজ্জামান জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী মরহুম জয়নাল আবেদীনের নিকট আসনটি হাত ছাড়া হলে আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে জয়নাল আবেদীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন জামায়াত প্রার্থী এরশাদ হোসেন সাজুকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে জামায়াতের প্রার্থী হাবিবুর রহমান মোতাহার হোসেনের কাছে হেরে যান। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনেও তিনি প্রায় এক লাখ ৭৮ হাজার ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে এ আসনে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রার্থী ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হাবিবুর রহমান ভোট পান প্রায় ৭৮ হাজার এবং মোতাহার হোসেন পান এক লাখ ৩৩ হাজার। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পাটগ্রামে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতা হয়। ওই সহিংসতায় পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু মিয়া এবং পৌর ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন নিহত হন। জ্বালাও পোড়াও খুনসহ বিভিন্ন ঘটনায় জামায়াতের বিভিন্ন নেতাকর্মীর নামে মামলা হয় ৬৫টি। মামলায় আসামি করা হয় প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন।

অন্য দিকে বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয় ৫০ থেকে ৬০টি। আসামি করা হয় প্রায় পাঁচ হাজার। এসব মামলায় ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড় শুরু হলে বিএনপি-জামায়াত কোণঠাসা হয়ে পড়ে। পুলিশি ধরপাকড়ে বন্ধ হয়ে যায় দলীয় অফিস। এসব মামলায় বিএনপি নেতা হাসান রাজিব প্রধান নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা দিয়ে জেল থেকে মুক্ত করলে নেতাকর্মীরা তার নেতৃত্বে আবার সংগঠিত হন। মূলত এখন পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব তিনিই দিচ্ছেন। ব্যারিস্টার রাজিব বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন প্রখ্যাত আইনজীবী। আইনজীবী হিসেবে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন লোকজনকে আইনি সহায়তা দেয়ায় এলাকায় এরই মধ্যে তিনি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ ছাড়াও এলাকার নিরীহ মানুষকে শীতবস্ত্র, আর্থিক অনুদানসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক বছর থেকে তিনি পৌর শহরের থানা পাড়ায় তার বাসভবনের সামনে মনোরম পরিবেশে ঈদুল ফিতরে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণ করে রোজাদারদের ইফতার করান। তিনি নিজেও ধর্মপরায়ণ। এসব কারণে আওয়ামী লীগের কাছে তিনি বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন এবং বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে তিনি অনেকটা আশাবাদী। তবে ২০ দলীয় জোট অটুট থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি মনে করেন গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার আগে মুক্তি তার পর নির্বাচন। আমাদের এখন একটাই স্লোগান খালেদা জিয়ার মুক্তি।

এ দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের আরেক তরুণ নেতা শাহীন আকন্দ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। দলের একনিষ্ঠ এ তরুণ ছাত্রনেতা এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে থেকে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সোস্যাল মিডিয়ায়ও তার উপস্থিতি লক্ষ করার মতো।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব:) খালেদ আক্তার লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ আসনে দলের চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট আলহাজ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রার্থী হওয়ার কথা আগে শোনা গেলেও এখন খালেদ আক্তার প্রার্থী হবেন বলে জাপা সূত্রে জানা গেছে। জাপা এ আসনটিসহ বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনকে তাদের ঘাঁটি মনে করে। তবে জাপা প্রার্থীর এখনো কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।

নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন পরপর তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন এবং বিজয়ের ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী। ধরলা নদীতে ব্রিজ কালভার্ট বিভিন্ন সড়ক পাকাকরণ বিদ্যুৎসহ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ কারণে তিনি মনোনয়ন পেলে ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবার তাকে নির্বাচিত করবে বলে দলের নেতাকর্মীরা মনে করেন। এ ছাড়াও দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তার রয়েছে ভালো সম্পর্ক। মোতাহার হোসেন এলাকার তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সাথে সব সময় যোগাযোগসহ বিএনপি জামায়াত অপেক্ষা অনেক আগে থেকে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তার নির্বাচিনী এলাকায় প্রতি মাসে দুই চারবার সফর করেন। তবে এ ক্ষেত্রে তার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার দল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল। মুক্তিযুদ্ধের ৬ নম্বর সেক্টরের সংগঠক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক এমপি মরহুম আবিদ আলী মিয়ার ভাগিনা এবং মেয়েজামাই তিনি। এ কারণে এলাকায় এবং কেন্দ্রে তারও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। দলের তরুণসহ একটি অংশ তার সাথে রয়েছেন। ওই অংশটি মনে করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের টিকিট তিনিই পাবেন। এ দিকে জামায়াত নেতা এরশাদ হোসেন সাজুও বসে নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্র কমিটি গঠনসহ এলাকায় তিনিও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। বিএনপির এক নেতা দাবি করেন বিগত দিনে রাজনৈতিক সহিংসতায় পাটগ্রামসহ সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের যেভাবে হামলা মামলা খুন করা হয়েছে আগামী নির্বাচন দলীয় প্রভাবমুক্ত হলে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে তার জবাব দেবে।


আরো সংবাদ



premium cement
রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪ অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে চাপম্যান-আফ্রিদির উন্নতি থানচিতে ট্রাকে দুর্বৃত্তদের গুলি চীনের আনহুই প্রদেশের সাথে ডিএনসিসি’র সমঝোতা স্মারক সই আ’লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ : ২ শতাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ, আহত ৫ রাঙ্গামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬, আহত ৮ প্রতিবাদ সমাবেশকারীদের গ্রেফতারের নিন্দা জামায়াতের

সকল