১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহাসড়কেও ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলতে দেয়া হবে না : আইজিপি

-

ঈদযাত্রায় মহাসড়কে কোনোভাবেই ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা রাস্তায় থাকবেন, তারা নিয়মিত সড়ক পরিদর্শনে যাবেন। এ সময় মহাসড়কে পশুবাহী যানবাহনে চাঁদা আদায়ের মতো ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গতকাল সোমবার পুলিশ সদর দফতরে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, কোরবানির পশু ঢাকামুখী বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে, সেজন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, যেন পশুবাহী কোনো ট্রাককে অথবা পশুবাহী কোনো যানবাহনকে সেটা নদী বা রাস্তায় হোক সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তি ছাড়া আটকানো যাবে না। উৎস বা বড় বড় বাজার থেকে যে পশুগুলো আসবে সেই ট্রাকগুলোতে, পশুর মালিকদের যানবাহনের সামনে একটা ব্যানার টানিয়ে নিন, কোথায় যাবেন, তাহলে আর রাস্তায় টানাটানি বা ঝামেলা হবে না।
আইজিপি বলেন, মহাসড়কে যাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করতে না পারে তা আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। ঈদে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়া মানুষদের বাড়িঘরের নিরাপত্তার জন্য মহানগরে পুলিশের টহল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলায় কোনো পুলিশ সদস্যের গাফিলতি আছে কি না বা তারা সেই সময় নিষ্ক্রিয় ছিল কি না সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই সব ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে অতিরিক্ত কমিশনার গোয়েন্দা পুলিশকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেসবুকে ছড়ানো গুজব ঠেকানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ফেসবুকের সাথে একাধিকবার বসেছি। বাংলাদেশে তাদের একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাখার অনুরোধ করেছিলাম। সম্প্রতি আবারো অনুরোধ করেছি। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলকালে ৬-৭ আগস্ট থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কঠোর হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ভালো কাজ হয়, কিন্তু সবচেয়ে বেশি হয় গুজব ছড়ানো। বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়ানো কয়েক শ’ অনলাইন পোস্টদাতাকে আমরা শনাক্ত করেছি। ইতোমধ্যে ২১টি মামলা হয়েছে, সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো এসব গুজবের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে সদর দফতরে একটি শক্তিশালী সাইবার মনিটরিং ইউনিট গঠন করা হয়েছে। যাদের মাধ্যমে নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিং করা হবে। এর মাধ্যমে প্রতিটি জেলাপর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমগুলো মনিটরিং করা হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নাশকতা গোয়েন্দা ব্যর্থতা কি নাÑ এমন প্রশ্নে পুলিশ প্রধান বলেন, এটিকে আমি গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা বলে মনে করছি না। গোয়েন্দারা কাজ করছেন বলেই অনেককে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হেলমেট পরে লাঠিসোটা ও চাপাতি নিয়ে কারা পুলিশকে সাহায্য করেছিলÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। আমরা আমাদের সাহায্য করার কথা কাউকে বলিনি। আমরা কাউকে আহ্বান জানাইনি। আমাদের পরিপূরক হচ্ছে জনগণ। আমরা চাই জনগণ সবসময় আমাদের পাশে থাকুক। দেশের বাইরে বসে অনেকে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান। তাদের একজন সেফাতুল্লাহ। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি নাÑ উত্তরে আইজিপি বলেন, এ ধরনের কাজ যারা করছে তারা বিদেশ থাকুক আর যেখানেই থাকুক, আইনের বিঘœ ঘটালে ব্যবস্থা নেয়া হবেই। ইতোমধ্যে এ ধরনের অপরাধে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পলাতকদের মধ্যে দুজনের অবস্থানের তথ্য আমাদের কাছে আছে। তাদের একজন যুক্তরাষ্ট্র এবং আরেকজন কানাডায় আছেন। আমরা তাদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সাথে যোগাযোগ করছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সরকারিপর্যায়ে এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। ঈদে অজ্ঞান ও মলম পার্টির খপ্পরে পড়া থেকে রক্ষা পেতে সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানান পুলিশপ্রধান।

 


আরো সংবাদ



premium cement