১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিএফইউজে ও ডিইউজের আলোচনা সভা

বাকশালের চেয়েও বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ : মির্জা ফখরুল

সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে বিএফইউজে ও ডিইউজের আলোচনা সভা : নয়া দিগন্ত -

একদলীয় বাকশাল থেকে দেশের বর্তমান অবস্থা আরো ভয়াবহ বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসলে কী আওয়ামী লীগ সরকার চালাচ্ছে? না অন্য কেউ? তবে আগামী নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, তিন শর্তে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। শর্তগুলো হলোÑ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন নিরপে সরকার গঠন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস কাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে আয়োজিত ‘সংবাদপত্রের কালো দিবসের’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপিকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ একাদশ নির্বাচন করতে চায় বলেই তারা একতরফাভাবে নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলছে। ওবায়দুল কাদের বলছেন যে, ‘হয়ে যাবে, আমাদের নির্বাচনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিএনপি না আসলে কি নির্বাচন থেমে থাকবে না?’ আসলে এটিই তো তারা চায়। বিএনপি না আসুক, অন্য দলগুলো দুই একটা যেটা আনা হয়েছে তারা আসুক।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে অবশ্যই আমরা নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচনটা অবশ্যই হতে হবে নির্বাচনের মতো। আপনারা মতায় থাকবেন, হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরে বেড়াবেন। বিরোধী দলকে একটা কথাও বলতে দেবেন না, ধরে ধরে জেলে পুরবেন। সেেেত্র তো নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সমান্তরাল মাঠ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতি অনুযায়ী নির্বাচনকালীন একটা নিরপে সরকার থাকতে হবেÑ এটির কোনো বিকল্প নেই। সংসদে ভেঙে দিতে হবে। সবার আগে গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমি জানি অনেকে কষ্টের মধ্যে আছেন। এই কষ্ট অতিক্রম করতে হলে আমাদের একসাথে নেমে পড়তে হবে। দেশকে, সবাইকে বাঁচাতে হবে। যারা অভিজ্ঞ যারা রাজনীতির প্রথম থেকে অবদান রেখে আসছেন তাদের প্রতি দেশনেত্রী কারাগারের যাওয়া আগে বলেছেন জাতীয় ঐক্য চাই। আমি এটি বিশ্বাস করি, জোর দিতে চাই, বাংলাদেশের এই সঙ্কট উত্তরণের জন্য খুব বেশি পয়েন্টে নয়, কয়েকটি পয়েন্টে আপনাদের সাথে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে পারি।
জাতীয় প্রেস কাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইরফানুল হক নাহিদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস কাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএফইউজের সহসভাপতি নূরুল আমিন রোকন ও মোদাব্বের হোসেন, সিনিয়র সহকারী মহাসচিব আহমদ মতিউর রহমান, দিগন্ত টিভির উপনির্বাহী পরিচালক মুজিবুর রহমান মঞ্জু, ডিইউজের সহসভাপতি বাছির জামাল ও শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সরকার কে চালাচ্ছে এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসলে কী আওয়ামী লীগ সরকার চালাচ্ছে? না অন্য কেউ? আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এতই দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, রাজনৈতিক যে অভিজ্ঞতা সেটিকেও কাজে লাগাতে পারছেন না, পারবে না। জনগণের সাথে এতটাই তারা প্রতারণা করছে এবং আরো করবে। আমি সরকারকে বলব, এখনো সময় আছে কথা বলুন। সত্যিকার অর্থে একটি নিরপে সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে নিরপেভাবে কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একদলীয় বাকশাল থেকে বর্তমান অবস্থা আরো ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক রাষ্ট্রের আদালত হচ্ছে আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। অথচ এখন সেই আদালতে যেতেও আমাদের এখন ভয় হয়। কারণ আদালতকে ব্যবহার করেই দেশের জন্য ও গণতান্ত্রিক নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনিভাবে শুধু আদালতকে ব্যবহার করে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মানুষ শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত লড়াই করবে, রাস্তায় থাকবে। আমরা একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছবোই। কঠিন পথ, কুসুমাস্তীর্ণ পথ নয়। আমাদেরকে আদায় করে নিতে হবে। সেই আদায় করে নিতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে- এটির কোনো বিকল্প নেই।
মাহমুদুর রহমান বলেন, অনুগত সংবাদ মাধ্যমের লেখালেখির ব্যাপারে স্বাধীনতার অভাব আছে। এ রকম সংবাদমাধ্যম থাকলে সব থেকে বেশি তিগ্রস্ত হয় জনগণ। তারা প্রকৃত তথ্য জানাতে পারে না। তারা চতুর্থ স্টেটের দায়িত্ব পালন করতে পারে না।
শওকত মাহমুদ বলেন, আজকে সত্য বলার কারণে অনেকগুলো মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই সরকারের আমলে সাংবাদিক নির্যাতন বেড়েছে কয়েক গুণ। আজকে সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অথচ বিএনপি হচ্ছে সেই দল যারা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছে। খালেদা জিয়ার এ ব্যাপারে অনেক অবদান রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে এই দিবসটি সাংবাদিক সমাজ পালন করে আসছে। আমরা বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা প্রতিদিনই কালো দিবস পালন করছি। চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি বন্ধ করা হয়েছে, অসংখ্য প্রোগ্রাম, অসংখ্য পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে। সাগর-রুনিসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। একটিরও বিচার হয়নি। মিডিয়া কন্ট্রোল করা হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। আমাদের অবশ্যই মাঠে নামতে হবে, প্রতিবাদ জানাতে হবে, সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদারের ১২৮তম প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে ঝুলন্ত নারীর লাশ উদ্ধার মধুর প্রতিশোধে সিটিকে বিদায় করে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ রাজশাহীতে ভুয়া তিন সেনা সদস্য গ্রেফতার ডেঙ্গুতে আরো একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ, প্রতিদ্বন্দ্বী আ'লীগ নেতাকে ইসির শোকজ বেসিস নির্বাচনে ওয়ান টিমের প্যানেল ঘোষণা চরফ্যাশনে স্কুল শিক্ষিকাকে কোপানো মামলার আসামি গ্রেফতার ফরিদপুরে মাইক্রোবাস-মাহেন্দ্র মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ ভেটো ছাড়াই ফিলিস্তিনের জাতিসঙ্ঘ সদস্যপদ ঠেকানোর চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র

সকল