২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কারাগারে ঈদ খালেদা জিয়ার

সাক্ষাৎ চেয়ে বিএনপির আবেদন
-

চার মাসেরও বেশি সময় ধরে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত জীর্ণ কারাগারে বন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার মুক্তিপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে হতে চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের দিনগুলোও তার কাটবে স্যাঁতস্যাঁতে ওই কারাগারেই। কারাগারের একাকিত্ব তো আছেই, পাশাপাশি তার শারীরিক অসুস্থতার খবরে আরো বেশি মলিন বিএনপি। নেত্রীকে কারাগারে রেখে বাইরে ঈদের আমেজ তাদের অনেকটাই ফিকে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির অভিযোগে একটি মামলায় বেগম জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর আইনি নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১৬ মে আপিল বিভাগ তাকে জামিন দেন। তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অন্য বেশ কয়েকটি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় মুক্তি পাননি তিনি।
কারাগারে এটি অবশ্য খালেদা জিয়ার প্রথম ঈদ নয়। ওয়ান-ইলেভেনের পর গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ঈদ করতে হয়েছিল বিএনপি প্রধানকে। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এ সময়ের রোজা ও কোরবানির ঈদ কারাগারেই করতে হয়েছে তাকে।
৭৩ বছর বয়সেও কারাগারে ঈদ করবেন বেগম জিয়াÑ বিষয়টি দলের নেতাকর্মীদের কাছে খুবই বেদনাদায়ক। এর ওপর বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতার খবরেও নেতাকর্মীদের ঈদের আনন্দের মধ্যে গভীর দুঃসংবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বেগম জিয়া মাইন্ড স্ট্রোক করেছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন। এ জন্য তাকে চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে দলটি।
খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় এবার বিএনপি নেতাদের ঈদ কাটবে ভিন্নভাবে। প্রিয় নেত্রীকে কারাগারে শুভেচ্ছা জানাতে ঈদের দিন সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিব এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একথা জানান।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এবার থাকছে না বিএনপির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়। নেতাকর্মীরা জেল গেটে যাবেন। এ বিষয়ে রিজভী বলেন, আমরা প্রত্যেকে বেদনার্ত, আমাদের মনের মধ্যে কষ্ট। যাকে কেন্দ্র করে ঈদে সর্বস্তরের মানুষের সাথে বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হতো, এবার সেটি হবে না।
তিনি বলেন, ঈদ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খুশির উৎসব। আমাদের মধ্যে ঈদের সেই আনন্দ নেই, খুশি নেই। ঈদের দিন সকালে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ নেতাকর্মীরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে তারা জেলগেটে যাবেন। আমাদের নেতাকর্মীরা অনেকেই বলেছেন, নেত্রীর প্রতি মনের টানে তারা জেল গেটে যাবেন।
প্রতি বছরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদের দিন কূটনীতিক, গণমান্য ব্যক্তি এবং সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। বিএনপি নেতারা এবার কারাগারে তাদের প্রিয় নেত্রীর সাক্ষাৎ পাবেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ঈদের দিন খালেদা জিয়ার আত্মীয়স্বজনরা কারাবিধি অনুযায়ী সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। তারা সকালেই কারাগারে যাবেন বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement