২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দুই মামলায় খালেদা জিয়ার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার

ঢাকার দুই মামলায় জামিন শুনানি ২১ জুন
-

কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির করার জন্য জারি করা প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার পৃথক দু’জন বিশেষ জজ আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরোয়ানা প্রত্যাহারের এ আদেশ দেন।
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক কে এস এম শাহ ইমরান প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের আবেদন করে শুনানি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানা উল্লাহ মিয়া ও আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ওই আবেদনের বিরোধিতা করেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো: গোলাম শাহরিয়ার বাদি হয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ১৩ মে চারদলীয় জোট সরকারের ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো: জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো ইন্তেকাল করেছেন। মামলাটিতে বর্তমান আসামির সংখ্যা ২০ জন।
ঢাকার দুই মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি ২১ জুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননা ও ভুল তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে মামলায় জামিন শুনানির জন্য আগামী ২১ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল পতাকা অবমাননা মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব জামিন শুনানির পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এ ছাড়া জন্মদিন পালনের অপর মামলায়ও জামিন শুনানির জন্য আগামী ২১ জুন দিন ধার্য করেন ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তিনি বলেন, আদালতে জামিন আবেদন দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করে বলেছিÑ হাইকোর্ট এই দুই মামলা দ্রুত শুনানি করে জামিন আবেদন অনিষ্পত্তি করতে বলেছেন। এই দুই মামলা জামিনযোগ্য ধারায়। দ্রুত শুনানি করে জামিন দিন। আদালত উভয় মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি ২১ জুন ধার্য করেন।

গত ৬ জুন প্রকাশিত হাইকোর্টের এক আদেশে বলা হয়, জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টে ভুল তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর ও জামিন নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন। একই সঙ্গে এ সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে খালেদা জিয়ার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের এক লিখিত আদেশে এ মন্তব্য করা হয়। গত ৩১ মে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন আদালত।
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বলেছেন, আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরসহ জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন। খালেদা জিয়া ইতোমধ্যেই অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন। ফলে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের জন্য আর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এরপরেও গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করে জামিন আবেদন নথিভুক্ত করে আদেশ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর প্রতিবেদন গ্রহণের নামে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রয়োজনীয়ভাবে তার জামিন আবেদন নিষ্পত্তিতে বিলম্ব করেছেন। যেটা আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের শামিল।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরপরই বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে গ্রেফতার করে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement