২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

নারীর রাকবচ লাঠি

-

ওরোমো জাতিগোষ্ঠীর নারীরা নিজের রাকবচ হিসেবে লাঠি ব্যবহার করেন। ওরোমো নারীদের যখন বিয়ে হয় তখন তারা এ কাঠের লাঠি পেয়ে থাকেন বাবা-মায়ের কাছ থেকে। সিনকিউ নামে এ লাঠিকে ওই নারী ও তার পরিবারের রার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ সারা ডুবে বলেন, এখানকার ঐতিহ্যবাহী যে আইন আছে, তাতে বলা হয়েছেÑ একজন বিবাহিত নারীকে অপমান বা কোনো নির্যাতন করা যাবে না। এটা একটা অপরাধ।
বিষয়টা আসলে কেমন হয় তা বোঝাতে পূর্বপরিকল্পিত একটা পরিস্থিতির অবতারণা করা হয়। এখানে দেখানো হয় একজন পুরুষ লাঠি হাতে একটি ঘরে ঢুকছে, উদ্দেশ্য স্ত্রীকে মারবে। ঠিক সে সময় ওই নারী তার শিশুকে কোলে নিয়ে হাতে সেই সিনকিউ নিয়ে বের হয়ে আসছেন। মুখে উচ্চারণ করছেন একটি শব্দ। শব্দ করার উদ্দেশ্য যাতে করে আশপাশের অন্য নারীরাও জানতে পারেন, তার ওপর নির্যাতন হয়েছে। সাথে সাথে পাড়া-প্রতিবেশী যারা নারী আছেন তারা তাদের সিনকিউ নিয়ে দৌড়ে চলে আসেন। ওই নারী মাঝখানে বসে পড়েন। তাকে ঘিরে এসব নারী ঘুরতে থাকেনÑ যেন তাকে রা করা হচ্ছে সব বিপদ থেকে।
মেয়েদের হাতে দেয়া হয় সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে লড়াই করতে পারে। ইথিওপিয়ার ওরোমো নারীদের প্রাচীন যে গাডাব্যবস্থা আছে তার একটি অংশ এ সিনকিউ।
ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ সারা ডুবে বলেন, যখন এ গাডাব্যবস্থা চালু হয় তখন পুরুষদের বিভিন্ন অস্ত্র দেয়া হতো; যাতে করে তারা পশু শিকার করতে পারেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে পারেন। তিনি আরো বলেন, ‘মেয়েদের হাতে দেয়া হয় সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে লড়াই করতে পারেন।
এ দিকে নারীদের শব্দ শুনে গ্রামের মুরব্বিরা চলে আসেন বিচার বসাতে। চলতে থাকে শুনানি। নারীরা বলেন ‘তাকে মারা মোটেই উচিত হয়নি। স্বামীর বিচার না করা পর্যন্ত আমরা শান্ত হব না;।
শুনানির পর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা তাদের রায় শোনান। রায় অনুযায়ী স্বামী সবার সামনে স্ত্রীর কাছে মাফ চান। একই সাথে সবার সামনে প্রতিজ্ঞা করেন আর কখনো স্ত্রীকে মারবেন না। রায়ে আরো বলা হলো, যদি সে এর ব্যতিক্রম করে ভবিষ্যতে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা এ সিনকিউ তৈরি করেন। মা তা মেয়ের হাতে তুলে দেন। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন, নারীরা কখনো এসব েেত্র মিথ্যা বলেন না। বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement