২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাড়ির টানে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ

সদরঘাটে নাড়ির টানে ঘরফেরা মানুষের ভিড় : নয়া দিগন্ত -

নাড়ির টানে যাত্রা শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২০ রমজান থেকে যাত্রা শুরু করলেও গতকাল থেকে ছিল ঘরমুখো মানুষের ভিড়। রাজধানীর বৃহত্তর বাস টার্মিনাল গাবতলী থেকে দেশের প্রায় ২৫ রুটের বিভিন্ন পরিবহনের বাস ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এ দিকে রাস্তায় যানজটসহ নানা ভোগান্তির বিষয় চিন্তা করে হতাশ হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। তবে উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাস চালকেরা আশা প্রকাশ করছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর যানজটের মাত্রা কিছুটা কম হবে। তাদের মতে, যানজটপ্রবণ বেশ কিছু রাস্তা ওয়ানওয়ে ¡ করে দেয়ায় এ বছর যানজট কম হচ্ছে। মঙ্গলবার গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির বাস চালক, কর্মকর্তা ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
গতকাল সকালে গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়। পুরো টার্মিনালে ছিল যাত্রীদের হৈ-হুল্লোড়। বাসশ্রমিকদের হাঁক-ডাক। এ বছরও টার্মিনালের সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি ও র্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে টার্মিনালে। খোলা হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র।
গাবতলী বালুর মাঠে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে কথা হয় ঠাকুরগাঁওগামী যাত্রী জাহাঙ্গীরের সাথে। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে ঈদের অগ্রিম টিকিট কিনতে পেরেছিলেন। এবার বাড়ি যাবার পালা। তার মতে, টাঙ্গাইল পার হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু (যমুনা সেতু) পার হলে আর কোনো চিন্তা থাকবে না। কিন্তু গত বছর টাঙ্গাইল পার হতে সময় লেগেছে প্রায় ৭ ঘণ্টা। এ বছর কী হবে তা ভাবার বিষয়। এ্যালিনা জানান, তিনি যাবেন কুড়িগ্রামে। স্বামীর ছুটি না হওয়ায় তিনি যাবেন ১৩ তারিখ রাতে। তাই দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে তিনি একাই যাত্রা শুরু করেছেন। এ্যালিনা বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে রাস্তায় যানজটে পড়লে বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে পড়ে যাবো। কারণ গত বছর তীব্র যানজট ও ভ্যাপসা গরমে বাচ্চারা বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। শুধু তার শিশু-সন্তানেরাই নয়, বাসে থাকা অনেক বয়স্ক নারী ও পুরুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তবে যানজট কম হওয়ার ব্যাপারে এ বছর অনেকটাই আশাবাদী বাসের চালকেরা। হানিফ পরিবহনের উত্তরবঙ্গগামী বাসের চালক মো: আলী হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, আশা করা হচ্ছে এ বছর যানজট গত বছরের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে না। গত বছরের যানজটের কথা মনে উঠলে এখনো গা শিউরে ওঠে। তিনি বলেন, এ বছর যানজটপ্রবণ বেশ কিছু রাস্তায় ওয়ানওয়ে সিস্টেম করে দিয়েছে। এতে করে এক লেনের গাড়ি অন্য লেনে গিয়ে যানজট সৃষ্টি করতে পারবে না। আবার গত বছর অনেক রাস্তায় সংস্কার কাজ চলমান থাকায় সেখানে গাড়ি চালাতে হয়েছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। আবার কোনো কোনো গাড়ির চাকা দেবে গিয়ে বিকল হয়েও যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ বছর ওই সব রাস্তার কাজ শেষ না হলেও চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। যার কারণে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের যানজটের মধ্যে পড়তে হয়নি তাকে।
অন্য বাস চালক আবদুল আজিজ বলেন, রাস্তা খারাপের পাশাপাশি যানজটের অন্য একটি কারণ হলো ফিটনেসবিহীন গাড়ি। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে সিটিতে চলাচলরত মিনিবাস ভাড়া করে অনেকে গ্রামের বাড়ি যান। যার বেশির ভাগ গাড়িই ফিটনেসবিহীন। ওই গাড়িগুলো হাইওয়েতে চলাচলের উপযোগী নয়। তারপরও জোর করে চালানো হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement