২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেশবপুরে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে

কেশবপুর
কেশবপুরে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার লাশের উদ্ধার লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে - প্রতিকী ছবি

যশোরের কেশবপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের আবুল বাশারের বোরো ধানক্ষেত থেকে ১০ মার্চ দুপুরে উদ্ধারকৃত ব্যক্তির হত্যারহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম কবির হোসেন (২৬)। তিনি তালা থানার শার্শা গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।

জানা গেছে, এ হত্যাকা-ের ঘটনার মূলে এক নারী। জেসমিন নাহার মুক্তা নামে ওই নারীর সাথে দুই যুবকের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এদের একজন উপজেলার শিকারপুর গ্রামের মেহেদী হাসান মন্টু এবং অপরজন ওই নারীর বাবার বাড়ি এলাকার কবির হোসেন। ওই নারীর স্বামী ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সেই সুযোগে ওই নারী উল্লেখিত যুবকদের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন, যা গ্রামের অনেকেই জানতেন।

ঘটনার দিন ৯ মার্চ রাতে দুই সন্তানের জনক নিহত কবির শিকারপুর গ্রামে এসে ওই মহিলার স্বামীর বাড়িতে যান। এমনকি অন্তসত্ত্বা ওই নারীর সাথে দৈহিক মেলামেশা করেন।

যশোর আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৭ মার্চ দেয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ওই নারী জানান, কবির তার ঘরে থাকা অবস্থায় রাতে সেখানে যায় মেহেদি হাসান মন্টু। মন্টু তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে কবিরকে মারপিট করতে করতে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। এরপর রাতেই ঘাতক মন্টু মোবাইলে মুক্তাকে জানায় কবিরকে মারপিট করে ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু পরদিন ১০ মার্চ সকালে বাড়ির পাশে বাশারের ধানক্ষেতে পাওয়া যায় কবিরের লাশ।

কবিরের ঘাতক মন্টু- এটা ওই নারীর জবানবন্দিতে উঠে আসে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাব্বি জানান। হত্যার ছয়দিন পর ১৫ মার্চ রাতে হত্যা রহস্যের মূল ব্যক্তি গৃহবধূ মুক্তাকে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলা থেকে আটক করে কেশবপুর থানা পুলিশ নিয়ে আসে। 

এদিকে নিহত কবিরের বাবা আব্দুল করিম জানান, ৯ মার্চ বিকেলে বাবা-ছেলে মিলে দুজন তাদের গ্রামের পার্শেই কেশবপুর উপজেলার চিংড়া বাজারে যান। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে মাগরিবের নামাযের পর ছেলে কবির তার বাবাকে বলে, ‘আব্বা তুমি বাড়িতে চলে যাও। আমি পাশের ঝিকরা গ্রামে ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে, সেখানে ওয়াজ শুনে বাড়ি যেতে রাত হবে।’ বাবা ছেলের কথামতো বাড়িতে চলে যান। রাত ১২টায়ও বাড়িতে না ফেরার কারণে বার-বার ছেলের মোবাইলে ফোন দিলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ১০ মার্চ পাওয়া যায় তার লাশ।

আরো পড়ুন :
পরকীয়া দেখে ফেলায় শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা করা হয়
এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রবাসীর স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয় যুবকের সাথে অবৈধ সম্পর্ক। আর তা দেখে ফেলায় শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা। এরপর আইনের চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য নিজের শরীরে ধারালো ছোরার আঘাত।

গত ১৬ আগস্ট এমন ঘটনা ঘটেছিল রাজবাড়ী জেলা সদরের বারবাকপুর গ্রামে। পুত্রবধূ স্বপ্না বেগম (২৫) ও পরকীয়া প্রেমিক সোহেল মিয়ার (৩৩) নৃশংসতার শিকার হতে হয় শাশুড়ি হাজেরা বেগমকে (৪৮)। এতদিনে জানা গেল হত্যাকান্ডের আসল রহস্য।

একের পর এক মিথ্যে বলে পুলিশের নজর এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলো স্বপ্না বেগম। কিন্তু ডিবি পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি আর অভিযানে আটক হয় ঘটনার প্রধান আসামি জেলা সদরের কোমড়পাড়া গ্রামের হোসেন মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (৩৩)। এরপর ধরা পড়ে সোহেলের সহযোগী আহলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (৩২)। তাদের দেয়া তথ্য মতে গৃহবধূ স্বপ্নাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৬ তারিখে জেলা সদরের বারবাকপুর গ্রামের আলোচিত হাজেরা বেগম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেন পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি।

এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, আটক স্বপ্নার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী অনুসারে ঘটনার দিন (গত ১৬ আগস্ট) রাতে ছেলের বৌ স্বপ্নাকে নিয়ে একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন হাজেরা বেগম। সেদিন রাতে স্বপ্নার পরকীয়া প্রেমিক সোহেল স্বপ্নার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় হাজেরা বেগম টর্চ লাইট দিয়ে সোহেলকে দেখে চিনে ফেলে। পরে সোহেল বাইরে পাহারায় দাঁড়িয়ে থাকা কবিরকে ডেকে নেয় ঘরের ভিতর।

কবির হাজেরা বেগমের হাতে জখম করে। পরে কবির হাজেরা বেগমের দুই পা ও স্বপ্না দুই হাত চেপে ধরলে সোহেল হাজেরার বুকের উপরে বসে গলা কেটে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় যেন স্বপ্নাকে কেউ সন্দেহ না করে তাই সোহেল স্বপ্নার দুই হাতে জখমের চিহ্ন একে দেয়। পরে সোহেল ও কবির পালিয়ে গেলে স্বপ্নার অভিনীত চিৎকারে ছুটে আসে এলাকাবাসী।

ঘটনার পর ডিবি পুলিশ সোহেলকে শনাক্ত করে খুঁজতে থাকে। প্রায় মাস খানেক পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদারীপুর জেলা থেকে সোহেলকে আটক করা হয়। পরে জেলা সদরের আহলাদীপুর এলাকা থেকে সোহেলের সহযোগী কবিরকে আটক করা হয়। এই দু’জনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গতকাল রোববার স্বপ্নাকে গ্রেফতার করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement