২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চৌগাছার জামায়াতের ২৪ নেতাকর্মী কারাগারে

- সংগৃহীত

কথিত নাশকতা প্রচেষ্টার একটি মামলায় যশোরের চৌগাছা উপজেলা জামায়াতের ২৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলার হাকিমপুর দাখিল মাদরাসা মাঠে বসে নাশকতা পরিকল্পনা করার অভিযোগে উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় একটি মামলা হয়। এই মামলায় জামিন নিতে আসামিরা সোমবার যশোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বুলবুল আহমেদের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আত্মসমর্পনকারী নেতাকর্মীরা হলেন চৌগাছা পৌর শহরের পুস্তক ব্যবসায়ী আম্রকাননপাড়ার দেওয়ান সাইফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সরোয়ার হুসাইন মনি, জিসিবি আদর্শ কলেজের অফিস সহকারী ও বাদেখানপুর গ্রামের কাজী নূরুজ্জামান, শহরের কাসারি ব্যবসায়ী কুঠিপাড়া গ্রামের আবুল খায়ের ও তার ছেলে বেকারি ব্যবসায়ী আবুল কালাম, হাকিমপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও ইমদাদুল হক, হাজীপুর গ্রামের রজব আলী, মাঠচাকলা গ্রামের কুতুব উদ্দিন ও শাহাবুদ্দিন, কোমরপুর গ্রামের হাবিল উদ্দিন, হাকিমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আব্দুস সবুর খান, ধুলিয়ানি ইউনিয়ন সভাপতি রোকনুজ্জামান, জগদীশপুর ইউনিয়ন সেক্রেটারি ও স্বর্পরাজপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার মাওলানা রওশন জামিল, চৌগাছা পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক দুইবারের কাউন্সিলর ও খড়িঞ্চা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মহিউদ্দিন, পাশাপোল ইউনিয়নের পলুয়া ওয়ার্ডের সাবেক কয়েকবারের মেম্বার আব্দুল জলিল, মাকাপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভি খড়িঞ্চা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, নারায়ণপুর গ্রামের ওহিদুল ইসলাম ও রূপচাঁদ আলী, শহরের আদর্শ নার্সারি ব্যবসায়ী বাকপাড়ার হাবিবুর রহমান, পাঁচনমনা গ্রামের শাহিনুর রহমান, পাশাপোল গ্রামের হায়দার আলী, পলুয়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন ও স্বরুপপুর গ্রামের মীর নূরুল হোসেন।

কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীদের স্বজনরা দাবি করছেন, হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশ তাদের নামে এই মামলা দায়ের করেছে। চৌগাছা বাজারের বিশিষ্ট কাসারি ব্যবসায়ি আবুল খায়েরের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমার বাবা চৌগাছা বাজারে প্রায় ৩৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি একাধিকবার চৌগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বয়োবৃদ্ধ মানুষ। আমার ছোট ভাই বাজারের বেকারি ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কারণেই তারা দোকান আর বাড়ি ছাড়া অত্মীয় স্বজনের বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারেন না। অথচ পুলিশ তাদের নামে বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের একটি স্থানে কথিত নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে সাজানো মামলা করেছেন।

একই অভিযোগ করেছেন নার্সারি ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের মা রওশনারা বেগম। তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে বাজারের প্রতিষ্ঠিত নার্সারি ব্যবসায়ী। বাজারের সবাই তাকে চেনে। সে কোনো নাশকতার সাথে জড়িত থাকতে পারে না। শুধুমাত্র জামায়াত সমর্থক হওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে সাজানো নাশকতার মামলায় জড়ানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমার একমাত্র ছেলের তিনটি ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তার ছোট মেয়ের বয়স মাত্র ছয়মাস। ছেলের বয়স দেড় বছর। আরেক মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমার একটি হাত ভাঙা। চোখেও অপারেশন হয়েছে। বুড়ো মানুষ ঠিকমতো চলতে-ফিরতে পারি না। পারিবারিক অবস্থা নাজেহাল। রাজনীতি করার সময় কোথায় ? অথচ পুলিশ ছেলেকে নাশকতার সাজানো মামলায় আসামি করেছে। আমার পরিবারের ভোগান্তির কথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একবারো চিন্তা করলো না।


আরো সংবাদ



premium cement