বোনকে স্বামীর বাড়ি পৌঁছাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিখোঁজ
- মহেশপুর(ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা
- ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:২৯
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া সদ্য ভর্তিকৃত ছাত্র আবুজার হোসাইন তার বোনকে কুমিল্লায় দিয়ে ফেরার পথে ১২ দিন যাবত নিখোঁজ রয়েছে বলে তার পিতা জানান। তিনি তার ছোট সন্তানকে ফেরত পেতে আকুল আবেদন করছেন।
এলাকাবাসী জানান, মদনপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইমদাদুল হক ৮ সন্তানের পিতা তিনি সব সন্তানকে শিক্ষিত করে তুলছেন। বর্তমানে তার ৩ ছেলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তার ছোট ছেলে আবুজার হোসাইন ৫ জানুয়ারী তার বোন মাসুমাকে রাখতে কুমিল্লায় দুলাভাইয়ের কর্মস্থলে যায়। পরে ৯ তারিখ আবুজার ঢাকায় এসে নিখোঁজ হয়। এখনও পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গ্রামবাসী সুইটি বেগম জানান, আবুজারের পিতা ইমদাদুল হক মদনপুর গ্রামের মসজিদের ক্যাশিয়ার হিসাবে কর্মরত আছেন। ইতোমধ্যে আমরা গ্রামবাসী একটি সংবাদ পেয়েছি যে আবুজারের বড় ভাই আসাদুল্লাহকে জঙ্গি হিসাবে ঢাকায় আটক করা হয়েছে। তার সাথে নাকি আবুজারকেও আটক করা হয়েছে। তবে আবুজারের বিষয়ে পত্রিকা ও টিভিতে কোন সংবাদ দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামের শত শত নারী পুরুষ বলেন, তারা সবাই খুব ভাল ছেলে। আসাদুল্লাহ জঙ্গি হবে আমাদের ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
নিখোঁজ আবুজারের পিতা ইমদাদুল হক জানান, ২০১৪ সালের মে মাসে আমি চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করি। আমার গ্রামের মাদ্রাসা থাকেই সব সন্তানকে দাখিল পাশ করাই। ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া শেষ করে কেউ কেউ চাকুরী করছেন। এখনও ৩ ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। আমি সাংবাদিক ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারছি আমার ছেলে আসাদুল্লাহ জঙ্গি হিসাবে ঢাকায় ধরা হয়েছে।
কিন্তু এই আসাদুল্লাহ ৪ বছর যাবৎ নিখোঁজ। ২০১৩ সালের শেষের দিকে আসাদুল্লাহ যশোর পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা করে বাড়ী আসে। তখন তাকে আমি বলি তোমাকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। সে আর পড়বে না বলে জানায় তখন বাপ বেটার মধ্যে ঝগড়া হয়। সে কিছু না বলে বাড়ী থেকে যশোর চলে যায়। কয়েকদিন পর বাড়ীতে ফোন করে যে, আমার সাইকেলটি অমোক জায়গায় আছে, তোমরা নিয়ে যাও। আমি আর বাড়ী ফিরবো না। সেই থেকে সে নিখোঁজ।
তিনি আরো জানান, আমার ছোট ছেলে কুষ্টিয়া ইউনিভার্সিটিতে সদ্য ভর্তি হয়েছে। ৫ জানুয়ারী আমার ছোট মেয়েকে কুমিল্লায় তার স্বামীর কাছে রেখে ৯ তারিখ বাড়ী আসার সময় বিমানবন্দর এলাকায় আমার নিখোঁজ ছেলের সাথে তার ছোট ভাই আবু জারের দেখা হয়। আবুজারকে পেয়ে আসাদুল্লাহ জড়িয়ে ধরে এবং তার বাড়ীতে নিয়ে যায়।
পরে, আবুজারের মোবাইল ফোন দিয়ে আমার স্ত্রীর সাথে আসাদুল্লাহ কথা বলার সময় পুলিশ এসে তাদের দুইভাইকে তুলে নিয়ে গেছে বলে আসাদুল্লাহর স্ত্রী আমাদের ফোনে জানায়। কিন্তু আসাদকে আটক দেখানো হলেও আমার ছোট ছেলের কোন খোঁজ বলা হচ্ছে না।
আমি আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই আসাদুল্লাহ দোষী হলে তার প্রচলিত আইনে শাস্তি হোক। তবুও আমার নির্দোষ ছোট ছেলে আবুজার হোসাইনকে আমার কাছে ফেরত দেওয়া হোক। কারণ তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা