১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যবিপ্রবি ভিসির বিরুদ্ধে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মামলা

-

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। সোমবার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মানহানির দুটি মামলায় যথাক্রমে ৫০০ কোটি ও দশ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।

মামলা দুটির আইনজীবী শাহিনুর রহমান জানান, অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুপুর ১২টায় এ মামলা দায়ের করা হয়। একটি মামলায় বিবাদী করা হয়েছে উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদকে। অপর মামলায় বিবাদী করা হয়েছে ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নাজমুল হাসানকে।

প্রথম মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ক্যালেন্ডার মুদ্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। বিলি করা ওই ক্যালেন্ডারে ইচ্ছাকৃতভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি জলছাপ দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে। এছাড়াও ২০১৯ সালের ক্যালেন্ডারে জাতির জনকের শাহাদত বার্ষিকীর তারিখ দিয়ে ৩শ’তম বার্ষিকী ছাপা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী মনে করছেন এ ঘটনায় জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে ৫০০ কোটি টাকার মানহানি করা হয়েছে।

অপর মামলায় আনোয়ার হোসেন বিপুল অভিযোগ করেছেন, গত ৮ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার একটি প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলেন। এ বিষয়ে তিনি (বিপুল) মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তিমূলক কথা বলেন এবং তার নামে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগের জিডি করেন। এছাড়া পত্র-পত্রিকায় আপত্তিকর বক্তব্য দেন। বিপুল বলেন, ড. ইকবাল কবির জাহিদ আমার নামে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে সংবাদিকদের কাছে। তিনি বলেন, ঐ শিক্ষকের সাথে আমার মোবাইলে কথা হয়েছে। কিন্তু আমি তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে যে অভিযোগ করেছে তা ভিত্তিহীন। আর শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের আসবাবপত্র সরবরাহ করা নিয়ে যে কথা বলা হয়েছে তা কিভাবে সম্ভব? তিনি বলেন, আমি কোন ঠিকাদারের কাজ করি না। কিন্তু ড.জাহিদ স্যার আমার বিরুদ্ধে নিম্নমানের আসবাবপত্র সরবরাহসহ নানা অভিযোগ দিয়েছে। এতে সমাজে আমার সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে।

মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন বিপুল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ধারাবাহিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননা করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একজন মানুষ হিসেবে এজন্য আমি একটি মামলা করেছি। এছাড়া মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য আমি আরো একটি মামলা করেছি।

মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। ছাত্রলীগ সম্পর্কে আপত্তিকর কোনো কথা বলার প্রশ্নই আসে না। আর নৌকা প্রতীক সরিয়ে ফেলা কোনো প্রশ্নই আসে না।’ তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যালেন্ডার বিতরণ করা শুরু হয়েছে। বিতরণ করা এ ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননা করা হয়েছে এমন কোন দৃশ্য নেই। ফলে এ বিষয় কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, ১৪ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডর বিতরণ করা হচ্ছে। এর আগে এ বছরের কোনো ক্যালেন্ডার বিতরণ করা হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement